Advertisement
E-Paper

পাঁচ মাসে সাত মহিলা আক্রান্ত

পাঁচ বছর ‘চুপ’ থাকার পরে এ বছর ফের একই কায়দায় খুনের অভিযোগ উঠছে শুরু করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ১৩:১৮
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সময় দুপুর থেকে বিকেল। টার্গেট, বাড়িতে একলা মহিলাকে খুন করে গা ঢাকা দেওয়া। কালনা, মেমারি এলাকায় মাস পাঁচেকের মধ্যে এ ভাবে চার জন মহিলা ‘খুন’ হলেও কী কারণে এই ঘটনা, কারা জড়িত, উদ্দেশ্যই বা কি, এখনও তার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তার মধ্যে মন্তেশ্বরেও এমন ঘটনা হওয়ায় চাপ বেড়েছে পুলিশ মহলেও।

২০১৩ সালে বর্ষবরণের রাতে নিজের বাড়িতে খুন হন প্রৌঢ়া পূর্ণিমা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বাড়ির লোকজন ওই দিন একটি অনুষ্ঠানে বাইরে যাওয়ায় একাই ছিলেন তিনি। ২৬ জানুয়ারি বিকেলে কালনার ধাত্রীগ্রামে ফের খুন হন এক প্রৌঢ়া সাধনা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর স্বামী হাঁটতে গিয়েছিলেন সে সময়। পুলিশ দেহের পাশ থেকে উদ্ধার করে একটি লোহার চেন। মার্চে কালনা ২ ব্লকের নেপাকুলি গ্রামেও বাড়িতে মিটার দেখার নাম করে মমতাজ বিবি নামে এক বধূকে গলায় চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়। ওই মহিলার বয়ান শুনে দুষ্কৃতীর ছবি আঁকায় পুলিশ। তার পরেও তাকে ধরা যায়নি।

পাঁচ বছর ‘চুপ’ থাকার পরে এ বছর ফের একই কায়দায় খুনের অভিযোগ উঠছে শুরু করেছে। কালনা মহকুমাতেই গত পাঁচ মাসে ‘খুন’ হয়েছেন তিন মহিলা। আরও দু’জন খুন হয়েছেন মেমারিতে। গলায় লোহার চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টাও করা হয়েছে কয়েকজনকে। প্রত্যেকেই বাড়িতে একা ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ২৭ জানুয়ারি আনুখাল গ্রামে গৃহবধূ পুষ্প দাস খুন হন। ২ জানুয়ারি কালনার উপলতি গ্রামের বৃদ্ধা লক্ষ্মীবালা পাল এবং ৩১ মার্চ ধর্মডাঙা গ্রামের ইতি মণ্ডলকে মিটার দেখার নাম করে বাড়িতে ঢুকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ৩ এপ্রিল মেমারি থানা এলাকায় দু’জন খুন হন একই ভাবে। কালনা-মেমারি রোডে বড়া গ্রামে নিজের বাড়িতে খুন হন ৫২ বছরের রীতা রায়। রাতে খুন হন সেগুনবাগান এলাকার মমতা কিস্কু। দু’জনেই বাড়িতে একা ছিলেন। পরের মাসে হামলা হয় কালনা শহর ঘেঁষা হাটকালনা পঞ্চায়েতের মল্লিকপাড়া এলাকায়। ২৩মে ভাড়া বাড়িতে খুন হন বছর পঁয়ত্রিশের পুতুল মাঝি। ওই দিনই তাঁর স্বামী কাঠের কাজ করতে কলকাতা গিয়েছিলেন। সোমবার মন্তেশ্বরের বাঘাসন পঞ্চায়েতের শ্যামনবগ্রাম এলাকায় বছর পঞ্চাশের অঞ্জনা রায়ের রক্তাক্ত দেহ মেলে। তিনিও বাড়িতে একাই ছিলেন।

পুলিশের দাবি, শেষ তিনটি খুনে চেন ব্যবহার করার প্রমাণ মেলেনি। তিন জনেরই মাথার পিছনে আঘাত ছিল। অঞ্জনাদেবীর গলাতে পেঁচানো ছিল শাড়িও। এর আগেও ঘটনাগুলিতেও অবশ্য গলায় গামছা, শাড়ি পেঁচানোর প্রমাণ পেয়েছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, হামলার আগে রীতিমতো খোঁজখবর করা হচ্ছে। কোন দিন বাড়ি ফাঁকা, কোনও এলাকা নির্জন সব জেনে আক্রমণ হচ্ছে। তবে শেষ তিনটি ঘটনায় মাথায় চোট দেখে পুলিশের অনুমান, হামলার ধরন পাল্টাচ্ছে দুষ্কৃতী। জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সব খুনে হুবহু মিল নেই। তার উপর এত দিন কালনা, মেমারি, পাণ্ডুয়া এলাকায় ঘটনাগুলি ঘটছিল। এ বার সেখান থেকে প্রায় ৪০-৫০ কিলোমিটার দূরে মন্তেশ্বরের শেষ প্রান্তে ঘটনা ঘটেছে।’’ দুষ্কৃতী অচেনা এলাকা বেছে নিচ্ছে কি না, আগের ঘটনাগুলির সঙ্গে এর যোগসূত্র আছে কি না তাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। এ ছাড়াও মন্তেশ্বরে মৃতের যৌনাঙ্গে ক্ষত মিলেছে। তদন্তে সেটিও মাথায় রেখেছে পুলিশ। মৃতার স্বামী উদয়চাঁদ রায় জানান, সামান্য জমিজমা আছে তাঁদের। ছেলে কলকাতায় একটি প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের পরিবারে এমন হামলা কেন, উত্তর নেই তাঁর কাছেও।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষ বলেন, ‘‘আগের খুনের ঘটনাগুলির সঙ্গে মন্তেশ্বরের যোগ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে। আশা করছি দোষীরা ধরা পড়বে।’’

Crime Murder Kalna বর্ধমান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy