অভিযুক্ত মমিনা বিবি ও আতর আলি শেখ। নিজস্ব চিত্র
স্বামী ভালবাসতেন রসগোল্লা খেতে। তাই পরিকল্পনা করে রসগোল্লায় প্রথমে চারটি, পরে পাঁচটি ঘুমের বড়ি মিশিয়ে স্বামীকে খাওয়ান স্ত্রী। স্বামী মানু শেখ (৩০) পুরোপুরি অচেতন হলে তাঁকে ‘প্রেমিকের’ সাহায্যে শ্বাসরোধ করে খুন করেন স্ত্রী মমিনা বিবি। মন্তেশ্বরের ধেনুয়ার ওই ঘটনার তদন্তে নেমে নিহতের স্ত্রী মমিনাকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে বলে দাবি করল পুলিশ।
খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই মমিনা ও তাঁর ‘প্রেমিক’ আতর আলি শেখকে গ্রেফতার করেছে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। ধৃতদের সোমবার কালনা আদালতে তোলা হলে তাঁদের ১০ দিন জেল-হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের জেরা করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে। বছর আটেক আগে নাদনঘাটের কুণ্ডুপাড়ার মমিনার সঙ্গে বিয়ে হয় বেঙ্গালুরুতে নির্মাণ-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুর। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন তিনি। নিহতের দাদা নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, মমিনা-আতরের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমানও তেমনই। এর সূত্রেই মমিনা ও আতর খুনের পরিকল্পনা সারে বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশের দাবি, ধৃত মমিনা জেরায় তাদের কাছে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি একটি প্লেটে দু’টি রসগোল্লা সাজিয়ে মানুকে দেন। ওই রসগোল্লায় চারটি ঘুমের বড়ি শিল-নোড়ায় গুঁড়ো করে মেশানো হয়েছিল। কিন্তু দু’টি রসগোল্লা খেলেও মানু পুরোপুরি অচেতন হননি ওই দিন। শেষমেশ শনিবার রাতে ফের ওই সময়েই দু’টি রসগোল্লায় পাঁচটি ঘুমের বড়ি মিশিয়ে মানুকে দেওয়া হয়। এর পরেই পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়েন মানু। পুলিশের দাবি, মমিনা এর পরে ফোন করে ডেকে নেন আতরকে। দু’জনে মিলে শ্বাসরোধ করে মানুকে খুন করেন, দাবি পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনাটি যাতে ‘আত্মহত্যা’ বলে মনে হয়, সে জন্য নিহত মানুর গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন, রসগোল্লা মানুর পছন্দের মিষ্টি ছিল বলেই কি তা বেছে নেওয়া হয়? তদন্তকারীদের ব্যাখ্যা, ঘুমের ওষুধ স্বাদে তেতো। তাই বেছে নেওয়া হয় রসগোল্লাকেই। পুলিশ জানায়, আতর এলাকারই একটি দোকান থেকে ন’টি ঘুমের ওষুধ কিনে এনে দেয়।
তবে এ ক্ষেত্রে ঘুমের ওষুধ কী ভাবে কেনা হয়েছিল, সেই প্রশ্নও তদন্তের স্বার্থে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy