কাজের নিরিখে রানিগঞ্জ ব্লকের মধ্যে সেরা পঞ্চায়েত হিসেবে নির্বাচিত হল আমরাসোঁতা পঞ্চায়েত। বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের নিরিখে বিডিও-র তৈরি করা মার্কশিট অনুযায়ী এই বাছাই হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, এই ব্লকের মধ্যে একমাত্র এই পঞ্চায়েতটিই সিপিএমের দখলে।
মঙ্গলবার জেলা পরিষদ সভাধিপতি দেবু টুডু রানিগঞ্জ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। জেলা সভাধিপতি জানান, রানিগঞ্জ খনি-শিল্পাঞ্চল এলাকার মধ্যে সব থেকে এগিয়ে। সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত ভাল ভাবে চালাতে গেলে দল নির্বিশেষে প্রত্যেক নির্বাচিত সদস্যকে কাজ করতে হবে। মানুষের কথা শুনতে হবে। মানুষের কথা না শুনলে মনে রাখতে হবে ৫ বছর পরে ক্ষুব্ধ মানুষ জবাব দেবেন ব্যালটে। ভুল হলে সংশোধন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মানুষ ভুলে যাননি।”
দেবুবাবু জানান, ব্লক স্তর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর যে উন্নয়নমুখী ভাবনা, তা সফল করতে হবে। যেখানে জলের সমস্যা রয়েছে, তা পঞ্চায়েতগুলিকে দ্রুত সমীক্ষা করে জল প্রকল্পের পরিকল্পনা জেলা পরিষদে পাঠাতে বলেন তিনি। অতিরিক্ত জেলাশাসক হৃষিকেশবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাম সংসদ, গ্রামসভা ও ব্লক সংসদের বৈঠক করতেই হবে। সাংবিধানিক রীতি মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করলেই সব বাধা কেটে যাবে।” এই সভায় ছিলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি প্রিয়া সূত্রধর, রানিগঞ্জের বিডিও পার্থপ্রতিম সরকার, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেনাপতি মণ্ডল প্রমুখ। ছ’টি পঞ্চাতেয়ের মধ্যে আমরাসোঁতার পরে পরপর রয়েছে বল্লভপুর, রতিবাটি, তিরাট, এগারা এবং জেমারি।
আমরাসোঁতার প্রথম হওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সেনাপতিবাবুর দাবি,“ওই এলাকা ছোট। তাই ওরা এগিয়ে।” তাঁর নিজের পঞ্চায়েত এলাকা এগারা পিছিয়ে থাকার কারণ হিসেবে তাঁর যুক্তি, “২০১১ সালের পর থেকে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত উন্নয়নের কাজ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। তাই পিছিয়েছি।” জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কর্তারা ব্লকে সব থেকে পিছিয়ে থাকা জেমারি পঞ্চায়েতের প্রধানকে ব্যর্থতার সমীক্ষা করে দেখতে বলেন। ওই এলাকার সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য স্মৃতি মাহাতোর দাবি, “দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের জন্য পিছিয়ে এলাকা।” প্রধান বলেন, “প্রমাণ করুন।” হৃষিকেশবাবু স্মৃতিদেবীকে বলেন, “আপনি প্রকাশ্যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন। লিখিত ভাবে বলুন। তদন্ত হবে।”
জেলা সভাধিপতি জানান, এ দিন তিনি আসানসোলে জেলা পরিষদের কার্যালয়ে বারাবনি এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান ও বাস্তুকারদের ডেকেছিলেন। সেখানে জলপ্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতে ‘ভিলেজ ওয়াটার স্যানিটেশন কমিটি’ গঠন করে এলাকা ভিত্তিক জলপ্রকল্প তৈরির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, “জেলা জুড়ে ৩০ শতাংশ পঞ্চায়েত ইতিমধ্যে প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব জমা দিয়ে দিয়েছে। বারাবনি ব্লক থেকে এ পর্যন্ত কোনও জলপ্রকল্পের প্রস্তাব আসেনি। তাই ওই ব্লককে দ্রুত জলপ্রকল্প জমা দিতে বলা হয়েছে।”