Advertisement
E-Paper

বিহারের ভোটের ফলের দিকে তাকিয়ে বাংলার রাজনৈতিক শিবির

প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের ভোটের ফল কী হবে, তা নিয়ে মাথাব্যথা এ রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী নেতাদের অনেকেরই।

সঞ্জয় সিংহ

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ১৮:৫৯

প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের ভোটের ফল কী হবে, তা নিয়ে মাথাব্যথা এ রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী নেতাদের অনেকেরই।

রাত পোহালেই বিহার বিধানসভার ভোটগণনা শুরু হবে। এ বার বিহার কার হাতে যাবে? লালু-নীতীশ-কংগ্রেস জোটের হাতে, না, নীতীশকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সেখানে ক্ষমতা দখল করবে? কারণ,আর কয়েক মাসের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার ভোট। তার আগে প্রতিবেশী রাজ্যের ভোটের ফল এ রাজ্যে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে বাংলার রাজনৈতিক দলগুলির নেতাদের একাংশের ধারণা।

পুরভোটে বিপর্যয়ের পরে বিহারে তাঁদের দল ক্ষমতায় এলে বিজেপি এখানে নতুন করে অক্সিজেন পাবে বলেই ওই দলের নেতাদের অভিমত। আর সে ক্ষেত্রে এখানে শাসক দল তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াবে বিজেপি। কিন্তু ‘মোদী-দিদি দোস্তি’ বলে বিরোধী প্রচারকে মুছতে বিহারে তৃতীয় দফা ভোটের সময় থেকেই মমতা ‘নীতীশ-লালু জোট’কে সমর্থন জানিয়েছেন। বিজেপি-র কড়া সমালোচনা করছেন তিনি। এর পিছনে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির নেতাদের অনেকেরই বক্তব্য, সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখতেই মমতা ‘নীতীশ-লালু জোট’কে সমর্থন করেছেন।

বিরোধী এক নেতার অন্য ব্যাখ্যা, ‘‘মমতা আসলে ভয় পাচ্ছেন। বিজেপি জয়ী হলে সারদা তদন্ত নিয়ে আবার তৃণমূলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।’’ তবে শাসক দলের নেতারা পাল্টা বলেছেন, ‘‘গত লোকসভা ভোট থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত, পুরভোটে সারদা-কাণ্ড কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। আর সারদা-সহ বিভিন্ন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যকে আর্থিক দিক থেকে নানা ভাবে বঞ্চিত করছে। এই দল জনবিরোধী নীতি নিয়ে চলছে।’’ বিরোধী দলের নেতাদের অনেকেরই মতে, বিহারে বিজেপি পরাজিত হলে, মমতা-মোদীর রাজনৈতিক বোঝাপড়া অনেকটাই গভীর হবে। কারণ, মোদী তাঁর দলের অস্তিত্ব বজায় রাখতে অনেক বেশি মমতা নির্ভর হবেন। রাজ্যের বিজেপি সভাপতি রাহুল সিংহ অবশ্য জোরের সঙ্গে বলেছেন, ‘‘বিহারে বিজেপি জিতবেই।’’ আর প্রতিবেশী রাজ্যে বিজেপি জয়ী হলে এখানে পুরভোটে বিপর্যস্ত দলের কর্মীরা নব উদ্যমে আগামী বিধানসভা ভোটের লড়াইতে নামবেন।

পড়ুন: অচেনা লালু গম্ভীর! চেনা লালু বললেন, মহাজোট ১৯০

আবার রাজ্যে কংগ্রেস তাদের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা অনেকটাই হারিয়েছে। বিহারে ‘নীতীশ-লালু-কংগ্রেস’ জোট ফল ভাল করলে, এখানে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা অনেকটাই চাঙ্গা হবে বলে দলের নেতাদের অনেকেরই অভিমত। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ও প্রবীণ বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার মতে, ‘‘কেবল রাজ্যেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও কংগ্রেসের গুরুত্ব আরও বাড়বে। রাজ্যে মমতা বনাম মমতা-বিরোধী শক্তিও অনেকটা জোর পাবে।’’ অবশ্য এ রাজ্যে সিপিএম-সহ বামেরা বিহারে লালু-নীতীশের জোটে নেই। তবে তাঁরাও চাইছেন, মোদীর দল যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে। কারণ, বিজেপি বিহারে জয়ী হলে, এখানেও তাঁদের লড়াইটা আরও কঠিন হবে।

এই প্রেক্ষাপটে কার্যত নদীর পারে দাঁড়িয়ে জল মাপছেন মুকুল রায়। তাঁর নেতৃত্বে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ এখন সময়ের অপেক্ষা। নতুন দল গঠন নিয়ে মুকুল প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও, ঘনিষ্ঠদের কাছে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিহার ভোটের ফল কী হয় তা আমাদের দেখতে হবে! এই ফলের উপর আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি অনেকটাই নির্ভর করছে।’’ মুকুল অনুগামীদের অনেকই মনে করেন, বিহারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। ভোটের ফল দেখেই তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ করতে চান মুকুল। কারণ, বিহারের ভোটে মমতা মোদী-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। তাই বিহারের ভোটের ফল বিশ্লেষণ করেই ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির করতে চাইছেন মুকুল।

সব মিলিয়ে বিহারের ভোটের ফলের দিকে এখন নজর বাংলার রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেরই।

bihar, bihar assembly election, lalu prasad yadav, rjd, nitish kumar, bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy