Advertisement
E-Paper

নতুন পথে ব্যবসা বাড়ার আশায় শহর

চুক্তিমতো এনটিপিসি রেলকে টাকা দেওয়ার পরেই বর্ধমান-কাটোয়া লাইনের বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত গেজ পরিবর্তনের কাজ এগোনোর সম্ভবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেরই আশা, লাইনের কাজ শেষ হয়ে গেলে এলাকার আর্থসামাজিক পরিবেশ বদলে যাবে। এমনকী অন্তবর্তী বাজেটে ওই রেলপথের জন্য টাকা বরাদ্দ হবে বলেও তাঁদের আশা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৪ ০২:২৯
পাশাপাশি ন্যারোগেজ ও ব্রডগেজ। বলগোনার স্টেশনে এখনও দেখা যায় এ দৃশ্য। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

পাশাপাশি ন্যারোগেজ ও ব্রডগেজ। বলগোনার স্টেশনে এখনও দেখা যায় এ দৃশ্য। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

চুক্তিমতো এনটিপিসি রেলকে টাকা দেওয়ার পরেই বর্ধমান-কাটোয়া লাইনের বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত গেজ পরিবর্তনের কাজ এগোনোর সম্ভবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেরই আশা, লাইনের কাজ শেষ হয়ে গেলে এলাকার আর্থসামাজিক পরিবেশ বদলে যাবে। এমনকী অন্তবর্তী বাজেটে ওই রেলপথের জন্য টাকা বরাদ্দ হবে বলেও তাঁদের আশা।

জন্মলগ্ন থেকেই লোকসানে চলা এই রেলপথে একসময় ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পূর্বরেলের কর্তারা। তবে নিত্যযাত্রীদের চাপে পিছু হটতে হয়। নিত্যযাত্রীরা তো একসময় এই লাইনকে ‘বড় কষ্টের রেল’ বলেও ডাকতেন। রাজনৈতিক দল থেকে নিত্যযাত্রী সংগঠন বারবার ওই রেলপথকে ব্রডগেজে বদলের দাবি জানিয়েছেন। অবশেষে, ২০০৬ সালে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) সঙ্গে চুক্তির পরে রেলকে ওই লাইন ন্যারো গেজ থেকে ব্লডগেজে পরিবর্তনের কথা স্বীকার করে। ২০০৭ সালের ৩০ জুন কাটোয়াতে এসে তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। পরবর্তী সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমান থেকে বলগোনা পর্যন্ত গেজ পরিবর্তনের কাজের সূচনা করেন। আর মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বর্ধমান-বলগোনা ২৬ কিলোমিটার রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে ওই রেলপথে প্রতিদিন ২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে।

বাকি ২৭ কিলোমিটার রেলপথের গেজ পরিবর্তনের জন্য এনটিপিসি ১১২ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা দিয়েছে শোনার পরে নিত্যযাত্রী, ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই আশার আলো দেখছেন। রেল কর্তারাও মনে করেন, বর্ধমান-কাটোয়া ব্রডগেজ হয়ে গেলে রেলের কাছেও নতুন পথ খুলে যাবে। এমনিতেই কাটোয়াকে ঘিরে রেলের অনেকগুলো প্রকল্প চলছে, একদিকে আমোদপুর-কাটোয়া ব্রডগেজের কাজ চলছে, তেমনি কাটোয়া-ফরাক্কা ডবল লাইনের কাজও হচ্ছে। এক রেল কর্তার বক্তব্য, ওই কাজ শেষ হলে কাটোয়াকে ঘিরে অনেক ট্রেন তো চলবেই, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও ওই রেলপথ ব্যবহার করা যাবে। কাটোয়া মহকুমা ব্যবসায়ী সমতির সহ-সভাপতি সাধন দাস বলেন, “বাসে যাতায়াতের জন্য একটা বড় অংশের মানুষ আসেন না। রেলপথ চালু হলে তারা কাটোয়া আসবেন। শহরে মানুষ এলে প্রত্যক্ষভাবে ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে।” কাটোয়া থেকে বর্ধমানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন সিএমএস স্কুলের শিক্ষক সার্থক সাহা, কিংবা বর্ধমান থেকে প্রতিদিন কাটোয়া কলেজে পড়াতে আসেন গৌতম চৌধুরী। তাঁরা বলেন, “ব্রডগেজ হলে যাতায়াতে সময় অনেক কম লাগবে। অনেক সুবিধাও হবে। ছাত্রদেরও উচ্চশিক্ষার কোচিং নিতে সুবিধা হবে।” নিত্যযাত্রীরা জানান, ৫৩ কিলোমিটার এই পথের জন্য যাতায়াতে আড়াই ঘন্টার সময় লাগে। সেখানে ট্রেনে দেড় ঘন্টায় বর্ধমান চলে যাওয়া যাবে। বর্তমানে কাটোয়া থেকে বর্ধমানে বাসের ভাড়া ৩৫ টাকা। সেখানে রেলের ভাড়া ১৫ টাকা। গোপেশ্বর দে নামে এক ছাত্র বলেন, “আমাদের মতো ছাত্রদের কাছে কম খরচে যাতায়াত অনেক সুবিধাজনক।”

কাটোয়া-বর্ধমান রুটে প্রতিদিন ৮৮টি বাস চলে। ব্রডগেজ হলে বাস ব্যবসায়ীরা যে সমস্যায় পড়বেন তা মেনে নিচ্ছেন বাস মালিক সংগঠনের নেতা নারায়ণচন্দ্র সেন। তাঁর কথায়, “কাটোয়া বর্ধমান ব্রডগেজ হলে একটু সমস্যা তো হবেই। এই রুটের অনেক বাস উঠে যাবে। ৫ মিনিট অন্তর যেখানে বাস চলাচল করে, তখন একঘন্টা অন্তর চলবে।” তবে বাস ব্যবসায়ীদের একাংশ আবার জানাচ্ছেন, কিছু বাস উঠে যাবে ঠিকই তবে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য বাস-পরিষেবাও অনেক ভাল হবে।

narrow gage ntpc broad gage railway rail line
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy