জেলায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি নিয়োগ করতে চলেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, জেলায় তো বটেই, সারা রাজ্যের মধ্যেও এই প্রথম প্রশিক্ষত ডুবুরি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন বিভাগের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার জানান, অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০ জনকে নিয়ে তৈরি হবে উদ্ধারকারী দল। তাঁদের মধ্যেই থাকবেন ২০ জন ডুবুরি। তিনি বলেন, “জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রাথমিকভাবে ৭০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়েই তৈরি করা হবে ৫০ জনের মূল দল। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণের জন্য রাজ্য সরকার মোট ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন। সোমবার, ২৮ জুলাই থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ। চলবে আগামী ২৩ অগস্ট পর্যন্ত।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা স্তরের সঙ্গেই মহকুমা স্তরেও অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের আওতায় ‘কুইক রেসপন্স টিম’ তৈরি করার প্রস্তাব এসেছে। মহকুমা স্তরের দলেও ৫০ জন করে কর্মী থাকার কথা। জেলায় এত দিন প্রশিক্ষিত ডুবুরি দূরের কথা, সাধারণ ডুবুরিরও আকাল ছিল। ফলে কেউ জলে ডুবে যাওয়ার পরে তাঁকে উদ্ধার করতে কলকাতা থেকে ডুবুরি আনতে হয়। দুরত্বগত কারণে বেশির ভাগ সময়েই জীবিত কারওকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। বর্ধমানের কাঞ্চননগরের ডিভিসি সেচখালে এক বার ডুবে যাওয়া যুবকের দেহ উদ্ধার করতে না পেরে ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন কলকাতা থেকে আসা ডুবুরি দলের সদস্যরা। সে বার পুলিশকে গিয়ে ডুবুরিদের উদ্ধার করতে হয়। গত শনিবারই বুদবুদের একটি গ্রামে কুয়োতে মোবাইল ফোন কুড়োতে নেমে কুয়োর বিষাক্ত গ্যাসে মৃত হয়েছিল এক ব্যক্তির। তাঁর দেহ উদ্ধারে সমস্যায় পড়েছিল প্রশাসন। প্রথমে পুলিশ তার পরে রাজ্য সরকারের দমকল বিভাগ দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। শেষে সেনাবাহিনীর দমকল এসে দেহ উদ্ধার করে। যদি প্রশিক্ষিত ডুবুরি থাকত তাহলে এই সমস্যা হত না বলেই মত অভিজ্ঞ মহলের। জেলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দলে ডুবুরিরা থাকলে সেই সমস্যা কিছুটা হলেও মিটবে বলে শা করেছেন আধিকারিকরা।
কিন্তু পরিকাঠামো তৈরি না করে এই ডুবুরি দল তৈরি করে কী কোনও আদৌও কোনও লাভ হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, এই কাজে কী ধরণের সরঞ্জাম লাগবে সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। যত দিন ডুবুরি দলের নিজেদের সাজ-সরঞ্জাম না আসছে, ততদিন তাঁরা ইসিএল, দুর্গাপুর ইষ্পাত কারখানার মত সংস্থার বিপর্যয় মোকাবিল সংক্রান্ত সরঞ্জাম ধার নেওয়া হবে। জেলা বিপর্যয় ব্যাবস্থাপন আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম কাজ হল এই ২০জন ডুবুরিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। কারণ প্রশিক্ষণ না থাকলে ওঁদের পক্ষে সরঞ্জাম ব্যবহার করা সম্ভব হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy