Advertisement
২৪ মে ২০২৪

বাবুল কাকাকে খুঁজতে ছোটদের পাঠায় তৃণমূল

আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ‘নিখোঁজ ডায়েরি’র ঘটনায় রাজনীতির রং এড়ানো গেল না। বিজেপি-র অভিযোগ, এ কাজ তৃণমূলের এবং এ ব্যাপারে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতাকে ‘চিহ্নিত’ও করেছে তারা। তাদের ‘বাবুল কাকা’ হারিয়ে গিয়েছে বলে বুধবার নিমচা ফাঁড়িতে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল যে পড়ুয়ারা, বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরই বাবা-মায়েরা এসে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে জানিয়ে দিলেনএর পিছনে রয়েছে রাজ্যের শাসকদলের নেতা-কর্মীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৪ ০২:২৮
Share: Save:

আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ‘নিখোঁজ ডায়েরি’র ঘটনায় রাজনীতির রং এড়ানো গেল না।

বিজেপি-র অভিযোগ, এ কাজ তৃণমূলের এবং এ ব্যাপারে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতাকে ‘চিহ্নিত’ও করেছে তারা।

তাদের ‘বাবুল কাকা’ হারিয়ে গিয়েছে বলে বুধবার নিমচা ফাঁড়িতে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল যে পড়ুয়ারা, বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরই বাবা-মায়েরা এসে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে জানিয়ে দিলেনএর পিছনে রয়েছে রাজ্যের শাসকদলের নেতা-কর্মীরা।

জে কে নগরের প্রাথমিক স্কুলের প্রবীর, অর্ণ কিংবা লক্ষ্মী রুইদাসের মতো জনা দশেক বালককে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে তাদের হাত দিয়েই ওই নিখোঁজ ডায়েরির কপি পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সন্দীপ ঘোষাল। এ দিন নিমচা ফাঁড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এমনই অভিযোগ করেছেন প্রবীর ও লক্ষ্মী রুইদাসের অভিভাবকেরা। অণর্র্ রুইদাসের মা সোনালিদেবী বলেন, “আমাদের ছেলেগুলোকে আইসক্রিম খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে এই ধরনের কাজ করিয়েছে ওই সন্দীপ। রাজনীতিতে কেউ এ ভাবে বাচ্চাদের ব্যবহার করে?” এ ব্যাপারে তাঁরা ওই ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন। তবে পুলিশ সেই স্মারকলিপির কোনও ‘রিসিভ কপি’ অভিভাবকদের হাতে দেয়নি বলে অভিযোগ।

আসানসোল কমিশনারেট-এর কোনও কর্তাই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি। তবে কমিশনারেট-এর এক পদস্থ কর্তা অবশ্য বলেন, “শাসক দলের চাপে পড়েই পুলিশকে ওই নিখোঁজ ডায়েরি নিতে হয়েছিল বলে শুনেছি। এখন বিজেপি আন্দোলন শুরু করলে তা সামালও দিতে হবে তাদেরই।”

তৃণমূল কর্মী সন্দীপ অবশ্য ওই অভিভাবকদের অভিযোগ শুনে বলছেন, “আমার এত সময় নেই যে এমন শিশুসুলভ কাজ করতে যাব।”

কে এই সন্দীপ? দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সন্দীপ আদপে তৃণমূলের জে কে নগর পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি তথা জে কে নগরের প্রাথমিক স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য অভয় উপাধ্যায়ের অনুগামী। ওই পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই শাসক দলের কার্যালয়। দিনভর সেখানেই থাকেন অভয়বাবু। তার অনুগামী সন্দীপও সামনের চায়ের দোকানে ‘দিবারাত্র’ আড্ডা মারেন বলেই ওই অভিভাবকদের দাবি।

অভয়বাবু আবার আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান জিতেন তিওয়ারির ঘনিষ্ঠ বলে দলীয় সূত্রে খবর। তাহলে কি এই ঘটনার পিছনে জিতেনবাবুরই প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে? নির্বাচনের আগে আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যানই বাবুলের বিরুদ্ধে মদ্যপান করে ধর্মস্থানে যাওয়ার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

এ ব্যাপারে জিতেনবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আবার আমায় জড়ানো কেন। আমি কিছুই বলব না।” প্রায় একই সুরে অভয় উপাধ্যায়ও বলেন, “আমি তো বিষয়টার বিন্দুবিসর্গই জানি না।” তবে এ ব্যাপারে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না তিনি। বলেন, “দেখুন এ হয়তো তাদের সাংসদের প্রচারের বিশেষ কোনও প্রক্রিয়া।”

বিজেপি-র বর্ধমান জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকার অবশ্য জানান, ঘটনার প্রতিবাদে এ দিনই রানিগঞ্জে মিছিল করার কথা ছিল তাঁদের। তবে আপাতত তা স্থগিত রাখা হয়েছে। কেন? নির্মল বলেন, “বাবুলের ইচ্ছে এই ধরনের মামুলি ঘটনাকে গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল। তার ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতেই আমরা আপাতত বড় কোনও আন্দোলনে যাচ্ছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

babul supriyo kids asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE