অত্যাবশকীয় পণ্য সরবরাহ নিগমের সঙ্গে চালকল মালিকদের এখনও চুক্তি হয়নি। সহায়ক মূল্যে ধান সরকারের কাছ থেকে চালকল কিনবে কিনা, তা-ও অনিশ্চিত। তার মধ্যেই আগামী ১২ ডিসেম্বর থেকে বর্ধমান জেলায় ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিল জেলা পরিষদ।
সোমবার দুপুরে এক বৈঠকের পর জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘১২ ডিসেম্বর থেকে জেলার ২৫টি কেন্দ্র থেকে ধান কেনা হবে। চালকল মালিকদের কাছে আমরা সাহায্য চেয়েছি। তাঁরা সাহায্য না করলে সহায়ক মূল্যে কেনা ধান জেলার কিসান মান্ডিতে রেখে দেব।’’ খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর সহায়ক মূল্য ঠিক হয়েছে প্রতি কুইন্টালে ১৪৭০ টাকা (৬০ কেজি বস্তায় ধানের দাম হবে ৮৮২ টাকা)। এত দিন সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য চাষিদের পরিবহণ খরচ বাবদ কুইন্টাল প্রতি ১৫ টাকা দেওয়া হত। এ বার তা বাড়িয়ে ২০ টাকা করেছে সরকার। একই সঙ্গে এ বছর থেকে চেকে নয়, চাষিদের ধান বিক্রির টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে খাদ্য পরিদর্শক মর্যাদার আধিকারিক থাকবেন। তাঁরা চাষিদের নাম, ঠিকানা ও অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে মাস্টার রোল তৈরি করবেন। ধান কেনা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই অনলাইনে ওই সব তথ্য আপলোড করে দেবেন। এর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে।
চালকল মালিক সমিতির প্রতিনিধি সুব্রত মণ্ডল, আব্দুল মালেকরা এ দিনের বৈঠকেও সভাধিপতি, খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ, অতিরিক্ত জেলাশাসক (খাদ্য, শিক্ষা, পুরসভা) রত্নেশ্বর রায়ের সামনে অবশ্য বলে দেনন, ‘‘আমরা সরকারের কাছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দু’হাজার কোটি টাকা পাব। শুধু তাই নয়, ধান থেকে চাল তৈরির খরচ বাড়ানো, পরিবহণ খরচ বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়াও ধান নামানো ও চাল ওঠানোর খরচও সরকার কমিয়ে দিয়েছে। আমরা সে জন্য সরকারের কাছে নানা দাবি রেখেছি। ওই সব দাবি না মানলে ধান থেকে চাল তৈরি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, গোটা জেলায় ৫১২টি চালকলের মধ্যে একটিও অত্যাবশকীয় পণ্য নিগমের সঙ্গে চুক্তি করেনি। অথচ, বিগত বছরগুলিতে চালকলগুলির সাহায্য নিয়েই সরকারের বিভিন্ন সংস্থা চাল কিনেছে। ফলে চালকল মালিদের সাহায্য ছাড়া চাল কিনতে গিয়ে সরকার সমস্যায় পড়বে কিনা, সে প্রশ্ন উঠছে। জেলা সভাধিপতির যদিও দাবি বলেন, ‘‘এখন আমাদের কাছে অনেকগুলি কিষাণ মান্ডি রয়েছে। আমরা ধান কিনে সেখানেই মজুত করব। চালকল মালিকরা ওই ধান নেবেন কিনা, পরে দেখা যাবে।’’