এই সব বাস নিয়েই উঠেছে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
যাত্রী স্বাচ্ছ্যন্দের কথা ভেবে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নামানো হয়েছিল জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের (জেএনএনইউআরএম) বাস। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের (এসবিএসটিসি) উদ্যোগে সেগুলি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহণের জন্য চালানোর কথা। কিন্তু, তা না করে প্রকল্পের এই বাস একাধিক সরকারি সংস্থায় লিজে খাটানো হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছেন নাগরিকেরা। যদিও বর্ধমান জেলায় বিভিন্ন রুটে শীঘ্রই প্রায় ১০০টি সিটি বাস চালানো হবে বলে এসবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ২০১০ সালে বেশ কয়েকটি জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের বাস এসেছিল। কথা ছিল, সেগুলি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দুই শহরের বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহণের জন্য চালাবে এসবিএসটিসি। বছরখানেক চালানোও হয়। কিন্তু তার পরে আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, সরকারের যাত্রী স্বাচ্ছ্যন্দের ভাবনা শিকেয় উঠেছে। এই দুই মহকুমা, বিশেষ করে আসানসোলে সাধারণ নাগরিকদের এক মাত্র ভরসা বেসরকারি যাত্রিবাহী বাস। নাগরিকদের অভিযোগ, বেশির ভাগ রুটের বাসেই যাত্রী স্বাচ্ছ্যন্দের ন্যূনতম দিকগুলি নজর দেওয়া হয় না। এই পরিস্থিতিতে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের বাস রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন শহরবাসী। বাসগুলি রাস্তায় চলতে শুরু করায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বছরখানেক পরে বাসগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী পরিবহণ পরিষেবা আবার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। এখানেই শেষ নয়, প্রকল্পের ওই ঝাঁ চকচকে বাসগুলি একাধিক রাষ্ট্রীয় সংস্থায় লিজে চালানো হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ইসিএলে বেশ কয়েকটি বাস চলছে। সংস্থার কর্মীদের অফিসে ও তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে আনা-নেওয়ার কাজে বাসগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান তমোনাশ ঘোষ জানান, সংস্থাকে লাভজনক করে তোলার জন্য কিছু বাস রাষ্ট্রীয় সংস্থায় লিজে চালানো হচ্ছে।
নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অন্তর্গত প্রকল্পের এই বাসগুলি বিভিন্ন রুটে চালানোর জন্য এলেও কেন সেগুলি রাষ্ট্রীয় সংস্থায় লিজে ভাড়া খাটানো হচ্ছে? এসবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু বাস এলাকার বেকার ছেলেদের লিজে চালানোর জন্য দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা বাসগুলি লাভজনক ভাবে বাস চালাতে পারছিলেন না। ব্যাঙ্কের ঋণও ঠিক মতো শোধ করতে পারছিলেন না। তাই বাসগুলি তাঁদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। ব্যবসাকে লাভজনক করার জন্য রুটের পরিবর্তে সেগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় লিজে খাটানো হচ্ছে।
সম্প্রতি কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের ১০২টি বাস দেওয়া হচ্ছে এসবিএসটিসি-কে। আসানসোল-দুর্গাপুরের বিভিন্ন রুটেও এই রকম কিছু বাস চালানো হোক বলে দাবি তুলেছেন যাত্রীরা। এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তমোনাশবাবু বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ঠিক করেছি, এই দুই শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু রুটে নতূন বাস নামানো হবে।” তিনি আরও জানান, এই জেলায় আসানসোল ও বর্ধমান শহর সবচেয়ে ঘিঞ্জি এলাকা। এখানে লম্বা বাস চালাতে অসুবিধা হয়। তাই এই দুই শহর ও দুর্গাপুরের জন্য ছোট সিটি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শীঘ্রই সেই ধরনের বাস পথে নামবে বলে তাঁর আশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy