সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে, রাজ্যে সভাপতি বদলের সময়ে এই ছিল রাহুল গাঁধীর বার্তা। লোকসভা ভোটের আগে প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন নানা কমিটিতে ‘সকলে’র প্রতিনিধিত্ব নেই— সেই অভিযোগ এ বার গিয়ে পড়ল রাহুলের আদালতেই! ঘরের বিবাদ সামাল দিতে সক্রিয় হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতিও।
প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটি, কার্যনির্বাহী কমিটি, মিডিয়া কমিটি এবং জেলা সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতি— এই গোটা তালিকাই নতুন করে তৈরি হয়েছে। কয়েক দিন আগে এআইসিসি-র অনুমোদন নিয়ে সেই তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। তার পর থেকেই ক্ষোভ ও বিবাদ তুঙ্গে উঠেছে দলের অন্দরে। দলীয় সূত্রের খবর, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও অধুনা প্রচার কমিটির সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান তাঁদের ক্ষোভের কথা দলে জানিয়ে দিয়েছেন। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় এআইসিসি-র তরফে বাংলার ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈ অভিযোগ জানিয়েছেন রাহুলের কাছে। তার পরেই স্বয়ং রাহুল কথা বলেছেন অধীরবাবুর সঙ্গে।
যখন দায়িত্বে যিনি থাকেন, তখন কমিটিতে তাঁরই নিয়ন্ত্রণ থাকে— এমনটাই কংগ্রেসের রেওয়াজ। কিন্তু এ বার দলের অন্দরে প্রশ্ন, প্রদেশ নেতাদের মতামত নিয়ে কমিটি গড়ার কথা বলে দিয়েছিলেন রাহুল নিজেই। সকলের মতামত নেওয়া হয়নি বলেই অধীরবাবুর আমলের শেষ কমিটিকে হাইকম্যান্ড অনুমোদন দেয়নি। অথচ এ বার পরিষদীয় দলের নেতার সঙ্গেও কোনও আলোচনা হয়নি বলে দলের ভিতরেই অভিযোগ। আবার দুর্দিনে কংগ্রেস করে গিয়েছেন, এমন নেতাদের কাউকে কাউকে সরিয়ে কিছু জেলায় এমন কিছু মুখ আনা হয়েছে, যাঁরা দলবদল করে আবার এসেছেন। কমিটির যৌক্তিকতা নিয়ে অধীরবাবু প্রশ্ন তুলেছেন গৌরবের কাছে। আবার মান্নান তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকে।
হাইকম্যান্ডের হস্তক্ষেপেই ক্ষোভ প্রশমনে গৌরব সোমবার মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের আইন অমান্যে উপস্থিত হয়েছিলেন অধীরবাবুর পাশে। বহরমপুরে ভিড় হয়েছিল বিপুল। মান্নান ছিলেন রায়গঞ্জে আইন অমান্যে দীপা দাশমুন্সির সঙ্গে। সোমেনবাবু, অধীরবাবু বা মান্নান কেউই অবশ্য প্রকাশ্য়ে মুখ খোলেননি। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের এক সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘‘কারও সঙ্গে আলোচনা না করে কমিটি হল এবং এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সেটাই দিল্লি থেকে অনুমোদন করিয়ে আনলেন! হাইকম্যান্ডের হস্তক্ষেপে কমিটিতে রদবদল হয় কি না, দেখতে চাই।’’
প্রশ্ন করা হলে গৌরব অবশ্য কৌশলী জবাব দিচ্ছেন, ‘‘আমি সকলের সঙ্গেই কথা বলছি। তবে আইন অমান্য কর্মসূচির সাফল্য ছাড়া আর কিছু শুনতে পাচ্ছি না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy