Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Panchayat Poll 2018

হুমকি দেয়নি কেউ: অমরেন্দ্র

সোমবার কমিশনার এটাও স্বীকার করেন যে, দিন বাড়ানোর আদেশ প্রত্যাহার করার জন্য তৃণমূলের ‘ব্যাখ্যা ঠিক’ বলেই তখন তাঁর মনে হয়েছিল। আদালতের ব্যাখ্যার পরে অবশ্য মনোনয়নের দিন বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁর প্রথম পদক্ষেপই ‘সঠিক’ ছিল বলে মনে করেন কমিশনার।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। সোমবার।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। সোমবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

মনোনয়নের দিন বাড়ানোর আদেশ প্রত্যাহার করাতে তৃণমূল নেতারা তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে অবশেষে কবুল করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। যদিও বিষয়টিকে ‘চাপ’ বা ‘হুমকি’ বলতে চাননি তিনি। সোমবার কমিশনার এটাও স্বীকার করেন যে, দিন বাড়ানোর আদেশ প্রত্যাহার করার জন্য তৃণমূলের ‘ব্যাখ্যা ঠিক’ বলেই তখন তাঁর মনে হয়েছিল। আদালতের ব্যাখ্যার পরে অবশ্য মনোনয়নের দিন বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁর প্রথম পদক্ষেপই ‘সঠিক’ ছিল বলে মনে করেন কমিশনার।

গত ৯ এপ্রিল রাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা এক দিন বাড়িয়ে নির্দেশিকা জারি করেন কমিশনার। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, অর্থাৎ গত ১০ এপ্রিল সকালে তা প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এ ক্ষেত্রে কমিশনারের বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের কয়েক জন নেতা ‘চাপ’ সৃষ্টি করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। সোমবার সেই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অমরেন্দ্র বলেন, তৃণমূল নেতারা তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। যে কেউ আসতেই পারেন। তবে কেউ তাঁকে কোনও হুমকি দেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাকে কে হুমকি দেবে? আমাকে হুমকি দিলে তাঁকে ফল ভুগতে হবে!’’

আরও পড়ুন: লড়াই ত্রিমুখী হলেও ‘ছক’ দেখছে বিরোধীরা

মনোনয়ন জমার সময়সীমা ৯ এপ্রিল দুপুর ৩টেয় শেষ হয়। তার পরে মনোনয়নের দিন বাড়ানোর নির্দেশিকা জারি ‘বেআইনি’ বলে জানিয়েছিলেন এক তৃণমূল নেতা। রাজ্য সরকারের মতও তা-ই ছিল। পরে হাইকোর্ট মনোনয়নের বাড়তি দিনের ব্যাখ্যা দেয়। তা শুনে কমিশনারের মনে হয়, তাঁর নির্দেশিকা ‘ঠিক’ ছিল। এ দিন সে কথা জানিয়ে অমরেন্দ্র বলেন, ‘‘এটা তো লুকোছাপার ব্যাপার নয়। আমার নির্দেশিকাতেই তৃণমূল নেতার নাম এবং রাজ্য সরকারের কথা বলা ছিল।’’ প্রসঙ্গত মনোনয়নের বাড়তি দিন প্রত্যাহার করে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে তৃণমূলের সহ-সভাপতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল।

কমিশনারকে তৃণমূলের তরফে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে রবিবার অভিযোগ করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। সেই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অভিযোগের জবাব দিতেই এ দিন সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল কেন, কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির তরফে হুমকি দেওয়া হয়নি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘরের বাইরে লোক দাঁড়িয়ে থাকা বা ফোনে আড়িপাতার কথা মিথ্যা, বানানো।’’

রাহুলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার বিষয়টি অবশ্য স্পষ্ট করেননি কমিশনার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ভাবছি কী করা যেতে পারে! নির্বাচনী বিধি দেখতে হবে।’’ যা শুনে রাহুলের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘কমিশনার তো রবিবারই বলতে পারতেন, কেউ তাঁকে হুমকি দেননি। যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, কমিশনারকে স্পষ্ট করতে হবে তিনি কাকে কী বলেছেন, উনি তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করলেন। এর থেকেই আবার প্রমাণ হল, চাপ আছে। উনি চাপের কাছে মাথা নোয়াচ্ছেন।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘কমিশনার তাঁর পদের মর্যাদা রক্ষা করতে ব্যর্থ। কমিশন এখন সার্কাসে পরিণত হয়েছে।’’

এ দিকে নবান্নে রাহুলের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত কালের ঘটনা নিয়ে যদি দলের তরফে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, কারও কিছু করার আছে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE