Advertisement
E-Paper

বোমায় যুবক খুন, তৃণমূলে চাপান-উতোর

সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি নিয়ে দুই গোষ্ঠীর গোলমাল চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। শুক্রবার রাত থেকে গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। শনিবার সকালে বোমার আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হল মঙ্গলকোটের বকুলিয়া গ্রামে। ভাঙচুর হল দু’টি বাড়িতেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:১৫
শোকার্ত: নিহত যুবকের বাড়িতে। শনিবার।— নিজস্ব চিত্র।

শোকার্ত: নিহত যুবকের বাড়িতে। শনিবার।— নিজস্ব চিত্র।

সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি নিয়ে দুই গোষ্ঠীর গোলমাল চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। শুক্রবার রাত থেকে গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। শনিবার সকালে বোমার আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হল মঙ্গলকোটের বকুলিয়া গ্রামে। ভাঙচুর হল দু’টি বাড়িতেও। রাত পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিহত প্রশান্ত ধীবরের (২৯) বাবা জলধর ধীবর মঙ্গলকোট থানায় ছেলেকে খুনে ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু অভিযুক্তেরা কোন দলের, সেই প্রশ্নে প্রকাশ্যে এসে পড়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। নিহতের পরিবারের দাবি, অভিযুক্তেরা বিজেপি-র কর্মী-সমর্থক। মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীরও অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-র চক্রান্তে আমাদের কর্মী খুন হলেন।’’ কিন্তু সে কথা কার্যত অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘অহেতুক বিজেপি জুজু দেখালে ওরাই অক্সিজেন পেয়ে যাবে।’’ মঙ্গলকোটের বিজেপি নেতা গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দায় তাঁদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বকুলিয়া গ্রামের ১১ জন উপভোক্তার নাম নথিভুক্ত করে মাঝিগ্রাম পঞ্চায়েত। প্রত্যেকের এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা। এরই মধ্যে গ্রামে শাসকদলের দুই নেতা পিন্টু মাঝি ও অক্ষয় ধীবরের গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি পিন্টুর অনুগামীরা আরও ১১ জনের ও অক্ষয়ের লোকজন ৭ জনের নাম নথিভুক্ত করাতে চায়। সে নিয়েই বেশ কিছু দিন ধরেই গ্রামে বিবাদ চলছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি শুরু হয়। প্রশান্তর কাকা লক্ষ্মণবাবু পিন্টুর অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত। উপভোক্তা তালিকায় নাম নথিভুক্ত না হওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। তার জেরেই অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। রাতে এক দল দুষ্কৃতী লক্ষ্মণবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। প্রশান্তর মা লতিকাদেবী অভিযোগ করেন, এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ জমিতে চাষের কাজে যাচ্ছিলেন তাঁর ছেলে। সেই সময়ে তাঁকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। প্রশান্ত আলের ধারে লুটিয়ে পড়েন। জখম হন তাঁর সঙ্গী, বছর পঁচিশের বাপন ধীবর। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মৃত্যুর ঘটনার পরেই থমথমে হয়ে যায় গোটা এলাকা। পুলিশ পৌঁছয়। প্রশান্তর স্ত্রী রেখার দাবি, পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন। গ্রামবাসীদের একাংশ দাবি করেন, বকুলিয়ায় বালিঘাটে শ্রমিক সরবরাহ করাকে কেন্দ্র করে পিন্টু ও অক্ষয়ের গোষ্ঠীর বিবাদ বাধে। প্রতি সপ্তায় তিনশো শ্রমিকের প্রয়োজন পড়ে ঘাটে। ঘাটের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার অশোক সাহা অবশ্য দাবি করেন, তিনি অশান্তি এড়াতে স্থানীয় শ্রমিক নেন না। বীরভূম থেকে শ্রমিক আনেন। এ দিনের ঘটনার সঙ্গে বালিঘাটের কোনও যোগ নেই বলে দাবি নিহতের পরিবার এবং পুলিশেরও। প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও। পুলিশ জানায়, চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

Explosion Death TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy