Advertisement
১৯ মে ২০২৪

শান্তির দলত্যাগে আকাশ থেকে পড়লেন কর্মীরা

গত দিন কয়েক ধরে সকলেই প্রায় ব্যস্ত ছিলেন দলনেত্রীর কর্মিসভার প্রস্তুতিতে। অধিকাংশ নেতা-কর্মীই তাই শুক্রবার সকালের আগে খবরটা জানতেন না। এ দিন যখন জানলেন, এক জেলা পরিষদ সদস্য দল ছাড়তে চলেছেন, সে নিয়ে দিনভর রীতিমতো চাপানউতোর চলল তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে। তৃণমূল নেত্রী যে দিন জেলাতেই কর্মিসভা করছেন, সে দিনই কলকাতায় গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিলেন কালনা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদে সদস্য হওয়া শান্তি চাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

গত দিন কয়েক ধরে সকলেই প্রায় ব্যস্ত ছিলেন দলনেত্রীর কর্মিসভার প্রস্তুতিতে। অধিকাংশ নেতা-কর্মীই তাই শুক্রবার সকালের আগে খবরটা জানতেন না। এ দিন যখন জানলেন, এক জেলা পরিষদ সদস্য দল ছাড়তে চলেছেন, সে নিয়ে দিনভর রীতিমতো চাপানউতোর চলল তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে।

তৃণমূল নেত্রী যে দিন জেলাতেই কর্মিসভা করছেন, সে দিনই কলকাতায় গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিলেন কালনা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদে সদস্য হওয়া শান্তি চাল। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছিলেন, দলের কাজকর্মে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাই দল ছাড়তে চেয়ে শীর্ষ নেতাদের চিঠি পাঠিয়েছেন। যদিও তৃণমূলের রাজ্য নেতারা চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেননি। তবে অন্য কোনও দলে যাচ্ছেন কি না, সে ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি শান্তিবাবু। এ দিন সকালে খবর প্রকাশ্যে আসতেই অনেকেই শান্তিবাবুকে ফোন করতে থাকেন। কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। জেলা তৃণমূলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীই ছিলেন দুর্গাপুরে। দলের একটি সূত্রে জানা যায়, সেখানেও এ নিয়ে আলোচনা হয়। বেলা বাড়তে খবর আসে, শান্তিবাবু বিজেপি-তে যোগ দিতে চলেছেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “উনি কিছু জানাননি। সকালে খবরটা জানার পরে এক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম। তবে ওঁর ফোনে সাড়া মেলেনি।”

গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। একটি অংশ মনে করছে, শান্তিবাবুর মতো পুরনো কর্মীর দল ছাড়া ভাল লক্ষণ নয়। এই অংশের দাবি, কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকাকালীন শান্তিবাবুর বিরুদ্ধে কখনও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। জেলা পরিষদ সদস্য হওয়ার পরে তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তবে সেই ঘটনায় শান্তিবাবুকে হেনস্থার পাল্টা একটি অভিযোগও হয়। কালনার এক তৃণমূল নেতার আশঙ্কা, “বিরোধীরা যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারেনি, তেমন নেতার দলত্যাগে কর্মীদের উপরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।” দলের অপর অংশ অবশ্য বলছে, শান্তিবাবু দক্ষ সংগঠক ছিলেন না। তাঁর দলবদল তেমন ক্ষতি করতে পারবে না। পূর্বস্থলীর এক নেতা যেমন বলেন, “ওঁর সঙ্গে তেমন লোকবল ছিল বলে শুনিনি। তাই এই ঘটনার আদৌ প্রভাব পড়বে কি না, সন্দেহ আছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ সাফ বলছেন, “লোকসভা, বিধানসভা ভোটে যাঁর বুথে দল পিছিয়ে পড়ে, তিনি দল ছাড়ায় আর কী প্রভাব পড়বে!”

শান্তিবাবু অবশ্য এ সব নিয়ে আর মাথা ঘামাতে নারাজ। তিনি বলেন, “নতুন দলে যোগ দিয়ে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে কাজ করতে চাই।” বিজেপি-র জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিকের দাবি, “এর আগে এই জেলায় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা আমাদের দলে এসেছেন। কিন্তু জেলা পরিষদের কোনও সদস্য প্রথম এলেন। শান্তিবাবুর যোগদান অনেককে পথ দেখাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc bjp kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE