বকেয়া মেটানোর দাবিতে বুধবার থেকে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেছেন কুলটি পুরসভার ঠিকাদারেরা। পুরসভা ভবনের মূল দরজার সামনেই শুরু হয়েছে এই অবস্থান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের তরফে ইতিবাচক পদক্ষেপ না হলে আমরণ অনশন কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে তাঁদের দাবি। প্রশাসনের কর্তারা বকেয়া মেটানো নিয়ে কোনও আশ্বাস না দিলেও প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় দ্রুত বকেয়া মিটে যাবে বলে দাবি করেছেন।
‘ঠিকাদার সমন্বয় কমিটি’র অভিযোগ, কুলটি পুরসভায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৪০ জন ঠিকাদার আছেন। তাঁদের প্রায় ১৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। গত এক বছর ধরে তাঁরা টাকা পাচ্ছেন না। ঠিকাদারদের পক্ষে সতীর্থ সান্যাল বলেন, “আমরা তত্কালীন পুরপ্রধানের কাছে বারবার আবেদন করেও টাকা পাইনি। পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পরে প্রশাসককেও বিষয়টি জানিয়েছি। কোনও ফল হয়নি। তাই এই অবস্থানে বসতে হল।” ঠিকাদারেরা জানান, সামনে উত্সবের মরসুম। পাওনাদারদের টাকা না মেটাতে পারায় তাঁরা তিষ্ঠোতে দিচ্ছেন না।
এ দিকে ঠিকাদারদের এই বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে এ দিন অবস্থান মঞ্চে হাজির হন প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পুরবোর্ড এত দিন পাওনা মেটায়নি কেন, সে প্রশ্নে উজ্জ্বলবাবুর বক্তব্য, “সরকারের কাছে পুরসভার পাওনা রয়েছে প্রায় সাত কোটি টাকা। সেই টাকা আমাদের আমলে আসেনি। এলে মেটাতে পারতাম। তবে এখন আমি রাজ্যের পুর ও নগোরন্নয়োন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সেই টাকা পাঠানোর অনুরোধ করেছি। দ্রুত তা চলে আসবে। ঠিকাদারদের বকেয়া মিটে যাবে।”
ঠিকাদারদের বড় অঙ্কের বকেয়ার জন্য আবার কার্যত পুরপ্রধানের দিকেই আঙুল তুলেছেন উপ-পুরপ্রধান বাচ্চু রায়। তিনি বলেন, “পরিকল্পনাহীন ভাবে কাজ করানোর জন্যই ঠিকাদারেরা ফেঁসে গিয়েছেন। বোর্ডসভায় অনুমতি না নিয়েই বহু কাজ করানো হয়েছে।” ঠিকাদারদের সব কাজের বিশদ তদন্ত করার দাবিও উঠেছে। উজ্জ্বলবাবু অবশ্য এ সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ঠিকাদারদের বকেয়া মেটানো নিয়ে কোনও আশার কথা শোনা যায়নি প্রশাসনের তরফেও। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন, ঠিকা কাজগুলি ঠিক নিয়ম মেনে হয়েছে কি না, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দেখতে হবে। সেই কাগজপত্র পরীক্ষা করার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”