Advertisement
০৫ মে ২০২৪
এইচএফসিএল

সরকারি উদ্যোগে কারখানা চালুর দাবি, চিঠি সাংসদের

বেসরকারি নয়, সরকারি উদ্যোগে দুর্গাপুর সার কারখানা খোলার দাবি জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তপন সেন। দেশের আটটি বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানার মধ্যে তিনটি সরকারি এবং বাকি চারটি বেসরকারি উদ্যোগে খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

বন্ধ কারখানা। নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ কারখানা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

বেসরকারি নয়, সরকারি উদ্যোগে দুর্গাপুর সার কারখানা খোলার দাবি জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তপন সেন। দেশের আটটি বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানার মধ্যে তিনটি সরকারি এবং বাকি চারটি বেসরকারি উদ্যোগে খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সার প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সিটুর সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ তপনবাবু দাবি করেছেন, দুর্গাপুরের পাশেই রয়েছে কয়লা খনি। তাই দুর্গাপুরের কারখানাটি কয়লা ভিত্তিক সার কারখানা হিসেবে সরকারি উদ্যোগে খোলার ব্যবস্থা করা হোক।

তত্‌কালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী ১৯৬৫ সালে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও সার মন্ত্রকের অধীনস্থ দুর্গাপুর সার কারখানার শিলান্যাস করেন। প্রায় ছ’শো একর এলাকায় কারখানা এবং চারশো একর জায়গায় কর্মীদের জন্য টাউনশিপ গড়ে ওঠে। নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৭৩ সালে। পরের বছর থেকে ইউরিয়া সার উত্‌পাদন শুরু হয়। নয়ের দশকের গোড়া থেকে কারখানা রুগ্‌ণ হতে শুরু করে। কাঁচামাল হিসেবে ন্যাপথা ব্যবহার করা হত। ন্যাপথা ব্যবহার করে ইউরিয়া উত্‌পাদনের খরচ বাড়ায় বিদেশ থেকে কম দামে ইউরিয়া আমদানি শুরু করে কেন্দ্র। ১৯৯৮ সালে উত্‌পাদন একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। কারখানা চলে যায় বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশন (বিআইএফআর)-এর অধীনে। ২০০৩ সালে কারখানার ১১২৫ জন শ্রমিক-কর্মী স্বেচ্ছাবসর নেন। পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় কারখানা।

তার পর থেকেই কারখানা পুনরায় চালুর দাবি জানাতে শুরু করে সিপিএম। শেষ পর্যন্ত অর্থনীতি বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি ২০১১ সালে দুর্গাপুর সার কারখানার পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে সায় দেয়। ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ তত্‌কালীন সার প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত জেনা সংসদে জানান, কারখানা পুনরায় চালুর উদ্দেশে ড্রাফট রিহ্যাবিলেশন স্কিমস (ডিআরএস) জমা দেওয়া হয়েছে বিআইএফআর-এর কাছে। তারা তা যাচাই করে দেখার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর বিআইএফআর সর্বশেষ ঘোষণায় জানায়, চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও আসেনি। কেন্দ্রে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ফের সরব হয় সিপিএম। সাংসদ তপনবাবু ১৮ জুলাই রাজ্যসভায় নতুন সার প্রতিমন্ত্রী নিহাল চাঁদকে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানোর আর্জি জানান। মন্ত্রী জানান, দেশে এমন আটটি কারখানা রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি সরকারি উদ্যোগে খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি পাঁচটি খোলার জন্য নিলাম করে বেসরকারি উদ্যোগ আহ্বান করা হবে। তার মধ্যে রয়েছে দুর্গাপুরের কারখানাটি। সরকারি উদ্যোগ কিছুটা এগোনোর পরেই বেসরকারি উদ্যোগে কারখানা খোলার বিষয়টি হাতে নেওয়া হবে বলে মন্ত্রী জানান।

সম্প্রতি তপনবাবু মন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। সার মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে দুর্গাপুর ও হলদিয়ায় দু’টি বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা রয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের মাধ্যমে ইউরিয়া তৈরির পরিকাঠামো রয়েছে দু’টি কারখানায়। কয়েক বছর আগে হাজিরা-বিজাপুর-জগদীশপুর গ্যাস পাইপলাইনটি প্রায় আটশো কিলোমিটার সম্প্রসারণ করে হলদিয়া পর্যন্ত আনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে গ্যাস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (গেইল)। কিন্তু সেই প্রস্তাব কবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিশ্চিত নয়। তপনবাবু জানান, দুর্গাপুরের পাশেই খনি অঞ্চল। ফলে সহজেই কয়লা পাওয়া যাবে। তা ছাড়া রাজ্যে দু’টি বন্ধ সার কারখানা রয়েছে। তাই দুর্গাপুরের কারখানাটি কয়লাভিত্তিক সার কারখানা হিসেবে সরকারি উদ্যোগে খোলার ব্যবস্থা করা হোক, দাবি তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

factory open up demand durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE