Advertisement
E-Paper

দিন কাটছে আটচালায়, দেখলেন নেতারা

কেউ রয়েছেন মন্দিরের চাতালে। কেউ গড়ে নিয়েছেন অস্থায়ী আটচালা। বাড়ি পুড়ে যাওয়া দলীয় কর্মী-সমর্থকদের দেখতে হাটগোবিন্দপুরের মালকিতা গ্রামে গিয়ে এ সবই দেখলেন সিপিএমের জেলা নেতা- নেত্রীরা। রবিবার রাতে গ্রামের স্কুলপাড়ায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের প্রায় ত্রিশটি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

রানা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০০:৩৮
পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধা। মালকিতা গ্রামে ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ।

পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধা। মালকিতা গ্রামে ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ।

কেউ রয়েছেন মন্দিরের চাতালে। কেউ গড়ে নিয়েছেন অস্থায়ী আটচালা।

বাড়ি পুড়ে যাওয়া দলীয় কর্মী-সমর্থকদের দেখতে হাটগোবিন্দপুরের মালকিতা গ্রামে গিয়ে এ সবই দেখলেন সিপিএমের জেলা নেতা- নেত্রীরা।

রবিবার রাতে গ্রামের স্কুলপাড়ায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের প্রায় ত্রিশটি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজয় মিছিল থেকে তৃণমূলের কয়েক জনের এক তরুণীকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বাধা দেওয়ার কারণেই এই ঘটনা ঘটে বলে সিপিএম কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। বাড়িতে আগুন লাগানোর পরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও বাধে। পুলিশ এই ঘটনায় সিপিএম এবং তৃণমূলের সাত জন করে মোট ১৪ জন সমর্থককে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার ওই এলাকায় যান জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রাজ্জাক মণ্ডল, জেলা কমিটির সদস্য আইনুল হক, সাইদুল হক-সহ দলের তিন বিধায়ক অপর্ণা সাহা, বাসুদেব খাঁ, চৌধুরী মহম্মদ হেদায়তুল্লাহ প্রমুখ।

আক্রান্ত কর্মীদের দুর্দশা দেখে অমলবাবু বলেন, “আমরা এই অত্যাচারের প্রতিবাদে রাস্তায় নামব। জেলা জুড়ে গণ আন্দোলনও গড়ে তুলব। যে ভাবে সেদিন তৃণমূলের বিজয় মিছিলের লোকেদের হাতে একটি মেয়ের শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে মানুষেরা নিজেদের বাড়ি-সহ সমস্ত কিছু হারালেন, তার নিন্দার ভাষা নেই। গরিব মানুষের বাড়ি পুড়িয়েই ওরা ক্ষান্ত হয়নি। বাড়ির জিনিসপত্র, চাল পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে। এই গ্রামে কী ঘটেছে তা শুনেছিলাম। কিন্তু আজ গ্রামে এসে বুঝলাম, কতটা অত্যাচার হয়েছে।” তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের ধরতে হবে।

অমলবাবু আরও জানান, দলের ত্রাণ তহবিল থেকে এই ঘরবাড়ি-সহ সর্বস্ব হারানো মানুষদের কিছু টাকা দেওয়া হবে। বুধবার দুপুরে স্কুলপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, পুড়ে যাওয়া বাড়িগুলির সামনে বাসিন্দাদের জটলা। অনেকেই দলের নেতাদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অমলবাবুরা ক্ষতিগ্রস্থদের সান্ত্বনা দিতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা কলেজ মালিক, আদুরি মালিক, জ্ঞানরঞ্জন মাঝিরা বলেন, “আমরা সিপিএম করি বলেই ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা।” পুষ্প মালিক নামে এক জন বলেন, “এই পাড়ার লোকেরা বরবারই সিপিএমকে ভোট দেন। তাই প্রতিশোধের শিকার হতে হয়েছে আমাদের।”

অমলবাবুষ শআইদুল হকেরা তাঁদের বলেন, “কিছু দিন আগে আমরা আমাদের নেতা কমল গায়েন ও প্রদীপ তা-কে হারিয়েছি। তাঁদের নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। আপনারা ভেঙে পড়বেন না। দল আপনাদের পাশে রয়েছে।”

যে কিশোরীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা থেকে গোটা ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ, এ দিন বর্ধমান উত্তর কেন্দ্রের বাম বিধায়ক অপর্ণা সাহা তার বাড়িতে যান। তার কাছে তিনি জানতে চান, ঘটনার দিন কী ঘটেছিল। কিশোরী জানায়, মিছিল থেকে এক দল মত্ত যুবক ঘরে ঢুকে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। সে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। প্রতিরোধের মুখে পড়ে প্রথমে ওই যুবকেরা পালিয়ে যায়। পরে আরও লোকজন নিয়ে এসে তাদের-সহ অন্য বাড়িতে আগুন লাগাতে শুরু করে।

তৃণমূল অবশ্য ওই গ্রামে কারও বাড়িতে আগুন লাগানোর কথা আগেই অস্বীকার করেছে। দলের নেতারা পাল্টা দাবি করেছিলেন, যাঁদের বাড়ি পুড়েছে, তাঁরা হালে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছিলেন। তাই সিপিএম-ই আগুন লাগিয়েছে। বর্ধমান থানার এক কর্তা যদিও এ দিন স্বীকার করেন, ওই গ্রামে তৃণমূলের কিছপ লোকজন যা ঘটিয়েছেন, তা নিন্দনীয়। আগুন লাগানোয় জড়িত অন্য অভিযুক্তদেরও খুঁজে বের করা হবে।

rana sengupta malkita cpm-tmc clash
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy