Advertisement
E-Paper

কারখানায় ডাকাতি করতে গিয়ে গুলিতে নিহত ২

কারখানায় ডাকাতি করতে গিয়ে গুলিতে নিহত হল দু’জন। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের পালিতপুরে একটি গ্যাস উৎপাদন কারখানায়। পুলিশ জানায়, নিহত মোফিজুল শেখ (৩২) ও ডালিম শেখ (২৮) স্থানীয় হাটুদেওয়ান ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, নিজেদের দলের লোকের ছোড়া গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছে দু’জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৯
এখানেই চলে গুলি। ইনসেটে, পড়ে একপাটি চটি। নিজস্ব চিত্র।

এখানেই চলে গুলি। ইনসেটে, পড়ে একপাটি চটি। নিজস্ব চিত্র।

কারখানায় ডাকাতি করতে গিয়ে গুলিতে নিহত হল দু’জন। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের পালিতপুরে একটি গ্যাস উৎপাদন কারখানায়। পুলিশ জানায়, নিহত মোফিজুল শেখ (৩২) ও ডালিম শেখ (২৮) স্থানীয় হাটুদেওয়ান ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, নিজেদের দলের লোকের ছোড়া গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছে দু’জন।

জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ওই কারখানায় ২৫-৩০ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল ঢুকে পড়ে। তারা কারখানার সশস্ত্র রক্ষীর বাধা উপেক্ষা করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানা চত্বরে একটি গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে তদন্ত সেরে ফেরার সময়ে পুলিশ খবর পায়, আরও একটি দেহ পড়ে রয়েছে হাটুদেওয়ানে। দু’টি দেহই ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার গোবিন্দপ্রসাদ কর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ একটি মামলা রুজু তদন্ত শুরু করেছে।

কী ভাবে ডাকাতি করতে এসে দু’জনের গুলিতে মৃত্যু হল, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থলে থাকা কারাখানার রক্ষী শূন্যে গুলি ছুড়েছিলেন। তা কারও গায়ে লাগার কথা নয়। লুঠপাচ শুরু করার আগে ডাকাতেরা আলো নিভিয়ে দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। তখনই নিজের দলের কারও গুলিতে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান।

পালিতপুরের এই কারখানায় আগেও বেশ কয়েক বার ডাকাতি হয়েছে। পুলিশ জানায়, ডাকাতেরা গুলি চালানো শুরু করতেই ভয় পেয়ে রক্ষী-সহ কারখানার অন্য কর্মীরা পালিয়ে যান। পরে তারা পুলিশে খবর দেন। রাত আড়াইটে নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারখানার গেট থেকে মোফিজুলের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, আর একটি গুলিবিদ্ধ দেহ ভ্যান রিক্সায় তুলে পালিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ খবর পায় হাটুদেওয়ানের ডাঙাপাড়ায় ওই ভ্যানে চাপানো দেহটি নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ গিয়ে সেই দেহ উদ্ধার করে। দুষ্কৃতীরা কারখানা থেকে কিছু গ্যাস সিলিন্ডার ও ছাঁট লোহা নিয়ে পালিয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

শুক্রবার পালিতপুরের ওই কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে কিছু লোহা, পিতল, তামার তার ও রড। পড়ে রয়েছে কয়েক জোড়া চটি। তার চারপাশে রক্তের দাগ। কারখানা চালু থাকলেও লোকজন বিশেষ নেই। কারখানার মালিক সুদেশ অগ্রবাল এখানে থাকেন না। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। রাতের ঘটনা সম্পর্কে কারখানার কেউই মুখ খুলতে চাননি।

হটুদেওয়ান ডাঙাপাড়ায় নিহত দু’জনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, পরিজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ডালিমের আত্মীয় শেখ আকবর বলেন, “রাত ৮টা নাগাদ খোদা বক্স নামে এক জন ফোন করে ডালিম ও মোফিজুলকে ডাকে। বলে কিছু কাজ রয়েছে। ওরা যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবে। আর ফেরেনি। ভোরে ডালিমের দেহ ভ্যানে করে কারা বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে যায়।” মোফিজুলের স্ত্রী আর্জিনা বেগম জানান, তাঁর স্বামী ও ডালিম স্থানীয় ভোতার পাড়ে খোদা বক্সের লোহা কারখানায় কাজ করতেন। তবে এলাকায় ঘুরে খোদাবক্সের সন্ধান মেলেনি। পুলিশ জানায়, ডাকাতির ঘটনায় তিন জনকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।

burdwan death 2
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy