Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের দুই পঞ্চায়েত সদস্য-সহ সশস্ত্র ধৃত ৭

ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হওয়ার অভিযোগে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দু’জন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এক জন জেরায় নিজেকে পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের সহ-সভাপতি দাবি করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৩
বর্ধমান আদালতে তোলা হল ধৃত সাত জনকে। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান আদালতে তোলা হল ধৃত সাত জনকে। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হওয়ার অভিযোগে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দু’জন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এক জন জেরায় নিজেকে পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের সহ-সভাপতি দাবি করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য জানান, ধৃতদের মধ্যে কেউ আদৌ তাঁদের দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে মেহেদিবাগান এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে একটি গাড়িকে আটক করেন বর্ধমান থানার এসআই কবিরুদ্দিন খান। গাড়ি ও তার আরোহীদের তল্লাশি করে একটি পাইপগান, একটি দেশি ছ’ঘড়া রিভলবার ও চার রাউন্ড গুলি মেলে। বর্ধমান থানায় ডাকাতির চেষ্টার একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে পুলিশ। এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার এসআই শিউ সিংহ রবিবার বর্ধমান আদালতে দাবি করেন, ধৃতেরা কবুল করেছে, তারা বর্ধমান শহরের একটি পেট্র্রোল পাম্পে ডাকাতির চেষ্টায় ছিল। আগ্নেয়াস্ত্রগুলি তারা মঙ্গলকোটের একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে এনেছে বলেও ধৃতেরা জানিয়েছে। এই অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট তথ্যও ধৃতদের থেকে মিলেছে বলে তদন্তকারী অফিসারের দাবি।

এই গাড়িতে চড়েই অভিযুক্তেরা ঘোরাফেরা করছিলেন রাতে।
আটক করা গাড়িটির নম্বর জাল বলে বর্ধমান থানার পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।

পুলিশের অনুমান, যে গাড়িটিতে করে ওই সাত জন ঘোরাফেরা করছিল, সেটির নম্বরটি জাল। বর্ধমান থানা সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে ধৃতদের মধ্যে তিন জনের পরিচয় মেলে। তাকিউদ্দিন শেখ, সাহাবুদ্দিন শেখ ও শেখ নজরুল ইসলাম নামে ওই তিন জন নিজেদের তৃণমূল নেতা বলে উল্লেখ করেন। তাকিউদ্দিন মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েতের ও শেখ নজরুল ইসলাম গলসির পোতনা-পুরষা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। সাহাবুদ্দিন শেখ মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েত এলাকায় দলের সহ-সভাপতি বলে জেরার মুখে পুলিশের কাছে দাবি করেছে। পুলিশ অবশ্য এই তথ্য এ দিন আদালতকে জানায়নি। বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “আমরা তিন জনের একটি রাজনৈতিক পরিচয় পেয়েছি ঠিকই। কিন্তু এই পরিচয় ঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যেহেতু সেই কাজ করা হয়ে ওঠেনি, তাই আমরা আদালতকে তাঁদের এই পরিচয় জানাইনি। তদন্ত করে এই পরিচয় ঠিক প্রমাণিত হলে অবশ্যই তা আদালতের নজরে আনা হবে।”

আইসি জানান, তল্লাশির সময়ে তাকিউদ্দিন শেখ ও শেখ হাফিজুল ওরফে ফটিকের কাছ থেকে গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র মিলেছে। ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে এই দু’জনকে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ বাকিদের হেফাজতে না চাওয়ায় তাদের জেল-হাজতে পাঠায় আদালত। পুলিশ জানায়, তাকিউদ্দিন শেখের কাছ থেকে পাইপগান ও শেখ হাফিজুলের কাছ থেকে দেশি রিভলবার মেলায় মঙ্গলকোট থেকে অস্ত্র সরবরাহ সম্পর্কে বিশদে জানতে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শেখ হাফিজুলের বিরুদ্ধে আগেও কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

তৃণমূলের বর্ধমানের অন্যতম পর্যবেক্ষক অলোক দাস অবশ্য বলেন, “পুলিশ যেমন তদন্ত করছে, আমরাও তেমনই দলের তরফে ঘটনাটির তদন্ত করব। দেখতে হবে, ওই তিন জন সত্যি আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য বা পঞ্চায়েত এলাকার নেতা কি না। ভোটের মুখে দলের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে কেউ ষড়যন্ত্র করছে কি না, তা-ও দেখা হবে। তবে আইনকে তার নিজের পথে চলতে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তাই পুলিশকে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করতে বলব।”

dacoity burdwan arrest tmc panchayat members
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy