Advertisement
E-Paper

দলের কোন্দলে দেড় মাস বন্ধ পঞ্চায়েত

প্রধান-উপপ্রধানের আকচা-আকচিতে দেড় মাস ধরে তালাবন্ধ পড়ে রয়েছে পঞ্চায়েত ভবন। আর এই দুর্নীতির অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে সমস্ত পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। ভাতারের আমারুন ১ পঞ্চায়েতের এই টালমাটাল দশায় বিশেষ কিছু করতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসনও।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০২
তালা ঝুলছে পঞ্চায়েত ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।

তালা ঝুলছে পঞ্চায়েত ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রধান-উপপ্রধানের আকচা-আকচিতে দেড় মাস ধরে তালাবন্ধ পড়ে রয়েছে পঞ্চায়েত ভবন। আর এই দুর্নীতির অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে সমস্ত পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

ভাতারের আমারুন ১ পঞ্চায়েতের এই টালমাটাল দশায় বিশেষ কিছু করতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসনও। ব্লক প্রশাসনের দাবি, আলোচনায় বসেও লাভ হচ্ছে না। আর পঞ্চায়েতের কর্মীরা বাধ্য হয়ে ব্লক অফিসে গিয়ে হাজিরা দিয়ে আসছেন। ভাতারের বিডিও প্রলয় মণ্ডল হতাশ গলায় বলেন, “মেটানো গেলে তো মিটিয়েই দেওয়া হতো। আমরা এখানকার সমস্যা রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত দফতরে জানিয়েছি।”

এই পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে ৬টি তৃণমূলের দখলে, বাকি তিনটি আসনের মধ্যে সিপিএম ১টি ও নির্দলেরা ২টি আসনে জয়ী হয়েছিল। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত গঠন হওয়ার পর থেকেই নানা ব্যাপারে প্রধান আমিরুন্নেসা বেগম ও উপপ্রধান বিনয় রায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগে রয়েছে। কিন্তু কি এমন আকচাআকচি যে দেড় মাসেও সুরাহা হচ্ছে না? তৃণমূলের উপপ্রধান গোষ্ঠীর অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ করছেন। দরপত্র না ডেকে ঠিকাদারদের একের পর কাজ দিচ্ছেন। এর বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন উপপ্রধান-সহ তৃণমূলের বাকি সদস্যরা। আবার প্রধান অনুগামীদের পাল্টা অভিযোগ, উপপ্রধান ও তাঁর দলবল দুর্নীতি করার জন্য চাপ দিচ্ছিল, প্রধান সেই চাপের কাছে মাথা নত করেননি বলেই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এ দিকে রাধানগর গ্রামে আমারুন ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই ভবনটি তালা বন্ধ থাকায় পঞ্চায়েত থেকে ন্যূনতম পরিষেবাও পাচ্ছেন না এলাকার সাধারণ মানুষ। বাসস্থানের শংসাপত্র কিংবা আয়ের শংসাপত্র পেতে গেলেও মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। বন্ধ পড়ে রয়েছে উন্নয়নমূলক পরিষেবাও। স্থানীয় বাসিন্দা গুল মহম্মদ, অনিতা দাসেরা বলেন, “কোনও প্রয়োজন হলে সাত-আট কিলোমিটার দূরে ব্লক দফতরে যেতে হচ্ছে। প্রধান ও উপপ্রধানের বখরার ভাগের জেরে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।”

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন উপপ্রধান। কিন্তু দলের চাপে অনাস্থা প্রস্তাবের দিন কোনও সদস্যই পঞ্চায়েত দফতরে হাজির হননি। পরে ২৭ জানুয়ারি পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় দু’পক্ষের বাগবিতণ্ডায় দফতর ভাঙচুড় হয়। তারপর থেকেই তালা ঝুলছে পঞ্চায়েত ভবনে। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিনয় রায়ের অভিযোগ, “দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধানের বিরুদ্ধে সবাই এককাট্টা। নর্দমা না করেই সেই টাকা উঠে গিয়েছে। এ ছাড়াও সদস্যদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন প্রধান। এ সব কারণেই এলাকার মানুষ আর প্রধানকে চাইছেন না।” এ দিকে প্রধানকে ফোন করা হলে নাম প্রকাশ না করতে চেয়ে পুরুষ কন্ঠে একজন বলেন, “সব ভিত্তিহীন অভিযোগ। প্রধান ফোনের কাছে নেই।” পরে আবার যোগাযোগ করা হলেও প্রধান ফোন ধরেননি। আর পঞ্চায়েত কর্মীদের দাবি, নিরাপত্তার অভাব রয়েছে, সে জন্য পঞ্চায়ের অফিসে গিয়ে কাজ করতে পারছেন না তাঁরা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বামাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দাবি, বিরোধী সদস্যদেরও পঞ্চায়েত দফতরে ঢুকতে দিত না তৃণমূল।

internal clash bhatar amarun saumen dutta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy