Advertisement
১৯ মে ২০২৪
দাবি জাহেরের ভাইয়ের

‘খুনিদের’ নাম বলেছেন দাদা

কোনও খুন হলেই থমকে যায় কেতুগ্রাম ১ ব্লক সদর। তার প্রভাব পড়ে বাদশাহি রোডের উপর তিন জেলার মোড় ফুটিসাঁকোতেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

কোনও খুন হলেই থমকে যায় কেতুগ্রাম ১ ব্লক সদর। তার প্রভাব পড়ে বাদশাহি রোডের উপর তিন জেলার মোড় ফুটিসাঁকোতেও। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি খুনের পরেও তাঁর খাসতালুক স্বাভাবিক থাকায় প্রশ্ন উঠছে, চারিদিকে শত্রু বাড়তে থাকায় জাহের শেখের প্রভাব কী কমছিল, সেই সুযোগই কী কাজে লাগিয়েছে আততায়ীরা?

এক সময়ের সঙ্গীরা জোট বেঁধে তাঁকে গুলি করেছে—মৃত্যুর আগে জাহের এ রকমই বয়ান দিয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন তাঁর খুড়তুতো ভাই বাদশা শেখ। নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে বৃহস্পতিবার রাতে ১৫ জনের নামে কেতুগ্রাম থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগে তাঁর দাবি, রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকা অবস্থাতেই জাহের শেখ ‘খুনি’দের নাম তাঁর কাছে বলে যান। বিবরণ সমেত নামের তালিকা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে মোরগ্রামে বাড়ি থেকে বছর আঠারোর আসিফ আখতার ও বছর কুড়ির সোহেল শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাদের ৪ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” অভিযোগে আরও নাম রয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জাহাঙ্গির শেখ, তার ভাই আব্দুল সালাম ওরফে ফিরোজ, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উজ্জ্বল শেখ, তৃণমূল নেতা সাউদ মিঞা, হারা শেখ থেকে এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী তুফান শেখ, লোটাস শেখদের। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “অভিযুক্তদের নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে, কেতুগ্রাম ১ ব্লকের প্রতিটি কোণে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শত্রু তৈরি করে ফেলেছিলেন। তাঁরাই একজোট হয়েছে। এলাকায় প্রভাব কমতে থাকায় তা টের পাননি জাহের।” কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, “জাহেরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছিল। এর আগেও হামলা হয়েছিল। সাবধানে থাকতে বলতাম। কিন্তু কথা শুনল না।”

বুধবার সন্ধ্যা সওয়া সাতটা নাগাদ বাদশাহি রোডের উপর রায়খা প্রাথমিক স্কুলের কাছে খুন হন জাহের শেখ। অভিযোগকারী বাদশার দাবি, ‘আমি দাদার মোটরবাইকের খানিকটা পিছনে ছিলাম। হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। কাছে যেতেই দেখি, কয়েকজন মোটরবাইকে রাস্তার উপর দিয়ে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যাচ্ছে। তাঁরা পালাতেই এসে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় দাদা পড়ে রয়েছে’। বাদশার দাবি, “আমি দাদার কাছে জানতে চাই, কারা করল? এক এক করে একদা ‘ঘনিষ্ঠ’দের নাম বলে দাদা।’’ হাসপাতালে যাওয়ার আগেই সব শেষ হয়ে যায় বলে তাঁর দাবি।

তবে অভিযোগে দেহরক্ষীর বিষয়টি উল্লেখ না থাকা নিয়ে এ দিন আদালতে সওয়াল করেন বিরোধী পক্ষের আইনজীবী রবিশঙ্কর দাস। ওই দিন দুপুরে অন্য মামলায় ওই রক্ষীকে আদালতে দেখা যায় বলেও দাবি করে তিনি। জানা যায়, ধৃত আসিফ সদ্য উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে পাথরচাপুড়ি আল আমিন মিশন থেকে। তার হয়ে জামিনেরও আবেদন করেন তিনি। সোহেলও ইলামবাজার আইটিআই কলেজের ছাত্র। রবিশঙ্করবাবুর দাবি, ‘‘এরা কেউই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। সাত দিনের ছুটিতে বাড়ি এসেছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Zaher Sheikh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE