Advertisement
০২ মে ২০২৪

ফোন সারাতে দিয়ে জালে খুনে অভিযুক্ত

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে গলসির শাঁকড়াই ও হিট্টাগ্রামের মাঝামাঝি হিট্টাপুল বা বাজানের পুলের পাশে ধান খেত থেকে একটি অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এই রাস্তার ধারেই দেহ মিলেছিল ওই কিশোরীর। —নিজস্ব চিত্র

এই রাস্তার ধারেই দেহ মিলেছিল ওই কিশোরীর। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও গলসি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

‘উধাও’ হয়ে যাওয়ার ছ’মাস পরে সেই ফোন সারাতে ‘অন’ করেছিলেন মিস্ত্রি। সঙ্গে সঙ্গেই খবর চলে যায় পুলিশের কাছে। ওই মিস্ত্রিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও এক জনের সন্ধান পায় পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পুলিশের জালে পড়ে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক।

গলসি থানার পুলিশের দাবি, ধৃত জেরায় অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিল। বারবার জিজ্ঞাসাবাদের পরে ছাত্রীকে খুন করার কথা স্বীকার করলেও সে ধর্ষণের কথা মানেনি বলে পুলিশের দাবি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “খুনের আগে না পরে ধর্ষণ হয়েছিল, সে ব্যাপারে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। দেহরসের ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার পরে তা স্পষ্ট হবে।’’ বৃহস্পতিবার গলসির চান্না গ্রামের বাড়ি থেকে ধৃত গদাই গড়াইকে আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক।

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে গলসির শাঁকড়াই ও হিট্টাগ্রামের মাঝামাঝি হিট্টাপুল বা বাজানের পুলের পাশে ধান খেত থেকে একটি অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহের পাশ থেকে জুতো, জলের বোতল ও সাইকেলও মেলে। কিন্তু উধাও হয়ে গিয়েছিল তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ঘটনার দু’দিন আগে বছর সতেরোর ওই কিশোরীকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করেছিল,ওই কিশোরী গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি যাচ্ছিল। কিন্তু পরে তদন্তে জানা যায়, ওই কিশোরী ঘটনার দিন বর্ধমানে এসেছিল। আর সেখান থেকেই তার পিছু নিয়েছিল গদাই। সাইকেলে বাড়ি যাওয়ার সময় ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় সে। কিন্তু কিশোরী রাজি না হওয়ায় কথা কাটাকাটি হয়। ওই কিশোরীকে রাস্তার উপরেই ফেলে গদাই জুতো দিয়ে মারতে থাকে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় গদায় জানিয়েছে, ‘রাগের মাথায় আমার কাছে থাকা গামছা দিয়ে ওই কিশোরীর গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করি। তার পরে দেহটিকে টেনে নিয়ে গিয়ে ধান জমিতে ফেলে দিয়েছিলাম’।

পুলিশের দাবি, জেরায় গদাই জানিয়েছে, ওই ঘটনার পরেই কিশোরীর মোবাইল থেকে পরপর ৮-১০টি ফোন করে সে। তাঁর মধ্যে এক জন ফোন ধরলে তাঁকে বলে, ‘আপনাদের বোন মারা গিয়েছে’। প্রিয়ব্রতবাবু বলেন, “তদন্তে সেই তথ্যও উঠে এসেছিল। কিন্তু ওই ব্যক্তির কোনও বোন না থাকায় তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাবেননি।’’ পরে বাড়ি ফেরার সময় গদাই মোবাইলটি নিয়ে যায়। বন্ধ অবস্থায় কিছুদিন নিজের কাছে রাখার পরে এক আত্মীয়কে ফোনটি দেন তিনি। কিন্তু সমস্যার জন্যে ফোনটি খুলছে না দেখে ওই ব্যক্তি তা দোকানে সারাতে দেন। মিস্ত্রী ফোনটি সারানোর জন্য ‘অন’ করতেই খবর পায় জেলা পুলিশের সাইবার সেল। পুলিশ গিয়ে প্রথমে মিস্ত্রির সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর কথার খেই ধরে খোঁজ মেলে ওই আত্মীয়ের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গদাই বর্ধমান শহরের একটি ভূসিকলে কাজ করে। সে বিবাহিত, একটি সন্তানও রয়েছে। প্রতিদিন চান্না গ্রাম থেকে বর্ধমানে যাতায়াত করে সে। শুক্রবার কিশোরীর বাড়িতে গেলে দেখা যায়, সেখানে কেউ নেই। পড়শিরা ধৃতের কঠিন শাস্তি চেয়েছেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi Murder Rape Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE