Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

হাইকোর্টে জোর ধাক্কা, সময়সীমা নিয়ে কমিশনের নির্দেশ স্থগিত

কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন জমা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েও তা বাতিল করে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত কমিশন নিয়েছিল, হাইকোর্ট তাতে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের অস্বস্তি বাড়ল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের অস্বস্তি বাড়ল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:৪৮
Share: Save:

জোর ধাক্কা খেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েও মঙ্গলবার সকালে তা কমিশন বাতিল করে দিয়েছিল। কমিশনের সেই নির্দেশকে কলকাতা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায় বিজেপি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশনের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট। হিংসার কারণে যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তাঁদের মনোনয়ন জমা নেওয়ার ব্যবস্থা কমিশনকে করতে হবে। জানিয়ে দিল আদালত।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রথম বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সোমবারই ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় শাসক আশ্রিত দুষ্কৃতীরা যে ভাবে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়েছে, তার প্রতিকার চেয়ে বিজেপি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে প্রতিকারের নির্দেশ দেয়।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ এসেছিল। সোমবার রাতেই কমিশন মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ায়। মঙ্গলবারও মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশ পাঠানো হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। সেই অনুযায়ী জেলায় জেলায় আজ সকাল থেকে ফের মনোনয়ন জমা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিল বিরোধী দলগুলি। বেলা ১১টা থেকে মনোনয়ন জমা নেওয়া শুরু হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ১১টা বাজার অনেক আগেই জেলায় জেলায় ফের কমিশনের নতুন নির্দেশ পৌঁছে যায়। আজ আর মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ভোটের আগেই খেলা শেষ, তৃণমূলের প্রায় দখলে বীরভূম-বাঁকুড়া

কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই বিজেপি হাইকোর্টে গিয়েছিল। হাইকোর্ট বিজেপির আর্জি গ্রহণ করেছে এবং কমিশনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে দিয়েছে।

বিজেপির তরফে মামলাকারী আইনজীবী প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বিরোধীদের অভিযোগের প্রতিকার করতে হবে এবং যাঁরা মনোনয়ন দাখিল করতে চান, তাঁদের মনোনয়ন জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে— এই নির্দেশই দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কমিশন সে নির্দেশ মানেনি। হাইকোর্ট আজ নির্দেশ দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কমিশনকে মানতে হবে এবং বিরোধীদের অভিযোগের প্রতিকার করতে হবে।’’ বুধবার ফের হাইকোর্ট মামলাটি শুনবে।

আরও পড়ুন: কমিশন জমা নিলেও ঝুলে ১৪৩

বিজেপি নেতা রাহুল সিংহের কথায়, ‘‘আদালত যে ভাবে কমিশনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল, তাতে আবার প্রমাণ হয়ে গেল, কী পরিস্থিতির মধ্যে বাংলায় ভোট চলছে। হাইকোর্টের এই নির্দেশ আমাদের নৈতিক জয়।’’

মনোনয়ন জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে মঙ্গলবার সকালে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল, তাতে জানানো হয়, তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আইন সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলে সময়সীমা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি তুলেছিলেন। সেই পরামর্শ কমিশন মেনে নিয়েছে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়।

হাইকোর্টে সওয়াল-জবাবের সময় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি হিসেবে তিনি নিজের বক্তব্য পেশ করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু হাইকোর্ট এ দিন কল্যাণের কথা শুনতে চায়নি। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তিনি যা বলতে চান, তা হলফনামার মাধ্যমে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কল্যাণকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE