Advertisement
E-Paper

পকেটে অচল ডেবিট কার্ড ঢুকিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ

ডেবিট কার্ড হাতিয়ে নিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। শ্যামপুরের বাসিন্দা, মানিকচন্দ্র সরকার নামে ডিএসপির ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তবে এখনও কোনও কিনারা হয়নি। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব অবশ্য বলেন, “সংশ্লিষ্ট থানাকে দ্রুত উপযুক্ত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৬

ডেবিট কার্ড হাতিয়ে নিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। শ্যামপুরের বাসিন্দা, মানিকচন্দ্র সরকার নামে ডিএসপির ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তবে এখনও কোনও কিনারা হয়নি। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব অবশ্য বলেন, “সংশ্লিষ্ট থানাকে দ্রুত উপযুক্ত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।”

২০০৮ সালে ডিএসপি থেকে অবসর নেন মানিকবাবু। তাঁর স্ত্রী অর্চনাদেবী ক্যানসারে আক্রান্ত। দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া সেন মার্কেটের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে তাঁর। মানিকবাবুর দাবি, ২১ এপ্রিল একটি সঞ্চয় প্রকল্পের মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে ৩ লক্ষ টাকা ঢোকে। সেদিন মোট জমা ছিল ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৬৪৫ টাকা। এরপরে ২৪ মে তিনি ওই ব্যাঙ্কের শ্যামপুর শাখা সংলগ্ন এটিএম থেকে ৫ হাজার টাকা তোলেন। ৬ জুন ফের টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। পড়ে রয়েছে মাত্র ৯৯ টাকা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেন তিনি। ব্যাঙ্ক নথি দেখে জানায়, ২৪ মে থেকে ৪ জুনের মধ্যে দুর্গাপুর, আসানসোল এমনকি বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় এলাকা থেকেও দফায় দফায় সব টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তিনি বিষয়টি কোকওভেন থানায় জানান। তবে পুলিশ বা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কেউই বিষয়টি নিয়ে গা করেননি বলে মানিকবাবুর অভিযোগ। তাঁর চিন্তা একটাই, কী ভাবে স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ জোগাবেন।

ব্যাঙ্কের নথি থেকে জানা গিয়েছে, কখনও নগদ তোলা হয়েছে, কখনও আসানসোলের নানা গয়নার দোকান থেকে কেনাকাটি করা হয়েছে। কখনও হোটেল-রেস্তোঁরায় খাওয়ার বিলও মেটানো হয়েছে। কিন্তু তা হল কীভাবে? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, মানিকবাবুর ডেবিট কার্ডটি হাতিয়ে নিয়ে তাঁকে একটি অচল কার্ড দেয় দুষ্কৃতীরা। বয়স্ক মানিকবাবু তা বুঝতে পারেননি। তারপর সেই কার্ড দিয়েই টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু পিন নম্বর? মানিকবাবু জানান, ২৪ মে তিনি যখন টাকা তুলছিলেন তখন এটিএমের বাইরে জনা ছয়েক যুবক দাঁড়িয়েছিল। তিনি ঢোকার পরে এক যুবক সাহায্যের অছিলায় ভিতরে ঢোকে। মানিকবাবু তাকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু সে যায়নি। মানিকবাবু টাকা তোলার সময় তা বুঝতে পারেননি। পরে এটিএম থেকে বেরোনোর সময় দেখেন যুবকটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাঁর দাবি, বেরোনোর সময় ওই যুবকেরা কার্যত তাঁকে ঘিরে ধরে। তখনই কেউ তাঁর বুকপকেট থেকে ডেবিট কার্ডটি তুলে অচল কার্ড রেখে দেয় বলে মানিকবাবুর দাবি। তাঁর ছেলে মানবেন্দ্রবাবু বলেন, “বাবা ৬ জুন বারবার চেষ্টা করেও এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারছিলেন না। আমাদের বলায় দেখি, ওটা অন্য একজনের কার্ড। ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করা হলে ব্যাঙ্ক জানায়, কার্ডটি অচল।”

কিন্তু অভিযোগ নেওয়ার পরেও তদন্তে গড়িমসি করেছে কেন কোকওভেন থানার পুলিশ? পুলিশের দাবি, ওই দিন মানিকবাবুর কাছে জেনারেল ডায়েরি নেওয়া হয়। পরে পুলিশ যায় ব্যাঙ্কে সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে। কিন্তু যে ফুটেজ পাওয়া যায় তা অষ্পষ্ট। ফলে তদন্ত বিশেষ এগোয়নি। মঙ্গলবার অবশ্য এডিসিপি বলেন, “কোকওভেন থানাকে ওই জেনারেল ডায়েরিই এফআইআর হিসাবে গণ্য করে দ্রুত তদন্ত করতে বলা হয়েছে।” মানিকবাবুর আরও অভিযোগ, ওই এটিএমটিতে কোনও রক্ষীও ছিল না। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের জবাব, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

durgapur debit card fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy