Advertisement
২৪ মে ২০২৪

দ্বিতীয় বিয়ের আসর থেকে বধূ নির্যাতনে গ্রেফতার বর

প্রথম বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শুরু হয়েছিল অশান্তি। দেনা পাওনা নিয়ে শুরু হওয়া সমস্যা গড়িয়েছিল বধূ নির্যাতনের মামলায়। তারপরে প্রথম স্ত্রীকে আড়ালে রেখেই চুপিচুপি বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছিল স্বামী। খবর পেয়ে সেই বিয়ের আসরে গিয়ে হাজির হন প্রথম স্ত্রী। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে হবু বরকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০১:১৬
Share: Save:

প্রথম বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শুরু হয়েছিল অশান্তি। দেনা পাওনা নিয়ে শুরু হওয়া সমস্যা গড়িয়েছিল বধূ নির্যাতনের মামলায়। তারপরে প্রথম স্ত্রীকে আড়ালে রেখেই চুপিচুপি বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছিল স্বামী। খবর পেয়ে সেই বিয়ের আসরে গিয়ে হাজির হন প্রথম স্ত্রী। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে হবু বরকে।

বৃহস্পতিবারের কালনার পশ্চিম সাহাপুর গ্রামে সোরগোল পড়ে যায় ওই ঘটনায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম সামিরুল শেখ। বাড়ি স্থানীয় খড়িনাল গ্রামে। তিনি ২০১৩ সালের ২০ মে বাড়ির অমতেই বিয়ে করেন ওই গ্রামেরই মেয়ে রেকসোনা খাতুনকে। রেকসোনা তখন দশম শ্রেণিতে পড়ত। বাড়িতে না মানায় বিয়ের পরে প্রথম কয়েক দিন হোটেল থাকতে শুরু করে তারা। বিয়ের পরেই রেকসোনার পরিবারের কাছে সামিরুলের পরিবারের লোক প্রচুর পরিমাণে নগদ টাকা ও গয়না দাবি করে বলে অভিযোগ। কিন্তু রেকসোনার পরিবার সেই দাবি মেটাতে অসমর্থ হন। তারপরে রেকসোনাকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। রেকসোনা তাঁর স্বামীকে নিয়ে নিজের বাপের বাড়ি চলে যান। কয়েক দিন থাকার পরে সামিরুল সোনার কাজ করতে কেরল চলে যায়। এরপরেই রেকসোনার পরিবার থেকে সামিরুল-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হয়। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফোনে যোগাযোগ ছিল। রেকসোনা জানায়, মাসখানেক আগে থেকে সামিরুলের ফোন ‘সুইচ অফ’ বলতে শুরু করে। তার পর থেকেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে রেকসোনা জানতে পারেন, ফের বিয়ে করছেন তাঁর স্বামী। পাত্রী হল পশ্চিম সাহাপুর গ্রামের হামিদা খাতুন। তারপরেই হাসিদার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। সামিরুলকে আটকে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয় গ্রামবাসীকে। দুপুরে গ্রামে পৌঁছে সামিরুলের সঙ্গে বিয়ের শংসাপত্র দেখান রেকসোনা। ঘরের মেয়ের এত বড় সর্বনাশের নায়ককে ঘরে আটকে রাখেন বাসিন্দারা। দু’চার ঘা পিঠে পড়েনি তাও নয়। হামিদাও বিয়ে করতে অস্বীকার করে। রাত এগারোটা নাগাদ পুলিশ গ্রেফতার করে সামিরুলকে।

হামিদার বাবা নওশাদ আলির অভিযোগ, “সামিরুল যে বিবাহিত তা জানতাম না। মেয়ের বিয়ের জন্য অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, সেই টাকা ফেরত দিতে হবে সামিরুলের পরিবারকে। ঘটনাস্থলে ছিলেন নান্দাই পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা সেলিম শেখ। তিনি বলেন, “ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লক্ষ টাকা সামিরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে হামিদার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম বিয়ে লুকিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বধূ নির্যাতনের মামলায়। যদি নতুন করে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয় তাহলে সেটি পুরনো মামলার সঙ্গে যোগ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE