Advertisement
E-Paper

জেলায় হামলা, পরস্পরকে দুষছে দু’পক্ষই

পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় রবিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন পুরপ্রধান আনিসুর রহমানের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আনিসুরের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪১

হাইকোর্টের নির্দেশে মনোনয়নের দিন বাড়ার পরেও সন্ত্রাসের আশঙ্কা করেছিল বিরোধীরা। আজ, সোমবার মনোনয়ন জমার ঠিক আগে বিভিন্ন জেলা থেকে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হল তারা। তবে, এ বার একতরফা নয়। বিরোধীদের হাতে শাসকদলের মার খাওয়ার অভিযোগও এসেছে। তবে যেখানেই যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা তা অস্বীকার করেছে, সে শাসকদলই হোক বা বিরোধীরা।

পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় রবিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন পুরপ্রধান আনিসুর রহমানের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আনিসুরের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি, এ বার পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী কুরবান শাহ। পরে অবশ্য আনিসুর অনুগামীদের বিরুদ্ধেও কুরবান ও সঙ্গীদের উপর পাল্টা হামলার অভিযোগ ওঠে। মাথায় চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কুরবান। রাতে গ্রেফতার করা হয় অনিসুরকে। শনিবার রাতে আবার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায় জেলারই পটাশপুরে। দু’পক্ষেরই কয়েকজন জখম হন। দেওয়াল লেখা নিয়ে হুগলির পান্ডুয়াতেই বিজেপি-তৃণমূলে মারামারি হয়েছে।

গোলমাল হয়েছে গড়বেতাতেও। রবিবার সকালে সেখানে সিপিএম নেতা তপন ঘোষ ও দিবাকর ভুঁইয়াকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। ছোট আঙারিয়া গণহত্যার অন্যতম অভিযুক্ত তপন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য। আর দিবাকর সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক। গড়বেতা থেকে এ বার দলের জেলা পরিষদে লড়ছেন তিনি। গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘জনরোষেই এই ঘটনা। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

বিজেপির দাবি, প্রার্থী হওয়া আটকাতে আউশগ্রাম-সহ বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের ‘বাইক-বাহিনী’র সন্ত্রাস শুরু হয়ে গিয়েছে। ছোড়া কলোনির এক বিজেপি সমর্থককে রবিবার দুপুরে মারধর করা হয়েছে। ওই এলাকার জেলা পরিষদের প্রার্থী বিকাশ ভক্ত গ্রামছাড়া। তাঁর দাবি, “তৃণমূলের লোকেরা ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে।” হুমকিতে প্রার্থিপদ তুলে নিতে হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন ভাতারের মাহাতার ১৬ জন বিজেপি প্রার্থী। মহকুমাশাসকের (বর্ধমান সদর) কাছে বিজেপি-র অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফর্মে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

মনোনয়ন প্রত্যাহার না-করায় দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের অশোকগ্রাম এলাকায় বিজেপির এক মহিলা প্রার্থীর স্বামীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাতের এই ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় স্বপন বর্মন নামে ওই ব্যক্তিকে বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আতঙ্কে ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন সরস্বতী বর্মন নামে ওই প্রার্থী। তৃণমূলের নেতারা জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।

বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, আজ, সোমবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি মিলিয়ে বীরভূমে ৩০০০, বাঁকুড়া এবং কোচবিহারে ১৫০০ করে, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০০০ করে, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে ৩০০০, সন্দেশখালি-বসিরহাট অঞ্চলে প্রায় ৭০০ মনোনয়ন জমা পড়বে তাদের। আর সিপিএম নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, সন্ত্রাসের জেরে রাজ্যের মোট জেলা পরিষদ আসনের ২০%, পঞ্চায়েত সমিতির ৫০% এবং গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের ৬৭%-এ তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। আজ ওই সব ক’টি আসনেই তাঁরা মনোনয়ন জমা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

রবিবার বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘‘প্রতিটি বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার লাইনে নির্দল ও দলীয় প্রার্থী সাজিয়ে শয়ে-শয়ে মানুষকে সকাল থেকে দাঁড় করিয়ে রাখবে তৃণমূল। যাতে বিরোধী দলের প্রার্থীরা সেখানে দাঁড়ানোর সুযোগ না পায়। এর পরে ডিসিআর কাটতে দেরি করবে প্রশাসনের লোকজন। তৃণমূলের পরিকল্পনা এখন টাইম কিল করা অর্থাৎ সময় নষ্টের খেলা খেলবে। ভোটের দিন যেমন বুথ জ্যাম হয়। তার আগে বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন আটকাতে বিডিও অফিস জ্যাম করবে তৃণমূল।’’

BJP TMC Violence West Bengal Panchayat Election 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy