Advertisement
E-Paper

১০ দিনের পুলিশ হেফাজত, জামিন চাইলেন না আরাবুল

শনিবার সকালে সেখান থেকে সোনারপুর থেকে বারুইপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। রাখা হয় লকআপে। আদালতে যাওয়ার আগে বারুইপুর থানাতেই স্নান সেরে নেন।

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ১৪:১১
বারুইপুর থানায় শনিবার সকালে আরাবুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র।

বারুইপুর থানায় শনিবার সকালে আরাবুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র।

জামিন চাইলেন না, পরিবর্তে বিচারকের কাছে প্রকৃত তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন আরাবুল ইসলাম। শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বারুইপুর থানা থেকে শনিবার কড়া পুলিশি পাহারায় আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল আরাবুলকে। তুঁতে রঙের জামা পরেছিলেন তিনি। খুব শান্ত, মুখে বিষণ্ণতার ছাপ। কারও সঙ্গে কথা বলেননি। ধীরে সুস্থেই আদালতে ঢুকতে দেখা যায় তাঁকে। শুনানি শুরুর আগে তাঁকে ঢোকানো হয় কোর্ট লকআপে।

শুনানি যখন শুরু হয়, খুব নির্লিপ্ত ভাবে তিনি বিচারককে বলেন, “আমার জামিনের প্রয়োজন নেই। প্রকৃত খুনি কে সেটা তদন্ত করে বার করুক পুলিশ।” ঘটনার সময় তিনি কোথায় ছিলেন তার একটা বিস্তারিত তথ্য আদালতকে জানান। আরাবুল বলেন, “বিকেল ৪টের সময় লেকটাউনে, সাড়ে ৪টের সময় ওই এলাকারই একটি শপিং মলে ছিলাম। সন্ধে ৬টায় বাড়িতে ফিরি।” আদালতের কাছে আর্জি জানান, “কোথায় ছিলাম মোবাইল টাওয়ার ট্র্যাক করে দেখুক পুলিশ। তা হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম কি না!”

দেখুন ভিডিয়ো

আরও পড়ুন: দেহ ময়নাতদন্তে, ভাঙড়ে রাস্তা আটকে হাজার হাজার মানুষ

আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে গিয়েই বিপাকে ‘বেতাজ বাদশা’ আরাবুল

আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে মেডিক্যাল চেকআপ হচ্ছে আরাবুলের। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

আরাবুলের আইনজীবী আদালতে জানান, ভাঙড় এলাকায় খাল ধরে নৌকা করে দুষ্কৃতীরা এসে মিছিলে হামলা চালায়। এর সঙ্গে আরাবুল এবং তাঁর পরিবারের কোনও সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি তিনি এ প্রশ্নও তোলেন, নির্বাচন বিধি চালু হয়ে যাওয়ার পর পুলিশের অনুমতি না নিয়ে কী ভাবে মিছিল করা হল? আদৌ কি পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। যদি অনুমতি নিয়েই থাকে, তা হলে পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে মিছিলের কোনও ভিডিও করেছিল? যদি না করে তা হলে এর দায় কে নেবে? যদি ভিডিও করত তা হলে কে গুলি চালিয়েছে তা ধরা পড়ত। তা হলে পুলিশের কি কোনও গাফিলতি রয়েছে?

লক্ষণীয় বিষয় হল— সোনারপুর থানা, বারুইপুর থানা থেকে শুরু করে আদালত, কোথাও কোনও আরাবুল সমর্থককে এ দিন নজরে পড়েনি।

হাফিজুল মোল্লার খুনের জেরে যেন বারুদের স্তুপ হয়ে রয়েছে ভাঙড়। আর যাঁকে কেন্দ্র করে এই অসন্তোষের আগুন, গ্রেফতার হওয়া সেই আরাবুল ইসলাম এ দিন সকালে দাবি করেন— তিনি এ সবের মধ্যে ছিলেনই না। বারুইপুর থানা থেকে বার করার সময় আরাবুল সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ওখানে ছিলাম না। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নই। ওরাই পরিকল্পনা করে খুন করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিষয়টা জানাব, যাতে এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হয়।”

ভাঙড় জমি কমিটির মিছিলে গুলি চালিয়ে শুক্রবার খুন করা হয় কমিটির সমর্থক হাফিজুল মোল্লাকে। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামকে। রাতে রাখা হয় সোনারপুর থানায়। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ (দাঙ্গা লাগানো), ৩২৬ (হামলা চালানো), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ৩০২ (খুন), বিস্ফোরক আইন এবং অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এর মধ্যে অনেকগুলোই জামিন অযোগ্য ধারা।

শনিবার সকালে সোনারপুর থেকে বারুইপুর থানার লক আপে নিয়ে আসা হয় আরাবুলকে। সেখানে স্নান সেরে নেন তিনি। তার পর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যাল চেক আপের জন্য বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। ব্লাড টেস্ট, ইসিজি এবং অন্যান্য রুটিন পরীক্ষা করা হয়। চিকিত্সকরা জানান, আরাবুলের সুগার এবং হাই ব্লাড প্রেসার ধরা পড়েছে।

Bengal Panchayat Election 2018 Bhangar Arabul Islam আরাবুল ইসলাম ভাঙড়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy