Advertisement
E-Paper

ফের কি ভাসবে এলাকা, বর্ষায় আশঙ্কায় বাসিন্দারা

বছর এখনও ঘোরেনি। তাই দুর্ভোগের স্মৃতি মোছেনি। বর্ষা নামতেই দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। জল জমে আবার না গৃহবন্দি হয়ে পড়তে হয়, সেই আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। পুরসভার আশ্বাস, নিকাশি নালার সংস্কার করা হয়ে গিয়েছে আগেই। কিন্তু বাসিন্দাদের দাবি, শুধু নালা পরিষ্কারে কাজ হবে না, অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা নর্দমা নতুন ভাবে তৈরি করা না গেলে প্রবল বর্ষায় ফের ঘরবাড়ি ভাসবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০০:২৫
গত বছরের এই পরিস্থিতি এ বার আর হবে না, আশ্বাস দিচ্ছে পুরসভা।—ফাইল চিত্র।

গত বছরের এই পরিস্থিতি এ বার আর হবে না, আশ্বাস দিচ্ছে পুরসভা।—ফাইল চিত্র।

বছর এখনও ঘোরেনি। তাই দুর্ভোগের স্মৃতি মোছেনি। বর্ষা নামতেই দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। জল জমে আবার না গৃহবন্দি হয়ে পড়তে হয়, সেই আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। পুরসভার আশ্বাস, নিকাশি নালার সংস্কার করা হয়ে গিয়েছে আগেই। কিন্তু বাসিন্দাদের দাবি, শুধু নালা পরিষ্কারে কাজ হবে না, অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা নর্দমা নতুন ভাবে তৈরি করা না গেলে প্রবল বর্ষায় ফের ঘরবাড়ি ভাসবে।

গত বছর অক্টোবরে ঘণ্টা চারেকের বর্ষণে ভেসে গিয়েছিল শহরের বেনাচিতি, তামলা বস্তি, রায়ডাঙা, অর্জুনপুরের মতো কয়েটি এলাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেনাচিতির ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছিল সে বার। রামকৃষ্ণপল্লি, শ্রীনগরপল্লি, বিদ্যাসাগরপল্লি, আনন্দপল্লি-সহ বিভিন্ন এলাকা জলে ভেসেছিল। স্থানীয় স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল বাসিন্দাদের। একই পরিস্থিতি দেখা যায় ৫৪ ফুট এলাকা, রাঁচি কলোনিতেও। টানা বৃষ্টিতে ফুঁসতে শুরু করে তামলা নালা। ভেসে যায় মেনগেটের তামলা বস্তি-সহ ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা। ভেঙে পড়ে বহু মাটির ঘরবাড়ি। শহরের অন্য দিকে অঙ্গদপুরের বেশ কিছু অংশ, রায়ডাঙা, অর্জুনপুরের বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় স্থায়ী নিকাশি ব্যবস্থা বলে তেমন কিছু ছিল না। ফাঁকা জায়গা দিয়ে জল বয়ে যেত। তার পরে একের পর এক কারখানা গড়ে উঠেছে। কারখানার সীমানা পাঁচিল তুলে দেওয়ায় জল বয়ে যেতে বাধা পায়। তাই বেশি বৃষ্টি হলে জল দাঁড়িয়ে যায়।

গত বছরের পরিস্থিতির কথা মনে রেখে এ বার বর্ষার আগেই পুরসভা জরুরি ভিত্তিতে নদর্মা সাফ করার কাজ হাতে নেয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার নিয়মিত কর্মীদের পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মীদেরও নিকাশি ঠিক করার রাজে লাগানো হয়েছিল। একশো দিনের কাজের প্রকল্পেরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা জানান, প্লাস্টিকের প্যাকেট জমে-জমে নর্দমার জলধারণ ক্ষমতা কমে যায়। তাই নর্দমা থেকে প্লাস্টিক প্যাকেট তুলে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন নর্দমার সংযোগস্থল পরিষ্কার করা হয়েছে। তাঁরা জানান, নর্দমা সাফ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, অতীতে মাটির তলা দিয়ে যাওয়া নর্দমার ভিতর দিয়েই কিছু কিছু জায়গায় পানীয় জলের পাইপ লাইন, মোবাইলের লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে, সেই সমস্ত নর্দমার ধারণক্ষমতা কমে গিয়েছে। এক কর্মী বলেন, “সেই কারণে বৃষ্টি বেশি হলে নর্দমা দিয়ে জল দ্রুত না নামায় জল জমে যাচ্ছে সিটি সেন্টারের কিছু এলাকায়।”

বেনাচিতির বাসিন্দারা অবশ্য পুরসভার উদ্যোগে আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাঁদের দাবি, এমনিতেই বহু পাকা নর্দমা কারিগরি দিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ। বহু আগে সেগুলি গড়া হয়েছে। দিন-দিন নতুন নির্মাণ গড়ে উঠছে। ফলে, ফাঁকা অংশ কমে যাচ্ছে। রামকৃষ্ণপল্লি এলাকার বাসিন্দা দিলীপ বড়ুয়ার কথায়, “শুধু নর্দমা সাফ করলে সমস্যা মিটবে না। নর্দমাগুলির জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারিগরি ত্রুটিমুক্ত করতে হবে।” পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি পরিমল অগস্তি জানান, বেশ কিছু জায়গায় এডিডিএ, ডিপিএলের জলেই লাইন থেকে শুরু করে বেসরকারি মোবাইল সংস্থার সংযোগ লাইন, সব গিয়েছে নর্দমার ভিতর দিয়ে। ফলে জলধারণ ক্ষমতা কমেছে। নর্দমা সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় প্লাস্টিক প্যাকেট আটকে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির আধিকারিকেরা পরিদর্শন করে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

নর্দমা সাফ করার সঙ্গে সঙ্গে নিকাশি ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত করার উদ্যোগও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থার একটি পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। সেটি অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।”

durgapur monsoon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy