বারুইপুর আদালতে আরাবুল ইসলাম। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
সাত মাস আগেকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হয়। আরাবুলের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। কিন্তু বিচারক আরাবুলকে ১২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে শুক্রবার ভাঙড়ের উত্তর কাশীপুর থানার কোঁচপুকুরে দলীয় পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হন দু’পক্ষের কয়েক জন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন সরকার পক্ষের আইনজীবী সামিউল হক বলেন, ‘‘আরাবুলের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইন-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রয়েছে। আমরা ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়েছিলাম। বিচারক ১২ দিনের দিয়েছেন।’’ আরাবুলের আইনজীবী সৌমিত্র অধিকারীর দাবি, ‘‘মিথ্যা মামলা। তার সঙ্গে আরও দু’টি মামলা যোগ করে আদালতে তোলা হয়েছে। আরাবুল অসুস্থ। আইএসএফ চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসিয়েছে।’’
আরাবুল-পুত্র তথা তৃণমূল নেতা হাকিমুল ইসলামের দাবি, ‘‘ওই গোলমালে বাবা জড়িত নন। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সে দিনের গোলমালের মাথা নওসাদ সিদ্দিকী। তাঁর গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’ তবে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ফের বলেন, ‘‘এখানে দলের কোনও বক্তব্য নেই। আরাবুল অপরাধ করেছেন কি না, তা তিনি বা তাঁর আইনজীবী বলবেন।’’
আরাবুলের গ্রেফতারির পরে তৃণমূল এবং আইএসএফ, দু’পক্ষ থেকেই আরও কয়েক জন নেতার গ্রেফতারির দাবি করা হয়েছে। ভাঙড়ে শুক্রবার জুড়ে আলোচনা ছিল: আরাবুলের পরে এ বার কাল পালা? এই আবহে যেমন হাকিমুল নওসাদের গ্রেফতারি দাবি করেছেন, তেমনই আইএসএফের পাল্টা দাবি, সওকাত মোল্লা, হাকিমুলের মতো তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে।
তৃণমূলের একাংশ বলছে, তাদের প্রাক্তন বিধায়ক যদি গ্রেফতার হতে পারেন, তা হলে ভাঙড়ের বর্তমান বিধায়ক কেন হবেন না? যুক্তি, যে ঘটনায় আরাবুলকে ধরা হয়েছে, তাতে তৃণমূলেরও দু’জন মারা যান। সেই খুনে নওসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। নওসাদ পাল্টা বলেন, ‘‘যদি সরকার মনে করে এই কৌশলে আমাকে শায়েস্তা করবে, তাতে আমি পিছিয়ে আসার লোক নই।”
ভাঙড়ে যে ঘটনায় আরাবুলকে ধরা হয়েছে, তাতে প্রাণ গিয়েছিল তৃণমূল কর্মী রাজু নস্কর, রশিদ মোল্লা ও আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার। আরাবুল ধরা পড়ায় মহিউদ্দিনের মা ফতেমা বিবি বলেন, ‘‘আগে পুলিশের উপরে ভরসা ছিল না। এখন পাচ্ছি।’’ এরই মধ্যেএ দিন দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয় বিজয়গঞ্জ বাজারে। আহতদের জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy