রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট প্রশ্ন তোলায় কমিশনারের আর পদে থাকা উচিত নয় বলে সমস্বরে দাবি তুলল বিরোধী দলগুলি। আদালতের বিচারাধীন বিষয় বলে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি শাসক দল তৃণমূল।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন শুরুর দিন থেকেই যে ভাবে জেলায় জেলায় সংঘর্ষ হয়েছে, তাতে বারবার বিরোধী দলগুলিকে কমিশনের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। সেখানে সুরাহা না হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। এখনও আদালতেই বিচারাধীন পঞ্চায়েত মামলা। শুক্রবার কমিশনের কাজে আদালত তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করার পরে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে এই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভোটের কাজ ঠিকমতো হয়নি, হবেও না। পরিকল্পিত ভাবে সংবিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। জোড়হাতে মানুষের কাছে তাই ক্ষমা চেয়ে এই কমিশনারের চলে যাওয়া উচিত।’’
দিন কয়েক আগে মনোনয়ন-পর্বের সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতেও কমিশনারের ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন সোমনাথবাবু। একই সুরে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘এই কমিশনার ওই পদে থাকার নৈতিক অধিকার আগেই হারিয়েছেন। শাসক দল এবং রাজ্য সরকার তাঁকে হেনস্থা করছে। তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে আদালত। এর পরেও তিনি যদি দায়িত্ব না ছাড়েন, তা হলে প্রমাণ হবে তাঁর আত্মমর্যাদাবোধ একেবারেই নেই।’’
বারবার আদালতের তিরস্কারের মুখে পড়েও কমিশনার কী ভাবে পদে থাকছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব বলেন, ‘‘এই কমিশনারের উপরে নির্ভর করেই নির্বাচন প্রক্রিয়া চলবে!’’ সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘সংবিধান, আইন কোনও কিছু মেনেই কমিশন পদক্ষেপ করছে না। আদালতও কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করছে। কমিশন ভূমিকা পালন করছে না বলেই বিরোধীদের আদালতে যেতে হচ্ছে।’’
এই কমিশনারের নেতৃত্বে বিরোধীরা আর ভোট যে চায় না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। নিজেই আদালতে সওয়াল করছেন অধীর। অধীরের কথায়, ‘‘লাজ-লজ্জা এবং নখদন্তহীন একটা কমিশন। সকালে নির্বাচন কমিশনার যা বলেন, রাতে তার উল্টো বলেন। এখন উনি পদত্যাগ করবেন কি না, সেটা তাঁর ইজ্জত-বোধের উপরে নির্ভর করছে!’’
বিরোধীরা কমিশনারের ইস্তফা দাবি করলেও তৃণমূল নীরবই থেকেছে এ দিন। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেছেন, ‘‘পুরো বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এই নিয়ে কোনও রকম মন্তব্য করতে চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy