জেলা সম্মেলনে বিদায়ী সম্পাদক অমল হালদার। —নিজস্ব চিত্র।
শুধু ঘরোয়া বৈঠক নয়, নেতাদের রাস্তায় নামতে হবে। তৈরি করতে হবে বৃহত্তর বাম ঐক্য। অসংগঠিত শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সিটুর জেলা সম্মেলনের দ্বিতীয় তথা শেষ দিনে শ্যামল চক্রবর্তী থেকে অমল হালদার--সবার গলাতেই উঠে এল এই কথা। শেষ দিনে সাংগঠনিক পদে বেশ কিছু বদল হয়েছে। অজিত মুখোপাধ্যায়ের জায়গায় সিটুর বর্ধমান জেলা কমিটির নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এসেছেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বংশগোপাল চৌধুরী। অজিতবাবু প্রায় ১০ বছর সিটুর জেলা সম্পাদক পদে ছিলেন। ওয়ার্কিং কমিটি, জেলা কাউন্সিল ও কমিটির অন্যান্য পদেও বেশ কিছু নতুন মুখ আনা হয়েছে। তবে জেলা সভাপতি পদে থেকে গিয়েছেন বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী। সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর বংশগোপালবাবু বলেন, “নেতৃত্বের মধ্যে ভারসাম্যে রইল। সব ক্ষেত্রে আক্রান্ত মানুষের পাশে আমরা আরও বেশি করে থাকব।”
এ দিন গোড়া থেকেই সিটু নেতাদের গলায় ছিল আত্মসমালোচনার সুর। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, “অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সিটুর ঢিলেমি রয়েছে। হাজার হাজার অংসগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের কাছে আমরা যেতে পারছি না। অথচ তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বিশাল সুযোগ রয়েছে।” কর্মীদের সামনেই জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমল হালদারের ক্ষোভ, নেতারা রাস্তায় নামছেন না। ফলে মানুষ ভরসা পাচ্ছেন না। অমলবাবু বলেন, “শিল্পের জন্য হাঁটুন পদযাত্রায় এত শ্রমিক পরিবার যোগ দেবে আমরা ভাবিনি। কিন্তু আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম। তার ফল পেয়েছি।” এ দিন সম্মেলনে ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের নকশাল নেতা সোমনাথ চক্রবর্তী। তাঁকে পাশে বসিয়ে অমলবাবু বৃহত্তর বাম ঐক্যের পক্ষে সওয়াল করেন।
সিটুর সদস্যদের একাংশ বার বারই সংগঠনে নতুন মুখের জন্য সওয়াল করেছেন। সম্প্রতি সিপিএমের জেলা সম্মেলনেও উঠে এসেছিল এই দাবি। তারপর জেলা সিপিএমের মূল কমিটিতে বেশ কিছু নতুন মুখ নিয়ে আসা হয়। সিটুর নতুন কমিটিতেও এ বার নতুন মুখের সংখ্যা বেশি। এ দিন ১৪৭ জনের জেলা কাউন্সিল, ৭২ জনের ওয়ার্কিং কমিটি এবং ২৭ জন কর্মকর্তার নাম চূড়ান্ত করা হয়। তার মধ্যে নতুন মুখের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুর্গাপুরের পঙ্কজ রায় সরকার, বর্ধমানের সৌভিক চট্টরাজ, কাটোয়ার সুদীপ্ত বাগচি, মেমারির সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন পার্থ মুখোপাধ্যায়, আভাষ রায়চৌধুরী। নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন উত্তম শ্যাম, বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়।
জেলা সিপিএমের এক নেতার দাবি, ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন গণ সংগঠনগুলিকে চাঙ্গা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসাবে সিটুর সাংগঠনিক পদে এই রদবদল। ওই নেতার দাবি, এরপর ডিওয়াইএফের জেলা কমিটিতেও বদল আনা হবে। মাসখানেকের মধ্যেই বারাবনিতে ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলন রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy