Advertisement
০১ মে ২০২৪

জেশপের ভবিষ্যত জানতে চায় দুর্গাপুর

প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পরে দমদমের জেশপ কারখানা খুলে গিয়েছে শনিবার। পুজোর আগেই সাহাগঞ্জের ডানলপও খোলার আশ্বাস দিয়েছেন সংস্থার কর্ণধার পবন রুইয়া। কিন্তু দুর্গাপুরের কারখানা নিয়ে কোনও আশার কথা এখনও শোনা যায়নি তাঁর কাছ থেকে। ফলে, এই কারখানা আদৌ খুলবে কি না, সে নিয়ে সংশয় আরও বেড়েছে শহরবাসীর।

বন্ধ কারখানার গেট। নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ কারখানার গেট। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৯
Share: Save:

প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পরে দমদমের জেশপ কারখানা খুলে গিয়েছে শনিবার। পুজোর আগেই সাহাগঞ্জের ডানলপও খোলার আশ্বাস দিয়েছেন সংস্থার কর্ণধার পবন রুইয়া। কিন্তু দুর্গাপুরের কারখানা নিয়ে কোনও আশার কথা এখনও শোনা যায়নি তাঁর কাছ থেকে। ফলে, এই কারখানা আদৌ খুলবে কি না, সে নিয়ে সংশয় আরও বেড়েছে শহরবাসীর।

১৯৫৮ সালে দুর্গাপুরে জেশপ কারখানা চালু হয়। ফাউন্ড্রি, ক্রেন, রেলের বগি, রোলার তৈরি হত এই কারখানায়। প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সালে কারখানাটি অধিগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের ভারী শিল্প মন্ত্রক। বিভিন্ন কারণে নয়ের দশকের গোড়া থেকে রুগ্ণ হতে শুরু করে সংস্থাটি। পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় ১৯৯৯ সালে। চার বছর বন্ধ থাকার পরে ২০০৩ সালে প্ল্যান্ট সমেত কারখানার ১১৭ একর জমি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় কিনে নেয় রুইয়া গোষ্ঠী। রেলের বগি এবং কাপলিং তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তার পরে পাঁচ বছর কেটে যায়। উৎপাদন শুরুর কোনও উদ্যোগ হয়নি।

২০০৮ সালে রুইয়া গোষ্ঠী কারখানার জমির চরিত্র বদলের আর্জি জানান আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে। জমির একাংশে আবাসন প্রকল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল রুইয়া গোষ্ঠী। কিন্তু এডিডিএ-র বোর্ডসভায় সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। এডিডিএ জানিয়ে দেয়, শিল্পের জন্য নেওয়া কারখানা ও জমিতে শিল্পই গড়তে হবে। কোনও ভাবেই সেখানে আবাসন বা অন্য কিছু গড়া যাবে না। এ দিকে, কারখানায় উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় যন্ত্রাংশ ও কারখানা চত্বরের ভিতরের বড় বড় গাছ চুরি করে নিতে থাকে দুষ্কৃতীরা। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ ও জলের বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ ছিন্ন করে দেয় ডিপিএল। বর্তমানে কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা নিয়মিত বেতন পান না বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে দমদমের কারখানা নতুন করে খোলা এবং ডানলপের কারখানা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার খবরেও আশার আলো দেখছে না দুর্গাপুর।

শহরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী জানান, তৎকালীন বাম সরকার অনেক আশা নিয়ে রুইয়া গোষ্ঠীর হাতে কারখানা তুলে দেওয়ায় উদ্যোগী হয়েছিল। রাজ্য সরকার ও প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করেছিল। তিনি বলেন, “কারখানা খোলার ব্যাপারে কোনও সদর্থক উদ্যোগ নজরে আসেনি। ২০০৮ সালে বিধায়ক হিসেবে ওই সংস্থাকে চিঠি দিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছিল, সে বছরের শেষ দিকে কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে। কিন্তু তা হয়নি।” বেঙ্গল সুবার্বান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষ বলেন, “একই গোষ্ঠী তাদের অন্য কারখানাগুলি খোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে। অথচ, দুর্ভাগ্যের বিষয়, দুর্গাপুর নিয়ে কোনও কথা নেই।” এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা দুর্গাপুরের তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি দুর্গাপুরের জেশপ কারখানা খোলার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি, সদর্থক পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jessop adda asansol durgapur development authority
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE