টানা বৃষ্টিতে জল জমেছে শহরে। প্রতিবাদ মিছিল হল গামছা পরে।
হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাব। হাসপাতালের ভিতরে শুরু অনশন কর্মসূচি।
এসটিকেকে রোড বেহাল। শহরে যাতায়াতে সমস্যায় পড়ছেন মানুষ। প্রতিবাদে হল রাস্তা অবরোধ।
বছর ঘুরলেই পুরভোট। তার পরের বছরেই আবার বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে সংগঠন ও জনসংযোগ বাড়াতে ছোট-বড়-মেজো যে কোনও সমস্যাকেই এখন হাতিয়ার করছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের পরে স্থানীয় সব সমস্যা নিয়ে সরব হচ্ছে তারা। আদৌ কত জন তাঁদের সঙ্গে সামিল হবেন, এ কথা ভেবে গত ভোটের আগে পর্যন্ত যেখানে কোনও কর্মসূচি নিতে দ্বিধা করতেন বিজেপি নেতৃত্ব, সেখানে এখন যে কোনও সমস্যার ক্ষেত্রেই বিক্ষোভ-অবস্থান-স্মারকলিপি দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করছেন না তারা।
লোকসভা ভোটের আগে অবশ্য ছবিটা অনেকটাই উল্টো ছিল। কালনা শহরের দু’একটি ওয়ার্ড ছাড়া বিজেপির কর্মী-সমর্থকও তেমন ছিল না। ফলে ভোটের মুখে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে তেমন প্রচারও করা যায় নি। ভোটের দিন শহরের সমস্ত বুথে এজেন্টও দিতে পারেনি বিজেপি। অথচ ফল বেরোতে দেখা যায় প্রায় সব ওয়ার্ড থেকেই ভাল ভোট পেয়েছে তারা। এককথায়, নির্বাচনের পর থেকেই শহরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে জোরালো ভাবে উঠে আসে গেরুয়া বাহিনী। সাধারণ মানুষের পরিষেবা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়। মহকুমাশাসক, বিডিও-র কার্যালয়ে নানা প্রশাসনিক বৈঠকে নিয়মিত যোগ দেন বিজেপির নেতারা। আন্দোলনের পাশাপাশি রক্তদান শিবির, মেলায় স্টল দেওয়া ইত্যাদি জনসংযোগ মূলক কর্মসূচিতেও পা বাড়ায় বিজেপি। দলের জেলা সম্পাদকদের একজন তথা শহরের বাসিন্দা সুশান্ত পাণ্ডে বলেন, “দলে নতুন মুখ ক্রমশ বাড়ছে। যত দিন যাচ্ছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্দোলনের গতিও বাড়ছে। ছোটখাট সমস্যায় তড়িঘড়ি নেমে পরা তো আছেই, প্রতি ১৫ দিন অন্তর শহরের বড় সমস্যা নিয়েও আন্দোলনে নামা হচ্ছে। রেশন সংক্রান্ত সমস্যা, বহু বাসিন্দাদের মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসা, গরু পাচারের মতো সমস্যা নিয়েও খুব শীঘ্রই পথে নামা হবে।” সুশান্তবাবুর দাবি, লাগাতার আন্দোলন, কর্মসূচির ফলেই লোকবল ক্রমশ বাড়ছে।
২০১৫ সালের মে মাস মেয়াদ শেষ হচ্ছে কালনা পুরসভার। বিজেপির এক সূত্রের খবর, পুর-নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ঘর গোছানো শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড কমিটিও গড়া হয়েছে। অগস্টের মধ্যে বাকিগুলিও তৈরি করে নেওয়া হবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে কারা প্রার্থী হবেন তা নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা চলছে। বিজেপির কালনা নগর মণ্ডলের সভাপতি সঞ্জীব বাগচির বক্তব্য, “শহরে দল ক্রমশ বড় হচ্ছে। পুর-ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এলাকায় তাঁর পরিচিতি এবং সেবামূলক কাজে তাঁর কতখানি অবদান রয়েছে তা প্রাধ্যনা পাবে।” দলের জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিক জানান, শুধু কালনা নয় কাটোয়া পুরসভাতেও দলের ব্যাপক শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে। স্থানীয় নানা বিষয় নিয়ে মানুষের হয়ে লড়াইয়ে নেমেছে দল।
তবে বিজেপির লাগাতার কর্মসূচি ও তার জেরে শক্তিবৃদ্ধিকে আমল দিতে নারাজ কালনা পুরসভার পুরপ্রধান তথা কারনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তিনি বলেন, “এ শহরে কোনও দিনই বিজেপির সংগঠন বলে কিছু নেই। লোকসভা ভোটে মোদী-হাওয়াই ওরা কিছু ভোট পেয়েছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy