একটি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করলেন ভাতারের আমারুন গ্রামের বাসিন্দা মহেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমান সিজেএম আদালতে দায়ের করা অভিযোগে ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জানান, মোটা অঙ্কের সুদের লোভ দেখিয়ে মেসার্স অ্যাগ্রো ইণ্ডিয়া লিমিটেড নামে ওই সংস্থা কোটি কোটি টাকা তুলেছে। সারদা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরে গত ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি ওই সংস্থার কর্মীরা বর্ধমান শহরের মুচিপাড়ার অবস্থিত তাদের অফিসটিও বন্ধ করে দেয়। পরের দিন সংস্থার তরফে একটি দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে তারা সমস্ত গ্রাহকের টাকা শোধ করে দেবে। কিন্তু বাস্তবে তা না ঘটায় বৃহস্পতিবার ওই মামলা দায়ের করেন মহেন্দ্রবাবু। চিটফান্ডের কর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি করেছেন তিনি। সিজেএম সেলিম আনসারি বর্ধমান থানার পুলিশকে ওই ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মহেন্দ্রনাথবাবু তাঁর অভিযোগে প্রায় আট আমানতকারীর নাম দিয়েছেন। তাঁর দাবি, সকলেই ওই লগ্নি সংস্থায় প্রচুর টাকা লগ্নি করে প্রতারিত হয়েছেন। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন তিনি। সঞ্চিত কিছু টাকা রেখেছিলেন ব্যাঙ্কে। আচমকা একদিন তাঁর সঙ্গে ওই সংস্থার মুচিপাড়া শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শিশির দাসের পরিচয় হয়। তিনি এবং ওই সংস্থার আরও দুই কর্তা রাজদীপ সাধু ও শুভাশিস চক্রবর্তী তাঁকে তাঁদের সংস্থায় টাকা রাখলে বিপুল পরিমাণ সুদের লোভ দেখান। ভরসা করে দু’দফায় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ওই সংস্থায় বিভিন্ন প্রকল্পে তিনি লগ্নি করেন বলে তাঁর দাবি। পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গেও ওই সংস্থার আধিকারিকদের পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। তাঁরাও সাধ্যমতো টাকা জমা করেন। মহেন্দ্রবাবুর দাবি, সব মিলিয়ে ওই আটজন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা আমানত হিসেবে জমা দিয়েছিলেন।
মহেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে সংবাদপত্রে লেখালেখি শুরু হতে ওই সংস্থাটি তাদের মুচিপাড়ার অফিস বন্ধ করে দেয়। সংবাদপত্রে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে টাকা ফেরতের কথা বলা হলেও, সেই ব্যাপারে সংস্থাটি কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। এরপরেই ওই লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে বর্ধমানে শহরের যে সব জায়গায় ওই সংস্থার কর্তারা থাকতেন, সেখানে গিয়ে শুক্রবার তাঁদের কোনও খোঁজ মেলেনি। স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁদের সেখানে দেখা যাচ্ছে না। অভিযোগকারীর আইনজীবী চন্দ্রনাথ তা বলেন, “প্রায় প্রতিদিনই আদালতে বিভিন্ন চিটফান্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আদালত পুলিশকে ওই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও, পুলিশি তদন্ত চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে।” এই সুযোগে যে ক’জন কর্তা এলাকায় ছিলেন তাঁরাও পালিয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁর দাবি।
তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আদালতের নির্দেশ পেলেই পুলিশ সংশ্লিষ্ট চিটফান্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছে। তবে ওই প্রতারক সংস্থাগুলির কর্তারা অনেক আগেই পালিয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁদের খোঁজ পুলিশ পাচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy