Advertisement
E-Paper

পুলিশের ভূমিকায় হতাশ, আদালতে যাচ্ছেন শিল্পপতি

তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় পুলিশ তৃণমূল কাউন্সিলর-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করলেও ভয় যাচ্ছে না সংস্থার কর্তা ও কর্মীদের। সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর রীতেশকুমার দ্বিবেদীর মতে, তাঁদের অভিযোগকে পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। তাই খুনের চেষ্টার মামলা করার পরিবর্তে কয়েকটি জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। ফলে তারা জামিনও পেয়ে যায়। কাল, সোমবার ওই তিন জনের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলার আবেদন জানাবেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২৮
এ ভাবেই মারা হয়েছিল রীতেশবাবুকে।  —নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই মারা হয়েছিল রীতেশবাবুকে। —নিজস্ব চিত্র

তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় পুলিশ তৃণমূল কাউন্সিলর-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করলেও ভয় যাচ্ছে না সংস্থার কর্তা ও কর্মীদের।

সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর রীতেশকুমার দ্বিবেদীর মতে, তাঁদের অভিযোগকে পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। তাই খুনের চেষ্টার মামলা করার পরিবর্তে কয়েকটি জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। ফলে তারা জামিনও পেয়ে যায়। কাল, সোমবার ওই তিন জনের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলার আবেদন জানাবেন তাঁরা।

কালীপুজোর আগের রাতে তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের ভিতরে আতসবাজি ফাটানো নিয়ে বচসার জেরে আক্রান্ত হন রীতেশবাবুর সংস্থার কর্মীরা। পরের দিন পুলিশ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর হিরা বাউরি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে। শনিবার রীতেশবাবু বলেন, “পুলিশের ভূমিকা নিয়েই আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা দেওয়া হয়নি। তাই তারা জামিন পেয়ে গিয়েছে।” যদিও আগের একটি ধর্ষণের চেষ্টার মামলায় তিন জনকে ১৪ দিন জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় না হওয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে এসে তারা প্রতিহিংসা নিতে পারে বলে রীতেশবাবুদের আশঙ্কা।

সে দিন রীতেশবাবুরা যে অভিযোগ করেছিলেন, তাতে খুনের চেষ্টার কথা সরাসরি লেখা হয়নি। কিন্তু তাঁর আইনজীবী আনন্দময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রীতেশবাবুর শরীরে জোরালো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে খুনের চেষ্টার ধারা দেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, “গুন্ডামির মামলায় অভিযুক্তরা জামিন পেয়েছে। এখন পুলিশ নতুন ধারা যোগ করতে পারবে না। তাই সোমবার দুর্গাপুর আদালতে নতুন করে অভিযোগ করা হবে।” রীতেশবাবু বলেন, “সুরাহা না হলে বিষয়টি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ই-মেল করব।”

অভিযুক্ত শাসকদলের কাউন্সিলর হওয়ায় কি পুলিশের উপরে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে? আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “কোনও চাপ নেই। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার ধারা দেওয়া হয়েছে। এমনকী পুরনো মামলাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরেও এমন প্রশ্ন ওঠা ঠিক নয়।” ফের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রসঙ্গে তাঁর আশ্বাস, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক সংলগ্ন এলাকায় রাতে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে পার্কের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীদের পাহারা এড়িয়ে কী ভাবে অভিযুক্তেরা ভিতরে ঢুকল, সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

শাসকদলের নেতারা কী বলছেন?

তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। দলের স্থানীয় কয়েক জন নেতাকে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের কাজকর্ম নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও হিরা বাউরির বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ এই প্রথম উঠছে না। মাল্টিপ্লেক্সে চড়াও হয়ে ছবির প্রদর্শন বন্ধ করিয়ে দেওয়া থেকে পানশালায় হামলা, তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে নিজের লোক নিয়োগের জন্য হুমকি, এমনকী ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে। কিন্তু দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এই ঘটনার পরে স্থানীয় স্তরে কিছু খোঁজখবর নেওয়া হলেও নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে তদন্ত কমিটি গড়া হয়নি।

রীতেশবাবুর আক্ষেপ, “ইস্পাতনগরীর মহিস্কাপুর রোডে আমি বড় হয়েছি। দুর্গাপুরেই কাজ করতে চাই। কিন্তু আমরা আতঙ্কে ভুগছি।” গত বছর কালীপুজোয় বড় অঙ্কের চাঁদার জন্যও হিরা তাঁদের হুমকি দিয়েছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমাদের সংস্থায় রাতের শিফটে কাজ হয়। পার্ক থেকে হেঁটে গিয়ে বাস ধরতে হয় কর্মীদের। যে ভাবে পার্কের ভিতরে হামলা হয়েছে, তাতে আমি ও কর্মীদের পরিবার আতঙ্কিত। প্রাণহানিও হতে পারত। পুলিশ যথেষ্ট গুরুত্ব দিলে আমাদের আদালতের দ্বারস্থ হতে হত না।”

durgapur it company police ritesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy