Advertisement
০৬ মে ২০২৪

এখনও সেই বাঘের ছায়া, ভোটে নেই বনকর্মীরা

দু’মাস হতে চলল। অথচ লালগড়, গোয়ালতোড়, চাঁদড়ার জঙ্গলে নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়া বাঘবাবাজিকে বন্দি করতে পারছে না বন দফতর।

লালগড়ের পরে যদিও দেখা মেলেনি তার। ফাইল চিত্র

লালগড়ের পরে যদিও দেখা মেলেনি তার। ফাইল চিত্র

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

বাঘের ছায়া ভোটেও!

এক বাঘ ধরতেই হিমশিম খাচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বনকর্মীরা। তাই পঞ্চায়েত ভোটের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তাঁরা। সেই আর্জি মঞ্জুর হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জঙ্গলমহলের এই দুই জেলার বনকর্মীদের ভোটের কাজে ব্যবহার করা হবে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “বন দফতরের কর্মীদের ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না।’’

গোড়ায় ঠিক ছিল বনকর্মীদের পঞ্চায়েতের ভোটে ব্যবহার করা হবে। সেই মতো দফতরের কাছে নাম চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বনকর্মীদের একাংশ পাল্টা জানান, জঙ্গল অরক্ষিত রেখে ভোট করাতে গেলে বিপদ বাড়বে। বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তারপরই বনকর্মীদের ভোট থেকে ‘ছুটি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।

এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পুরনো একটি নির্দেশের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রশাসনের এক সূত্র। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, বন দফতরের কাজ ‘জরুরি পরিষেবার’ মতোই। ফলে, বনকর্মীদের অন্য দায়িত্ব দেওয়া ঠিক নয়। জেলার এক বনকর্তার কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের কথাও জেলা নির্বাচন আধিকারিকের দফতরে জানানো হয়েছিল।’’

দু’মাস হতে চলল। অথচ লালগড়, গোয়ালতোড়, চাঁদড়ার জঙ্গলে নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়া বাঘবাবাজিকে বন্দি করতে পারছে না বন দফতর। ক্যামেরা বসানো, ড্রোন ওড়ানো থেকে সুন্দরবনের বিশেষজ্ঞ বনকর্মীদের দিয়ে খানাতল্লাশি— কিছুই বাদ নেই। এখন আবার বাঘের অবস্থান জানতে প্রশিক্ষিত কুকুর আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাঘ ধরতে বন দফতর যখন নাজেহাল, তখন বনকর্মীদের ভোটে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছিল কেন?

জেলা প্রশাসনের ব্যাখ্যা, এ বার প্রচুর ভোটকর্মী প্রয়োজন। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরেই প্রায় ২২ হাজার ভোটকর্মী লাগবে। তাই অন্য সরকারি দফতরের মতো বন দফতরের কাছেও কর্মীদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়। বন দফতরের প্রতিটি ডিভিশনে প্রায় ২০০-২৫০ কর্মী রয়েছেন। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে বনকর্মীর সংখ্যা হাজার খানেক। তবে তাঁদের কাউকেই আর ভোটের কাজে যেতে হচ্ছে না।

এমন সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেয়েছেন জেলার বনকর্মীরা। এক জনের কথায়, “বাঘের খোঁজ করতেই দিন-রাত এক হয়ে যাচ্ছে। তার ওপর ভোটের কাজ করতে হলে ঝক্কির শেষ থাকত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE