বহু চেষ্টার পর আসানসোল স্টেডিয়ামের জমির দলিলের খোঁজ মিলল। সেই সরকারি নথি বলছে, আসানসোল স্টেডিয়ামের মালিক রাজ্য সরকার। তবে ক্রীড়া দফতর থেকে নয়। দলিলটি পাওয়া গিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে।
সম্প্রতি রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতর আসানসোল স্টেডিয়ামের সংস্কার ও উন্নয়ণের জন্য প্রায় চার কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। সেই টাকা খরচের আগে ক্রীড়া দফতর থেকে স্টেডিয়াম কমিটির কাছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) চাওয়া হয়েছিল। কারণ ক্রীড়া দফতরের ধারণা ছিল আসানসোল স্টেডিয়ামের জমিটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন। যদিও স্টেডিয়াম কমিটির কর্তারা জানান, মাঠটি আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হলেও ১৯৮৭ সালে রাজ্য সরকার সেটি কিনে নিয়েছিল। বিষয়টি জানিয়ে স্টেডিয়াম কমিটি ক্রীড়া দফতরকে পাল্টা চিঠি দেয়। কিন্তু সেই জমি কেনাবাচার কোনও প্রমাণ মিলছিল না। জমির দলিলের খোঁজ না মেলায় স্টেডিয়াম সংস্কার শুরু করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই সময় অচলাবস্থা কাটাতে এগিয়ে আসেন স্টেডিয়াম কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি খোঁজখবর করার পর প্রতিরক্ষা দফতর থেকে মাঠের দলিলটি পাওয়া যায়। মলয়বাবু বলেন, “রাজ্য সরকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থেকে স্টেডিয়ামের জমি কিনেছিল। সেই জমির দলিল সরকারি দফতরে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছ থেকে মালিকানা সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছি।” মন্ত্রীর আশ্বাস, আর কোনও সমস্যা নেই। এ বার মাঠ উন্নয়নের কাজ দ্রুত এগোবে।
আসানসোল মহকুমায় আসানসোল স্টেডিয়াম ছাড়া কোনও সরকারি স্টেডিয়াম নেই। বর্তমানে এখানে মহকুমার প্রথম ও সুপার ডিভিশনের ফুটবল লিগের খেলা হয়। এছাড়াও হয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। কিন্তু স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো বেহাল থাকায় মাঠে দর্শক প্রায় হয় না বললেই চলে। মাঠের অবস্থাও ভালো নয়। ফলে দীর্ঘদিন আসানসোল স্টেডিয়ামে ভাল মানের প্রদর্শনী ফুটবল অথবা ক্রিকেটের আয়োজন করা যায়নি। এই অবস্থায় স্টেডিয়ামের সংস্কার ও উন্নয়ণের জন্য সরকারি টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু দলিলের খোঁজ না মেলায় সেই টাকা ফেরত যেতে বসেছিল। দলিল পাওয়ার খবর পাওয়ার পরেই আসানসোলের ক্রীড়া মহলে খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার স্টেডিয়াম কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। স্টেডিয়াম কমিটির সম্পাদক অমল সরকার জানান, সরকারি অনুদানের টাকা দ্রুত নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্টেডিয়ামের খোলনলচে বদলে ফেলা হবে। তার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, মাঠের একদিকে পাঁচিল তোলা হবে। একটি সাজঘর তৈরি করা হবে। স্টেডিয়াম কমিটি সূত্রে খবর, আগামী মরসুমে ভাল মানের দল এনে প্রদর্শনী ফুটবল খেলার আয়োজন করা হবে।