গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিকৃতির জন্য হাওড়ার উলুবেড়িয়ার এসডিও (মহকুমাশাসক), বিডিও এবং আরও এক সরকারি আধিকারিক বরখাস্তের যে আশঙ্কা করছেন, তা ঠিক নয় বলে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে।
বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘একক বেঞ্চ (বিচারপতি অমৃতা সিংহ)-কে আমরা অনুরোধ করব, কোনও নির্দেশ দেওয়ার আগে যথাযথ ভাবে এই অফিসারদের বক্তব্য শুনে তার পর যেন নির্দেশ দেন।’’
২৭ জুলাই বিচারপতি সিংহের নির্দেশের ফলে ইতিমধ্যেই ওই এসডিও শমীককুমার ঘোষ এবং বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে-কে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালত তাঁদের সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেছে রাজ্যকে। তারই বিরুদ্ধে এর আগে বিডিও এবং বৃহস্পতিবার এসডিও ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। বিডিও-র আবেদন খারিজ করে আগেই বিচারপতি সিংহের এজলাসে পাঠিয়ে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।।
শুক্রবার এসডিও-র করা আবেদনের শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, হাই কোর্ট নিয়োজিত প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই যদি কোনও পদক্ষেপ করা হয়ে গিয়ে থাকে, সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে ডিভিশন বেঞ্চ। এই অফিসারদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কি না, সেটা রাজ্য বিবেচনা করবে।
এসডিওর আইনজীবী জয়দীপ কর এ দিন জানান, বিডিও নথি বিকৃত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েতে রিটার্নিং অফিসার পদে থাকেন বিডিও। এখানে এসডিও-র কোনও ভূমিকা নেই। আইনজীবীর কথায়, ‘‘আমার মক্কেলের বক্তব্য না শুনে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া আদালতের উচিত নয়।’’ মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, কোনও কর্মচারীকে বরখাস্ত করার আগে তাঁর বক্তব্য শুনতেই হবে, এটা বাধ্যতামূলক নয়।
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এসডিও-কে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যকে বলা হয়েছে।’’ বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের প্রশ্ন, ‘‘প্রার্থীর শংসাপত্র বিকৃত করার বিষয়ে উলুবেড়িয়ার আইসি এসডিও-কে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তিনি ব্যবস্থা নেননি কেন?’’
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে উলুবেড়িয়া ১-এর সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বেগম খানের মনোনয়নপত্র এবং ওবিসি শংসাপত্র ষড়যন্ত্র করে বাতিল করে তাঁকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি এই অভিযোগে হাই কোর্টে মামলা করেন কাশ্মীরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)