Advertisement
১৯ মে ২০২৪

আক্রান্ত বহু নেতা-কর্মী, পুলিশি পক্ষপাতের অভিযোগ বিজেপির

দল ছেড়ে প্রচুর কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা হামলা চালাচ্ছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপরসোমবার জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে এসে এমনই অভিযোগ করলেন বিজেপির জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) দেবীপ্রসাদ মল্লিক। তাঁর দাবি, “অভিযোগ জানাতে গিয়ে দেখছি প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকছে না। পুলিশ আমাদের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে উল্টে তৃণমূলের মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করছে।”

বিজেপির বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

দল ছেড়ে প্রচুর কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা হামলা চালাচ্ছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপরসোমবার জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিতে এসে এমনই অভিযোগ করলেন বিজেপির জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) দেবীপ্রসাদ মল্লিক। তাঁর দাবি, “অভিযোগ জানাতে গিয়ে দেখছি প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকছে না। পুলিশ আমাদের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে উল্টে তৃণমূলের মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করছে।” জেলাশাসক না থাকায় অতিরিক্ত জেলাশাসক উৎপল বিশ্বাসের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন দেবীপ্রসাদবাবুরা। উৎপলবাবু বলেন, “ওঁরা কয়েকটি অভিযোগ করেছেন। প্রায় সবগুলিই পুলিশের বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশের কাছে ওই স্মারকলিপি পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

স্মারকলিপিতে সম্প্রতি আউশগ্রাম থানার মালোচা গ্রামে বৈঠক করে ফেরার পথে কর্মীদের উপর হামলা ও এক কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে। দেবীপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, “ঘটনার পরে ১১ জনের নামে এফআইআর দায়ের করি। পুলিশ একজনকেও গ্রেফতার করেনি। উল্টে ওদের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আমাদের এক কর্মীকে ধরেছে।” আউশগ্রাম থানার অবশ্য দাবি, গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত ছিল দু’জন। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পার্টি অফিস পোড়ানোর ঘটনাতেও এফআইআরে নাম থাকা এক ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে।

বিজেপির আরও অভিযোগ, সম্প্রতি গোদা এলাকায় বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। তারপরেই তৃণমূলের এক দল দুষ্কৃতী তাঁদের উপর হামলা চালায়। এতে ১০ জন বিজেপি কর্মী আহত হন। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যও নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপির অভিযোগ, হাসপাতালেও তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কিছু নেতা কর্মী। জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বর্ধমান থানা সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, এ ধরণের কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। এছাড়া ভাতারের বলগনায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হওয়া রাস্তার প্রতিবাদ করায়, জামালপুরের শ্রীকৃষ্ণপুরে, মেমারি ২ ব্লকের বাহারেও বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। তারপরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। দেবীপ্রসাদবাবু বলেন, “আশা করব, পুলিশ অন্তত নিরপেক্ষ হয়ে আমাদের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। প্রাণহানি ঠেকাবে।” তবে বিজেপির উপর হামলার অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূলের জেলার অন্যতম সাবাধণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “আমাদের দল থেকে এমন কেউ এখনও বিজেপিতে চলে যাননি, যে আমাদের হা-হুতাশ করতে হবে। যাঁরা গিয়েছেন, তাঁরা নেহাতই অজ্ঞাতকুলশীল, দুদিন পরে আবার তৃণমূলে ফিরে আসবেন।”

এ দিন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা তাঁদের স্মারকলিপি নিতে অস্বীকার করেছেন বলেও বিজেপির অভিযোগ। এসপি অবশ্য বলেন, “আমি গত ১৬ জুন ওঁদের স্মারকলিপি নিয়েছিলাম। তাতে যে অভিযোগগুলি ছিল তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপরে আজ ওঁরা ফের ডেপুটেশন দিতে চাইলে, আমি বলেছিলাম আমাদের জেলার উপর দিয়ে লক্ষ লক্ষ তৃণমূল কর্মী সমর্থক ব্রিগ্রেড সমবেশে যাবেন। পুলিশ তাই ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকবে, ওরা যেন অন্য দিন স্মারকলিপি দেন। কিন্তু ওঁরা তারিখ বদলাতে চাননি। তবে ওদের অভিযোগের নথি দেখে বলতে পারবো, আমরা এ পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bardwan leaders harrassed BJP alleged police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE