Advertisement
E-Paper

‘সোল’ দিয়ে মুশকিল আসান আসানসোলে, বার্তা বাবুলের

আসানসোল ‘আসান’ (সহজ) নয় জানেন, নিজেই বলছেন বাবুল সুপ্রিয়। তাই সেই আসনে জিততে তাঁর ভরসা, নিজের অন্তরাত্মার (সোল) উপরেই। চৈত্রের চড়া রোদে মঙ্গলবার বার্নপুরের সম্প্রীতি প্রেক্ষাগৃহের সামনে থিকথিকে ভিড়। পরপর তিনটি গাড়ি এসে দাঁড়াতেই হাততালি-শিসের বন্যা। সামনের গাড়ি থেকে বেরিয়ে জনতার গর্জন শুনে থমকে দাঁড়াল কালো জামা-ধূসর ট্রাউজার্স পরা চেহারাটা।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০২:০১
অন্ডালে প্রচারে বাবুল সুপ্রিয়। মঙ্গলবার ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।

অন্ডালে প্রচারে বাবুল সুপ্রিয়। মঙ্গলবার ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।

আসানসোল ‘আসান’ (সহজ) নয় জানেন, নিজেই বলছেন বাবুল সুপ্রিয়। তাই সেই আসনে জিততে তাঁর ভরসা, নিজের অন্তরাত্মার (সোল) উপরেই।

চৈত্রের চড়া রোদে মঙ্গলবার বার্নপুরের সম্প্রীতি প্রেক্ষাগৃহের সামনে থিকথিকে ভিড়। পরপর তিনটি গাড়ি এসে দাঁড়াতেই হাততালি-শিসের বন্যা। সামনের গাড়ি থেকে বেরিয়ে জনতার গর্জন শুনে থমকে দাঁড়াল কালো জামা-ধূসর ট্রাউজার্স পরা চেহারাটা। তার পরেই ভিড় ঠেলে ঢুকে গেল ভিতরে। আসানসোলে পৌঁছে এত লোক দেখে আপ্লুত বাবুল (সুপ্রিয় বড়াল) বললেন, “আসানসোলে কোনও কিছু আসান নয়। ‘সোল’ দিয়ে সব মুশকিল আসান করব।”

প্রার্থী হিসেবে এ দিনই প্রথম আসানসোলে এলেন বাবুল। তিনটি গাড়িতে করে দলেন নেতা-কর্মীদের নিয়ে কলকাতা থেকে পৌঁছন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। মাঝে অন্ডালে দলের নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন তাঁরা। এমনিতে বিজেপি-র কিছু কর্মী ছাড়া লোকজন বিশেষ ছিল না সেখানে। তবে বাবুল এসেছেন শুনে জড়ো হন হাজার খানেক মানুষ। কার্যালয়ের উদ্বোধন সেরে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে পড়েছিলেন বাবুল। কিন্তু ছেঁকে ধরে জনতা। আব্দার মেনে বেরিয়ে আসতে হয় তাঁকে। অনেক বার হাত মেলানো, ছবি তোলানোর পরে ছাড়া পেলেন।

আসানসোলে পৌঁছে বাবুলের গাড়ি ছোটে ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে। ফুল-ফলের ডালা হাতে বাবুলকে মন্দিরে ঢুকতে দেখে হকচকিয়ে যান পুজো দিতে আসা লোকজন। অঞ্জলি দিয়ে বাবুল যখন মন্দির থেকে বেরিয়ে আসছেন, বাইরে বেশ ভিড়। বাবুলকে দেখে কেউ জড়িয়ে ধরলেন, কেউ ছুড়ে দিলেন মালা। ঘিরে ধরে দু’কলি গান গাওয়ার আবেদনও উঠল। বাবুল গেয়ে উঠলেন, “কুছ তো লোগ কহেঙ্গে / লোগোকা কাম হ্যায় কহেনা।” তার পরে গাড়িতে উঠে চলে যান হোটেলে। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বার্নপুরে কর্মিসভায় যখন পৌঁছলেন, হাজার আসনের প্রেক্ষাগৃহে তখন দু’হাজারের ভিড়।

আসানসোলের ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী
বাবুল সুপ্রিয়। মঙ্গলবার ছবি তুলেছেন শৈলেন সরকার।

তিনি যে রাজনীতির লোক নন, এ দিন বারবার সে কথা জানান বাবুল। তবে তাঁর দাবি, “আমি অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভক্ত। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব রয়েছে। যে ভাবে তিনি গুজরাতে শিল্পে উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে আসানসোলেও একই রকম উন্নয়ন হবে।”

এই কেন্দ্রে তাঁর বিরুদ্ধে এক দিকে ১৪ বছরের সাংসদ সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরী। অন্য দিকে, তৃণমূলের শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন। বাবুল অবশ্য বলছেন, “বিপক্ষ প্রার্থী কতটা হেভিওয়েট, তা নিয়ে ভাবি না। একমাত্র প্রতিপক্ষ এখানকার অনুন্নয়ন, মানুষের দীর্ঘ দিনের না মেটা চাহিদা।” সাংসদ হলে মাসে চার দিন এখানে থাকবেন, বাকি সময় দিল্লিতে থেকে আসানসোলের দাবি-দাওয়া তুলে ধরবেন বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় কাউকে প্রার্থী না করায় শুরুতে দলের একাংশের মান-অভিমান হয়েছিল, সে কথা স্বীকার করেন দলের জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকার। তবে তাঁর দাবি, “সে সব এখন অতীত। একজোট হয়ে লড়াইয়ে নেমেছি। প্রার্থীকে জেতাতেই হবে।”

এ দিন বাবুলকে দেখে উৎসাহী আসানসোলের বিজেপি কর্মীরাও। তাঁরা বলছেন, “এমন চনমনে প্রার্থীই তো দরকার ছিল।”

সম্প্রীতি প্রেক্ষাগৃহ ছেড়ে বেরনোর আগে বাবুল গেয়ে উঠলেন, “কহো না প্যায়ার হ্যায়...।”

(সহ-প্রতিবেদন: নীলোৎপল রায়চৌধুরী)

nilatpal roychowdhury sushanta banik asansol babul supriyo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy