Advertisement
E-Paper

আলু রফতানিতে উদাসীন সরকার, তোপ আনিসুরের

রাজ্যে এ বার আলুর ফলন ভাল হলেও সরকারের তরফে রফতানির কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি, প্রয়োজনের তুলনায় আলু কেনাও হচ্ছে সামান্যই। আর তার জেরেই জেলায় বাড়ছে আলুচাষির মৃত্যু-- মঙ্গলবার জেলার আত্মঘাতী চার আলুচাষির বাড়ি গিয়ে এমন ভাবেই তোপ দাগলেন সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০০:৫৯
ভাতারে আলুচাষির পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন বাম প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। ছবি: উদিত সিংহ।

ভাতারে আলুচাষির পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন বাম প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। ছবি: উদিত সিংহ।

রাজ্যে এ বার আলুর ফলন ভাল হলেও সরকারের তরফে রফতানির কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি, প্রয়োজনের তুলনায় আলু কেনাও হচ্ছে সামান্যই। আর তার জেরেই জেলায় বাড়ছে আলুচাষির মৃত্যু-- মঙ্গলবার জেলার আত্মঘাতী চার আলুচাষির বাড়ি গিয়ে এমন ভাবেই তোপ দাগলেন সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান।

এ দিন আনিসুর রহমান, সৈয়দ মহম্মদ হেদায়তুল্লাহ, বাসুদেব খাঁ, অপর্ণা সাহা, বিধানসভার বামফ্রন্টের মুখ্য সচেতক বিশ্বনাথ কারক-সহ ১০ বাম বিধায়কের একটি দল এবং প্রাক্তন সাংসদ সাইদুল হক ওই চাষিদের বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখলেন। দলটি প্রথমে ভাতারের ছাতিমডাঙায় আত্মঘাতী আলুচাষি গুড্ডু মুর্মুর বাড়িতে পৌঁছয়। ওই চাষির স্ত্রী কালোমনি মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে আলু চাষ, ঋণ প্রভৃতি বিষয়ে খোঁজ খবর নেয় দলটি। প্রতিনিধি দলের তরফে জানতে চাওয়া হয় মৃত চাষির কোনও কিসান ক্রেডিট কার্ড ছিল কি না। কালোমনিদেবী আনিসুর রহমানদের বলেন, “স্বামীর কোনও কিসান ক্রেডিট কার্ড ছিল না। মহাজনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দেনা করে তিনি আলুচাষ করেন। আলু চাষে লোকসানের জেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।” বাম প্রতিনিধি দলের সামনে স্থানীয় চাষি শ্যাম টুডু, অনীল সরেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আলু বা অন্যান্য কোনও ফসলই সরকারের তরফে কেনা হয় না। সমবায় থেকেও ঋণও মেলে না। সার, কীটনাশাকও-সহ চাষের বিভিন্ন উপকরণ চড়া দামে কিনতে হয় বলেও জানান ওই চাষিরা।

সব শুনে আনিসুর রহমান দাবি করেন, “রাজ্যে সাধারণত ১ কোটি টন আলুর ফলন হয়। তার মধ্যে ৬০ থেকে ৬৫ লক্ষ টন আলু হিমঘরে রাখা যায়। বাকি আলু রাখার জন্য অতিরিক্ত হিমঘর তৈরিতে কোনও সরকারি উদ্যোগ দেখা যায়নি।” তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত আলু চাষিদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সঠিক তদন্ত করা হয়নি।

গলসির সাঁকো গ্রামের আত্মঘাতী আলুচাষি গণেশ সরেনের বাড়িতে গিয়েও প্রায় একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন বাম প্রতিনিধি দল। গণেশবাবুর স্ত্রী মুংলি সরেন বাম প্রতিনিধি দলকে বলেন, “৫০ হাজার টাকা দেনার দায়েই স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন।” স্থানীয় আলুচাষি সোম হেমব্রমের অভিযোগ, “আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা বস্তা বিক্রি হচ্ছে। ওই দামে আলু বেচে কী করে মহাজনের ঋণ শোধ করা যাবে জানি না।” এ ছাড়াও খণ্ডঘোষ ও জামালপুরের দুই আলুচাষি পরিবারের সঙ্গেও দেখা করে প্রতিনিধি দলটি।

আলুর দাম না মেলায় আনিসুর রহমানের কটাক্ষ, “গত বছর আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু এখন লোকসানের জেরে আলুচাষিরা মারা গেলেও সেদিকে নজর নেই।” যদিও এ দিনের বাম প্রতিনিধি দলের অভিযোগকে পাত্তা না দিয়ে বর্ধমান জেলা তৃণমূলের (গ্রামীণ) অন্যতম সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন বামেরা এখন মিথ্যেকে আশ্রয় করে জমি পেতে চাইছে।”

potato farmer anisur rahman potato export bhatar cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy