Advertisement
১৮ মে ২০২৪

৬৮০ পাবে অনিরুদ্ধ, বাবা লিখে রেখেছিলেন ক্যালেন্ডারে

গত সপ্তাহে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রিয় দল বার্সেলোনা যে লা লিগা জিততে পারেনি। প্রিয় ফুটবলার মেসির ফর্মটাও ভাল যাচ্ছে না, কপালে ভাঁজ বাড়িয়েছে সেটাও। তবে বৃহস্পতিবার সকালে সেই ভাঁজ দূর হয়ে হাসি ফুটল কাটোয়া কাশীরামদাস বিদ্যায়তনের ছাত্র অনিরুদ্ধ সরকারের মুখে।

বাবা-মায়ের সঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র।

বাবা-মায়ের সঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৪ ০২:০২
Share: Save:

গত সপ্তাহে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রিয় দল বার্সেলোনা যে লা লিগা জিততে পারেনি। প্রিয় ফুটবলার মেসির ফর্মটাও ভাল যাচ্ছে না, কপালে ভাঁজ বাড়িয়েছে সেটাও। তবে বৃহস্পতিবার সকালে সেই ভাঁজ দূর হয়ে হাসি ফুটল কাটোয়া কাশীরামদাস বিদ্যায়তনের ছাত্র অনিরুদ্ধ সরকারের মুখে।

সকালে খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই কাটোয়ার মাস্টারপাড়ায় ভিড় জমিয়েছিলেন অনিরুদ্ধের শিক্ষক থেকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। প্রতিবেশীদের ঘোর তখনও কাটেনি। রোজ বিকেলে তাঁরা যে রাজাকে ব্যাট হাতে মাঠে ছুটতে দেখেছেন, নিয়মিত তার গলায় নজরুল গীতি শুনেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে তর্কাতর্কি করতে দেখেছেন, সে একেবারে মাধ্যমিকে রাজ্যে সম্ভাব্য দ্বিতীয়!

পড়শি যুবক ইন্দ্রজিৎ ঘোষ থেকে কাশীরামদাস বিদ্যায়তনের শিক্ষক পিন্টু মুখোপাধ্যায়েরা বলছিলেন, “খেলা-গান করেও যে মাধ্যমিকে এত ভাল ফল করা যায়, তা দেখিয়ে দিল অনিরুদ্ধ।” মাধ্যমিকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮১। বাংলায় ৯৩, ইংরেজিতে ৯৫, অঙ্কে ১০০, পদার্থ বিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৫ ও ভূগোলে ১০০। টিভির পর্দায় যখন এই সব নম্বর ভেসে উঠছে, তখন অনিরুদ্ধর বাবা নির্মলেন্দু সরকার ক্যালেন্ডার উল্টে দেখাচ্ছিলেন, তাঁর ছেলে ৬৮০ পাবে আশা করে লিখে রেখেছিলেন। তবে অনিরুদ্ধর কথায়, “আমি ভাল ফলের আশা করেছিলাম। তা বলে রাজ্যে দ্বিতীয়! এতটা আশা করিনি।”

নির্মলেন্দুবাবু বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক। আর মা পূরবীদেবী কেতুগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী। দু’জনেই বলেন, “শুধুমাত্র নিয়মানুবর্তিতায় আমাদের রাজাকে সাফল্যের মুখ দেখিয়েছে। এই ফলের পিছনে শিক্ষকদের অবদান অনেক বেশি।” অনিরুদ্ধর ইচ্ছে, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবে। তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে সে। পড়াশো-খেলা-গান নিয়ে থাকার মাঝেই শার্লক হোমসের বই পেলে তাতে মুখ গুঁজে বসে পড়ে সে। বাড়ির লোকেরা জানান, এ দিন সকাল থেকে টেনশনে ঘরের কোনে লুকিয়ে ছিল সে। তাঁর কথায়, “বাবা-মা আমাকে প্রথম খবর দেয়। এই ফলের জন্য বাবা-মা প্রচুর পরিশ্রম করেছেন।” এত চাপের মধ্যেও হারমোনিয়াম নিয়ে সে গাইল, ‘আমায় নহে গো ভালবাসা, ভালোবাসা...।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

madhyamik result katwa aniruddha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE