অবৈধ জলের সংযোগের জন্য পুরসভার বহু টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তাই এই সব সংযোগ ছিন্ন করতে আজ, সোমবার পুরসভা বরাকর থেকে অভিযানে শুরু করবে বলে জানাল প্রশাসন। পুরসভার ন্যায্য পাওনা ও জরিমানা মিটিয়ে দিলে অবৈধ সংযোগগুলি আইনসম্মত করে দেওয়া হবে। তাতে রাজি না থাকলে সংযোগগুলি পুরসভার অভিযানের আগেই বাসিন্দাদের ছিন্ন করতে বলা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
মহকুমাশাসক (আসানসোল) অমিতাভ দাস জানান, বেআইনি ভাবে নেওয়া পানীয় জলের সংযোগের জন্য বছরে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা ক্ষতি হয় পুরসভার। তা বন্ধ করতেই এই অভিযানের সিদ্ধান্ত। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাকরে পুরসভার নিজস্ব একটি জলপ্রকল্প রয়েছে। বরাকর নদে একাধিক সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে জল তুলে তা ভূগর্ভস্থ জলাধারে মজুত করা হয়। পরে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে এলাকায় বণ্টন করা হয়। বরাকরে পাঁচটি ওয়ার্ড সেই জল পায়। কিন্তু, নানা জায়গায় পাইপ ফাটিয়ে যথেচ্ছ অবৈধ সংযোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জেনেছে। যার ফলে, কুলটির নানা জায়গায় জলসঙ্কট দেখা দিচ্ছে।
কুলটি পুরসভার জল দফতরের আধিকারিক পার্থ মণ্ডল জানান, পুর কর্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন এলাকায় সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য জলের কল বসানোর পাশাপাশি বাড়িতে-বাড়িতে সংযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই মতো প্রায় ৬৮০টি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছিল, গোটা এলাকায় প্রায় ১৩০০ সংযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু, যে পরিমাণ অবৈধ সংযোগ নেওয়া হয়েছে,তাতে নতুন করে আর বৈধ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বরাকরের ওই জল প্রকল্প থেকে কমপক্ষে আড়াই হাজার অবৈধ সংযোগ নেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক অমিতাভবাবু বলেন, “আমরা এই সব অবৈধ সংযোগ কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা না হলে শহরে সর্বত্র জলের সমবণ্টন সম্ভব হবে না।”
কুলটি পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরবোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জলের বৈধ সংযোগের জন্য ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। এখন যাঁরা অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন তাঁরা যদি সেটি বৈধ করে নিতে চান তবে প্রত্যেককে সেই টাকা দিতে হবে। তার সঙ্গে জরিমানা বাবদ আরও ২০ হাজার টাকা পুরসভায় জমা দিতে হবে। মহকুমাশাসক জানান, এই টাকায় বরাকরের জলপ্রকল্পটি আরও ভাল ভাবে দেখভাল করা সম্ভব হবে। আরও বেশি এলাকায় জল সরবরাহ করা যাবে। কিছুটা হলেও পানীয় জলের সঙ্কট মিটবে। পুরসভার জল দফতরের আধিকারিক পার্থবাবু জানান, বরাকরের প্রকল্পটির জন্য প্রতি মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে হয়। কর্মীদের বেতন-সহ মাসে অন্য খরচ রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু, জলের সংযোগ বাবদ যে টাকা মেলে তা দিয়ে প্রকল্পটির ন্যূনতম খরচ সামলানো যায় না। অবৈধ সংযোগের জেরে সব এলাকায় সমান ভাবে জলও বণ্টন করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে অবৈধ সংযোগ কাটা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy