কালনায় লোক উৎসবে বাইল গান।
লোকশিল্পীদের উৎসাহ দিতে লোক উৎসব শুরু করল বর্ধমান জেলা তথ্য সংস্কৃতি বিভাগ। উৎসবের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে কালনা ১ ব্লক অফিস লাগোয়া মাঠ। শুক্রবার বিকেলে উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তবে সরকারি এই উৎসবের প্রচার সাধারণ মানুষ অবধি পৌঁছেছে কি না সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল প্রথম দিনের প্রায় ফাঁকা মাঠ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় প্রথম বার এই ধরণের উৎসব আয়োজন করা হল। উৎসবের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘উইকেন্ড ফোক ফেস্টিভ্যাল’। গ্রামীণ সংস্কৃতি ও পরিবেশ বেশি থাকার কারণেই প্রথমবার উৎসব আয়োজনের জন্য কালনাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। উৎসবে যোগ দিয়েছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাউল, ফকির, ভাটিয়ালি শিল্পী-সহ প্রায় ৫০০ জন লোকশিল্পী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “বাংলার লোকশিল্পীদের আর্থিক ভাবে সাবলম্বী করে তোলার জন্য উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। লোকশিল্পীদের চিহ্নিত করে সরকারি অনুষ্ঠানে সামিল করা হচ্ছে।” তিনি জানান, নথিভুক্ত লোকশিল্পীদের সরকার থেকে পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। সরকারি অনুষ্ঠান পিছু ১০০০ টাকা করে ভাতাও দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। কালনার লোক উৎসবেও লোকশিল্পীদের আবেদনপত্র নেওয়া হবে। স্বপনবাবুর দাবি, “সরকারের খাতায় লোকশিল্পী হিসেবে নাম নথিভুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০,০০০ আবেদন পত্র জমা পড়েছে।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের ছিলেন জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক মুনমুন হোড়, অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব বিশ্বাস ও হৃষিকেশ মোদী। কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ, পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়।
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এক কর্তা জানান, লোকগানের শিল্পীর সংখ্যা বেশি। তাই ছৌ নাচ, ঘোড়া নৃত্যর মতো লোক নাচের দলগুলিকে হয়তো দশ মিনিটের বেশি সময় দেওয়া যাবে না। অনুষ্ঠানে গান, নাচ ছাড়াও থাকছে আলোচনাসভা। সেখানে কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, অসংগঠিত শিল্পের শ্রমিকদের নানা সুবিধা-সহ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে গান বেঁধে গ্রামে গ্রামে প্রচারের জন্য বলা হবে। শুক্রবার শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে রবিবার পর্যন্ত। প্রতি দিন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টে ও বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দু’টি পর্যায়ে অনুষ্ঠান চলবে। প্রথম পর্যায়ে দূরের মহকুমা থেকে আসা শিল্পীদের সুযোগ দেওয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠান করবেন স্থানীয় শিল্পীরা।
আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গেই উৎসব মাঠে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি দফতরের স্টল। তবে প্রথম দিন উৎসব প্রাঙ্গন বেশ ফাঁকা ছিল। সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও বিশেষ চোখে পড়েনি। দর্শক না থাকায় হতাশ হয়েছেন লোকশিল্পীরা। তবে সরকারি কর্তাদের অবশ্য আশা, সপ্তাহের শেষে আজ, শনিবার ও রবিবার ছবিটা অনেকটাই বদলে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy