Advertisement
E-Paper

অবশেষে চার্জগঠন হল সাংবাদিকদের মারধরের মামলায়

প্রায় আড়াই বছর পরে সাংবাদিক ও চিত্র সংবাদিকদের উপর হামলা, তাঁদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর ও হুমকি দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত দুই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪২

প্রায় আড়াই বছর পরে সাংবাদিক ও চিত্র সংবাদিকদের উপর হামলা, তাঁদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর ও হুমকি দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত দুই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হল।

বুধবার বর্ধমানের জেলা জজ পাবনকুমার মণ্ডল নির্দেশ দেন, আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর ওই মামলার শুনানি চলবে। শুনানিতে যোগ দিতে সমস্ত সাক্ষীদের সমন পাঠাবে আদালত। অভিযুক্ত দুই জুনিয়র ডাক্তার অভিনবকুমার সিংহ ও শৌভিক বাগকেও ওই তিনদিন এজলাসে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা জজ।

২০১২ সালের ২৮ মার্চ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, গলসির বাধগাছা গ্রামের কিশোরী রেশমি খাতুনের। পরে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান মৃতার পরিজনেরা। বিক্ষোভে কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার নিগৃহীত হন বলেও অভিযোগ ওঠে। তারপরেই তাঁরা আচমকা কর্মবিরতি ডেকে হাসপাতালে চত্বরে মিছিল শুরু করেন। ওই ঘটনার ছবি তুলতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সাংবাদিকেরা। অভিযোগ, লাঠি, রড ইত্যাদি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁদের উপর চড়াও হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই হাসপাতালেরই জরুরি বিভাগে ভর্তি হন ১২-১৩ জন। সেখান থেকে তাঁদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানোর কথা থাকলেও জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁদের জরুরি বিভাগে আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। পরে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ওই সাংবাদিকদের (যাঁদের মধ্যে ছিলেন উদিত সিংহ ও মুকুল রহমান নামের দুই চিত্রসাংবাদিক) বিভিন্ন বেসরকরি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ঘটনার পরে সুজাতা মেহেরা নামে এক সাংবাদিক বর্ধমান থানায় ওই দুই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে তাঁদের মারধর, ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর ও হুমকির দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের অবশ্য দাবি ছিল, অভিযুক্ত চিকিৎসকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পাঁচ মাস পরে ২০১২ সালের ৩১ অগাস্ট বর্ধমান থানার এসএই অঞ্জন রায় ওই দুই জুনিয়র ডাক্তার অভিনবকুমার সিংহ ও শৌভিক বাগের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করেন। তার ভিত্তিতে এ দিন জেলা জজ ওই দু’জনের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা (৩০৭ ধারা), ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া (৩৭৯/৩৪ ধারা), ক্যামেরা ভাঙচুর (৪২৭/৩৪ ধারা), হুমকি (৫০৬) ধারায় চার্জগঠন করে।

আদালতে প্রশ্ন ওঠে, ওই দুই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারা অর্থাৎ হত্যার চেষ্টার চার্জ দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে। সরকারি আইনজীবী পীযূষরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা জজকে প্রহৃত চিত্র সাংবাদিক উদিত সিংহের ছবি দেখিয়ে বলেন, “এই ছবিটিই প্রমাণ করে ওই দুই জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার ধারা অবশ্যই প্রযুক্ত হয়।” জেলা জজ তাঁর রায়ে ওই ধারায় চার্জগঠনের নির্দেশ দেন।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অবশ্য এ দিন ওই দুই ডাক্তারের খোঁজ মেলেনি। অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায় বলেন, “চার্জগঠন সম্পর্কে আমার কাছে কোনও নথিপত্র আসেনি। মন্তব্য করতে পারব না।” কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না জানতে চাওয়া হলে মঞ্জুশ্রীদেবী বলেন, “বিশেষ কিছু মনে নেই। এটুকু মনে রয়েছে, জুনিয়র ডাক্তারেরা ধর্মঘট করেছিলেন। আমরা অতিকষ্টে ধর্মঘট প্রত্যাহার করিয়েছিলাম।”

burdwan chargesheet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy