Advertisement
E-Paper

জল চুরিতেই বাড়ছে সঙ্কট, মানছেন সরকারি কর্তারা

অবাধে চুরি হচ্ছে সরকারি জল। এত দিন এই অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বার এই কথা মেনে নিলেন সরকারি কর্তারা। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠকে উঠে এসেছে এই জল চুরির কথা। সরকারি কর্তারা কবুল করলেন, লাগামছাড়া অবৈধ জলের সংযোগের জন্যই জল সঙ্কটে ভুগছে আসানসোল।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০২
পাইপের জলে প্রতিদিনের কাজ। আসানসোলের ধাদকায় নিজস্ব চিত্র।

পাইপের জলে প্রতিদিনের কাজ। আসানসোলের ধাদকায় নিজস্ব চিত্র।

অবাধে চুরি হচ্ছে সরকারি জল।

এত দিন এই অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বার এই কথা মেনে নিলেন সরকারি কর্তারা। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠকে উঠে এসেছে এই জল চুরির কথা। সরকারি কর্তারা কবুল করলেন, লাগামছাড়া অবৈধ জলের সংযোগের জন্যই জল সঙ্কটে ভুগছে আসানসোল।

আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন এলাকা সারা বছর ধরেই জল সঙ্কটে ভোগে। বিভিন্ন সময় অনিয়মিত জল সরবরাহের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসনের কর্তারা জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। দিন কয়েক আগে আসানসোলে পুরসভায় আয়োজিত এক বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা শাসকের সামনেই জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য জল চুরি বন্ধের দাবি জানালেন সরকারি কর্তাদের একাংশ।

জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মাইথন জলাধার সংলগ্ন কল্যানেশ্বরী জল প্রকল্প ও বার্নপুরের কালাঝড়িয়ার জল প্রকল্প থেকে আসানসোলের বিভিন্ন এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। ওই বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা শাসক ওই দুই জল প্রকল্প থেকে মহকুমার সর্বত্র সমান ভাবে জল সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। বৈঠকে উঠে আসে কুলটির জল প্রকল্প শুরু না হওয়া ও আসানসোলের নতুন জল প্রকল্পটির কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে না পারার প্রসঙ্গ। এর পরেই জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কর্তারা জানান, কল্যানেশ্বরী জল প্রকল্প শুরু হয়েছিল প্রায় ৩৮ বছর আগে। ২০ বছর আগে শুরু হয় বার্নপুরের কালাঝড়িয়ায় জল প্রকল্প। সেই সময়ে যে জনসংখ্যার নিরিখে প্রকল্প দু’টি শুরু হয়েছিল তার তুলনায় বর্তমানে জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে। ফলে সব জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণ জল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় জলের পাইপ ফাটিয়ে দিয়ে ব্যাপক হারে জল চুরি করা হচ্ছে। এর ফলেই বিঘ্নিত হচ্ছে জল সরবরাহ।

জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইথন জলাধার সংলগ্ন কল্যানেশ্বরী জল প্রকল্পের মাধ্যমে বরাকর নদের জল শোধন করে সরবরাহ শুরু হয়। আবার বার্নপুরের কালাঝড়িয়ার প্রকল্পে দামোদর নদের জল তুলে শোধনের পরে সরবরাহ হয়। বর্তমানে গোটা আসানসোল মহকুমায় ২৯টি উচ্চ জলাধার আছে। নিয়ম অনুযায়ী, ওই জল প্রকল্প দু’টি থেকে পাইপের মাধ্যমে জল এই জলাধারগুলিতে আসে। তার পর সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ, জল প্রকল্প থেকে জলাধার পর্যন্ত যাওয়ার পাইপ ফাটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ ভাবে জলের সংযোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত জলাধার ভরছে না। এ ছাড়াও জলাধার থেকে যে পাইপ দিয়ে জল সরবরাহ করা হয় সেগুলিও ফাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে জল সরবরাহ।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “সালানপুর, দেন্দুয়া, চলবলপুর, কুলটি, বার্নপুর, গৌরান্ডি, পাঁচগাছিয়া, ধাদকা এলাকায় একাধিক মাঝারি শিল্প, কারখানা, ইটভাটা, পাথর ভাঙার কারখানায় জলের অবৈধ সংযোগ নেওয়া রয়েছে। এই বিষয়টি জনস্বাস্থ্য দফতরের দেখার কথা। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক নজরদারিতে খামতি রয়েছে।” ওই কর্তার আরও দাবি, আপাতত বিভিন্ন কারখানায় বেআইনি সংযোগ ছিন্ন করতে পারলেই সমস্যা অনেকটা মিটবে।

জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার সুকান্ত পাল বলেন, “আমি এই বিষয়ে কিছু বলব না।’’ তবে আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা শাসক সুমিত গুপ্তের আশ্বাস, কালীপুজোর পরই মহকুমার অবৈধ জলের সংযোগ কাটার অভিযানে নামা হবে।

water crisis sushanta banik asansol water theft
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy