Advertisement
E-Paper

এ বারেও প্রথম হবে কি জেলা?

গত বার কেন্দ্রীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় মনোনীত হওয়া রাজ্যের ছ’টি জেলার মধ্যে ছিল পশ্চিম বর্ধমান। দেশের ১৮টি জেলা পুরস্কৃত হয়। সেখানে ঠাঁই না পেলেও প্রকল্পের সার্বিক ফলাফলে রাজ্যে প্রথম স্থানেই ছিল এই জেলা।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৪

গত আর্থিক বর্ষে একশো দিনের প্রকল্পে বিশেষ সাফল্য পেয়েছিল নবগঠিত এই জেলা। কিন্তু চলতি আর্থিক বর্ষে এই সময়ের নিরিখে গত বছরের তুলনায় কর্মদিবস তৈরিতে এগিয়ে থাকলেও এ বার প্রকল্পের সার্বিক ফলে পশ্চিম বর্ধমানের স্থান রাজ্যে তৃতীয়। গত বার এই সময়ে সেখানেও প্রথম স্থানে ছিল জেলা। পাশাপাশি জেলার নানা জায়গা থেকে মাঝেসাঝে প্রকল্পের কাজ না পাওয়ার অভিযোগও উঠছে।

গত বার কেন্দ্রীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় মনোনীত হওয়া রাজ্যের ছ’টি জেলার মধ্যে ছিল পশ্চিম বর্ধমান। দেশের ১৮টি জেলা পুরস্কৃত হয়। সেখানে ঠাঁই না পেলেও প্রকল্পের সার্বিক ফলাফলে রাজ্যে প্রথম স্থানেই ছিল এই জেলা। কিন্তু এ বার সেই প্রথম স্থান ধরে রাখা সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম বর্ধমানের আটটি ব্লকের ৮৩৩টি গ্রাম সংসদে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পে জেলায় পুকুর খনন করে মাছ চাষ, পুকুর পাড়ে ফলের বাগান গড়া, নদী সংস্কার করে চেক ড্যাম তৈরি করে সেচের ব্যবস্থা, অর্জুন গাছের বাগান বানিয়ে তসর চাষ, পোল্ট্রি তৈরি, খাদানের জলে মাছ চাষ-সহ নানা পদক্ষেপ করা হয়। আবার রাস্তা তৈরি, শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের বাড়ি নির্মাণ, শ্মশানঘাটের সংস্কার, ইকো পার্ক গড়া, খেলার মাঠের সংস্কার, পাকা হাট তৈরির মতো কাজও হয়েছে। গত বছর ভিন্-রাজ্যের প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে সেই সব কাজের প্রশংসাও করেছিল।

প্রকল্প সূত্রে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত আর্থিক বছরে জেলায় ৩৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৪২ কর্মদিবস তৈরি হয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা মোটে ২৭ লক্ষ ১৭ হাজার ১২০টি। অর্থাৎ আগামী সাড়ে তিন মাসে প্রায় সাত লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করতে পারলে তবে গত বছরকে ছোঁয়া সম্ভব। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, গত বছর এই সময় পর্যন্ত ২২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭০০ কর্মদিবস তৈরি হয়েছিল। এ বার তার থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ কর্মদিবস বেশি তৈরি হয়েছে।

গত বার সবথেকে বেশি মোট ১১ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৯৯টি কর্মদিবস তৈরি করেছিল কাঁকসা ব্লক। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে কর্মদিবসের সংখ্যা ছিল, ৭ লক্ষ ৩০ হাজার ২৫০টি। এ বারেও সেই ধারা বজায় রেখেছে ব্লক দু’টি। কাঁকসা ও দুর্গাপুর-ফরিদপুরে কর্মদিবসের সংখ্যা এ পর্যন্ত যথাক্রমে ১০ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪৮৯টি এবং ৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ৬৭৮টি। গত বছরে জেলায় মোট ৫৭ হাজার ৭৩টি পরিবার কাজ পেয়েছিল। একশো বা তার বেশি দিন কাজ পেয়েছিল ৫৯৯২টি পরিবার। এর মধ্যে দুর্গাপুর-ফরিদপুরে ছিল সবথেকে বেশি ১৫০৭টি পরিবার। এ বার এখনও পর্যন্ত জেলায় ৫১ হাজার ১০৭টি পরিবার কাজ পেয়েছে। একশো বা বেশি দিন কাজ পেয়েছে ৩৯৭৪টি পরিবার। তার মধ্যে সবথেকে বেশি ৯৭৫টি পরিবার কাঁকসা ব্লকের।

কিন্তু যে কাঁকসা ব্লক এই প্রকল্পে বিশেষ স্থান নিচ্ছে, সেই ব্লকেরই ধোবারু, প্রয়াগপুরের মতো কিছু এলাকা থেকেই প্রকল্পে কাজ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কাজ চেয়েও না মেলার অভিযোগ করেছেন ধোবারুর বাসিন্দারা। প্রয়াগপুরে কংক্রিটের রাস্তা তৈরির টেন্ডার হয়ে গেলেও কাজ শুরু হচ্ছে না বলে অভিযোগ। জেলার অন্যত্রও এমন অভিযোগ রয়েছে।
যদিও প্রকল্পের জেলা নোডাল আধিকারিক মানস পান্ডা বলেন, ‘‘প্রকল্পের নিয়ম মেনে প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ দেওয়া হয় বাসিন্দাদের। কাজ না পাওয়ার অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। গত বারের চেয়ে অনেক বেশি কর্মদিবস তৈরি করা সম্ভব হবে। সে ভাবেই এগোনো হচ্ছে।’’ কিন্তু কী ভাবে গত বারকে ছাপিয়ে যাওয়া বা প্রথম স্থান ধরে রাখা সম্ভব হবে কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।

Burdwan 100 days Work
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy