Advertisement
০৪ মে ২০২৪

আসেন না প্রার্থীরা, তবু ভোট দেবে বৃদ্ধাবাস

সবে খাওয়া শেষ করে থালাটা নামিয়ে রেখেছেন ছবিদেবী। প্রশ্নটা শুনেই অভিমানী গলায় বললেন, “নেতারা তো দেশের কথা ভাবতেই ব্যস্ত। আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসার সময় কোথায় তাঁদের?” কথার ফাঁকেই পাশের ঘর থেকে উঁকি দিলেন প্রাক্তন রেল কর্মী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়। তিনিও অবাক গলায় বলেন, “না, না ওদের কোনও দিন দেখিনি।” ছবিদেবী, শ্যামাপদবাবুদের মতো আসানসোলের ঢাকেশ্বরী বৃদ্ধাশ্রমের অনেক বাসিন্দারই আক্ষেপ, গত ১৫ বছরে একটিবারের জন্যও এলাকার বিধায়ক, সাংসদকে চোখে দেখেননি তাঁরা।

একাকী বসে। —নিজস্ব চিত্র।

একাকী বসে। —নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৪ ০০:৫৫
Share: Save:

সবে খাওয়া শেষ করে থালাটা নামিয়ে রেখেছেন ছবিদেবী। প্রশ্নটা শুনেই অভিমানী গলায় বললেন, “নেতারা তো দেশের কথা ভাবতেই ব্যস্ত। আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসার সময় কোথায় তাঁদের?” কথার ফাঁকেই পাশের ঘর থেকে উঁকি দিলেন প্রাক্তন রেল কর্মী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়। তিনিও অবাক গলায় বলেন, “না, না ওদের কোনও দিন দেখিনি।”

ছবিদেবী, শ্যামাপদবাবুদের মতো আসানসোলের ঢাকেশ্বরী বৃদ্ধাশ্রমের অনেক বাসিন্দারই আক্ষেপ, গত ১৫ বছরে একটিবারের জন্যও এলাকার বিধায়ক, সাংসদকে চোখে দেখেননি তাঁরা। তবে প্রার্থীদের দেখা মেলে নি বলে ভোট দিতে যাবেন না এমনটা নয়। বরং সকাল সকাল একসঙ্গে গিয়ে ভোট দেবেন বলেই জানালেন তাঁরা। বললেন, “না বোতাম নয়, পছন্দের দলের প্রার্থীকেই ভোট দেব।”

সংসার থেকে দূরে, ওই আবাসিকদের বর্হিবিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা খবরের কাগজ আর টিভি। পাড়ুই থেকে কামদুনি কিংবা সারদা-কাণ্ড সবেরই অল্পবিস্তর খবর রাখেন তাঁরা। এ বার আসানসোল কেন্দ্রের প্রার্থী কারা সে খবরও রাখেন বৃদ্ধাশ্রমের ২৪ জন আবাসিক। তাঁদেরই একজন বালির প্রমথ চক্রবর্তী বললেন, “রেডিওতে বাবুল সুপ্রিয়র রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনেছি। উনি এখানে দাঁড়িয়েছেন ভাবতেই পারছি না। আমাদের কাছে একবার এলে খুব ভাল লাগতো।” রেবা দত্ত, বন্দনা বসুদের মতো আরও অনেকেরই ইচ্ছা আসানসোলের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে প্রচারে বাবুল সুপ্রিয় যেমন গান গাইছেন, তেমনি এই বৃদ্ধাশ্রমে এসেও শুনিয়ে যান দু-চার কলি। তাঁদের কথায়, “এ আশা হয়তো পূরণ হবে না। কিন্তু তিনি যদি জিতে সাংসদ হতে পারেন তবে নিশ্চই আমাদের কথা ভাববেন।”

তবে বৃদ্ধাশ্রমের প্রায় সাত জন আবাসিকের ভোটার পরিচয়পত্র নেই। ম্যানেজার জানান, মহকুমা প্রশাসনের কাছে বহু বার সে কথা জানিয়েছি, কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা না আসায় পরিচয়পত্র তৈরি হয়নি। আবাসিকদের অভিযোগ, ভোটার কার্ড না থাকায় বার্ধক্য ভাতার টাকাও পাচ্ছেন না তাঁরা। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস অবশ্য জানান, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। নিশ্চয় খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE