Advertisement
E-Paper

রুগ্ণ শিল্প বাঁচাতে চেষ্টা কোথায়, জিজ্ঞাসা সিটুর

মুখ্যমন্ত্রীর ভুরিভুরি প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিটু। বুধবার মাটি উৎসবে ও বৃহস্পতিবার আসানসোল বণিকসভা আয়োজিত শিল্প-বাণিজ্য মেলায় রাজ্যের উন্নয়ন ও শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ নিয়ে নানা আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। সে সব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সিটু নেতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১৮
দুর্গাপুরের খয়রাসোল সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সিটুর মিছিল।  —নিজস্ব চিত্র

দুর্গাপুরের খয়রাসোল সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সিটুর মিছিল। —নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর ভুরিভুরি প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল সিটু। বুধবার মাটি উৎসবে ও বৃহস্পতিবার আসানসোল বণিকসভা আয়োজিত শিল্প-বাণিজ্য মেলায় রাজ্যের উন্নয়ন ও শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ নিয়ে নানা আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। সে সব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সিটু নেতারা।

বৃহস্পতিবার সিটুর জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী দাবি করেন, “গত তিন বছরে নতুন শিল্প আসেনি। তোলাবাজি-সিন্ডিকেটের দাপটে ও বাজারের অভাবে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উপযুক্ত জমি নীতি না থাকায় কিছু শিল্পের সম্প্রসারণ থমকে আছে। এমন প্রেক্ষিতে ঘটা করে মেলা করে কী হবে?”

বুধবার মাটি উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এই রাজ্য দেশের মধ্যে সব থেকে ভাল করছে। সিটুর দাবি, জেলায় ১০৪টি ক্ষুদ্র-মাঝারি বেসরকারি ইস্পাত কারখানা আছে। তার মধ্যে ৩১টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও। কাজ হারিয়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। বিনয়েন্দ্রকিশোরবাবুর বক্তব্য, “এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী এমন দাবি করেন? তা ছাড়া, এই সরকারের আমলে একটিও নতুন শিল্প এখনও পর্যন্ত নজরে আসেনি।” সিটুর আরও অভিযোগ, রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দেড়-দুই দশক ধরে কাজ করে আসা প্রায় সাড়ে তিন হাজার ঠিকা শ্রমিককে ডিএসপি থেকে ছাড়িয়ে দিয়ে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন নিজের লোক ঢুকিয়েছে। রাজ্যপালের কাছে দরবার করেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। সংগঠনের জেলা সভাপতি বলেন, “হাজার-হাজার মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অথচ, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষণে-ক্ষণে লক্ষ-লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি বিলিয়ে চলেছেন।”

সিটুর অভিযোগ, ১৯৯৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির একটি ফ্যাক্স বার্তা দেখিয়ে দাবি করেছিলেন, জেলার রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দুর্গাপুরের এমএএমসি, বিওজিএল এবং আসানসোলের সাইকেল কর্পোরেশন কারখানা বন্ধ হবে না। কিন্তু তিনটি কারখানাই বন্ধ হয়ে যায় তার কয়েক বছরের মধ্যে। এ দিন বিনয়েন্দ্রকিশোরবাবু বলেন, “বাম আমলে এমএএমসি চালু করার উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকারের সদর্থক উদ্যোগের অভাবে তা থমকে গিয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী পেটোয়া শিল্পপতিদের নিয়ে শিল্প-বৈঠক করেন। নতুন শিল্প তো দূর, তাঁদের বর্তমান শিল্পের রুগ্ণ দশা ঘোচাতেও কোনও উদ্যোগ নেই। আসানসোলের বাণিজ্য মেলাও তেমনই এক ‘চমক’ বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, “বাস্তব পরিস্থিতি থেকে চোখ ঘোরাতেই এ ভাবে ‘চমক’ দিতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। অথচ, শিল্পের বাস্তব সমস্যা দূর করার ব্যাপারে তাঁর কোনও চেষ্টা নজরে আসে না।”

শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সিটুর সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, বাম আমলে জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলনের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে একের পর এক কারখানা। বর্তমান রাজ্য সরকার সেই পরিস্থিতি থেকে রাজ্যকে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি প্রভাতবাবুর। তিনি বলেন, “রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে এ ভাবে হাতের নাগালে পাওয়ার কথা বাম আমলে কেউ ভাবতেই পারতেন না। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শিল্পের পরিবেশ আগের থেকে অনেক ভাল হয়েছে।”

durgapur citu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy