Advertisement
E-Paper

রাস্তা আটকে পুজো চলবে না, বলল পুলিশ

রাস্তা আটকে আর পুজো করা চলবে না, এমনকী গেট, আলোকসজ্জার জন্যও রাস্তা ব্যবহার করা যাবে না বলে শহরের পুজো কমিটিগুলিকে সাফ জানিয়ে দিল পুলিশ। শনিবার বিকেলে উদয়চাঁদ গ্রন্থাগারে বর্ধমান শহরের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ।

রানা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩৭
বাদামতলরা রাস্তায় পড়ে মণ্ডপ গড়ার বাঁশ। নিজস্ব চিত্র।

বাদামতলরা রাস্তায় পড়ে মণ্ডপ গড়ার বাঁশ। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা আটকে আর পুজো করা চলবে না, এমনকী গেট, আলোকসজ্জার জন্যও রাস্তা ব্যবহার করা যাবে না বলে শহরের পুজো কমিটিগুলিকে সাফ জানিয়ে দিল পুলিশ।

শনিবার বিকেলে উদয়চাঁদ গ্রন্থাগারে বর্ধমান শহরের পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ। তিনি বলেন, “পুজোর চার দিন রাস্তাঘাট যানজট মুক্ত রাখতে রাস্তা জুড়ে প্যান্ডেল, আলোক প্রদর্শনী, দোকান এমনকী তোরণ তৈরি করা যাবে না। এ ব্যাপারে শহরের পুজো সমন্বয় কমিটিকে দায়িত্ব নিতে হবে।” পুজো কমিটির কর্তারা ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন বলেও তাঁর দাবি।

গত কয়েক বছরে পুজোর চারদিন শহরের মানুষের সঙ্গে আশপাশের গ্রাম থেকে হাজারো মানুষের ভিড় রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার মধ্যে রাস্তা জুড়ে তোরণ, আলোকসজ্জা, মণ্ডপে বিপুল জনস্রোত সামলাতে কালঘাম ছুটে যেত পুলিশের। অনেক সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুজো কমিটির সদস্যেরাও ভিড় সামলাতেন পুলিশের পাশাপাশি। কিন্তু শহরের রাস্তাগুলি যদি প্যান্ডেল বা তোরণে অবরুদ্ধ না হয়, তাহলেই ভিড় সামলাতে বেগ পেতে হয় না বলে পুলিশের দাবি।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, শহরের অনেক জায়গায় ইতিমধ্যেই রাস্তা জুড়ে তোরণ, মণ্ডপ গনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বাদামতলায় রাস্তা আটকে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। বর্ধমানের বীরহাটা ফাঁড়ির পাশে একটি পুজো কমিটিও বছর বছর আস্ত একটি সেতু আটকে পুজো করে চলেছে। এ বারও কী এসব চলবে? এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “বাদামতলার পুজোটি দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গায় হচ্ছে। ওই এলাকায় পুজো করার মতো অন্য জায়গাও নেই। কিন্তু বীরহাটার পুজো কমিটি যদি প্রতি বারের মতো এ বারও বীরহাটা পুরনো সেতু আটকে দেয়, তাহলে সমস্যা হবে। কারণ এই মূহুর্তে শহরের কোথাও বড় বাস ঢোকে না, একমাত্র বীরহাটা ছাড়া। তাই ওখানে নতুন ও পুরনো সেতু একটানা খোলা না থাকলে এলাকা পুরোপুরি যানজটের কবলে চলে যাবে।” ওই পুজো কমিটিদু’টির সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলা হবে বলেও জানান তিনি।

বৈঠকে অভিযোগ ওঠে, কিছু পুজো কমিটি নিজেদের পুজোর মাহাত্ম্য প্রচারে মণ্ডপে ঢোকার লাইনে বাইরে থেকে লোক ঢুকিয়ে ভিড় বাড়ায়। এতে মানুষের হয়রানি বাড়ে। নামী পুজোগুলি দেখে বাড়ি ফিরতে আরও বেশি সময় লাগে। এসডিপিওর দাবি, “মণ্ডপমুখী লাইন জ্যাম করতে পুজো কমিটিগুলিকে নিষেধ করা হয়েছে। তাও পুজোর দিনগুলিতে এ ধরণের কিছু হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর রাখা হবে।”

বৈঠকে হাজির ছিলেন মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি, দমকলের কর্তারাও। দমকলের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, মণ্ডপে আগুন লাগা ঠেকাতে এ বার পুজো কমিটিগুলি যেন বিশেষ কয়েকটি রাসায়নিকে চুবনো কাপড় দিয়ে মণ্ডপ বানান। তাহলে দৈবাৎ আগুন লাগলেও তা ছড়াবে না। শুধু ধোঁয়া দেখা যাবে। তবে এই প্রস্তাব মানতে পুজো কমিটিগুলি তেমন গা করেনি। এক পুজো কমিটির কর্তার কথায়, “মণ্ডপ তৈরি করার কাজ তো ডেকরটরের। এই ব্যাপারে আমাদের আর কি করার আছে?”

তবে রাস্তা আটকে শহরের যে নামী পুজোগুলি হচ্ছে বলে অভিযোগ, তার অন্যতম বাদামতলা সর্বজনীনের সম্পাদক রাজেশ সাউই শহরের পুজো সমন্বয় কমিটির সম্পাদক। পুজোর দিনে শহরকে যানজট মুক্ত রাখার দায়িত্ব এসডিপিও দিয়েছেন রাজেশবাবুদেরই। নির্দেশ কতটা পালিত হবে, সে প্রশ্নের উত্তরে রাজেশবাবু বলেন, “রাস্তা আটকে পুজো করার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই। পুজোর সময় আমাদের প্রচুর সেচ্ছাসেবক থাকেন যাতে বাদামতলায় সাধারণ পথচারিরা সমস্যায় না পড়েন। ৬৪ বছর ধরে ওই পুজো এখানে হচ্ছে। তখন তো ফাঁকা মাঠ ছিল। পরে সংস্কৃতি লোকমঞ্চ, পিচের রাস্তা ইত্যাদি হয়েছে। কিন্তু পুজোর জায়গা তো আর বাড়েনি।”

rana sengupta durga puja road block
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy