Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মনোনয়নে গা-জোয়ারি, দলের বিরুদ্ধে সরব সিদ্দিকুল্লা

শনিবার সিদ্দিকুল্লার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রামের আন্দোলনে জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ না থাকলে ইতিহাসের গতি যে অন্য রকম হতেই পারত, শাসক দলের নেতৃত্ব তা যেন মনে রাখেন!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

সঙ্ঘ-বিজেপির সঙ্গে সমান তালে তৃণমূলের রামনবমী পালন নিয়ে চাপা অসন্তোষ ছিলই। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নে নিজের দলের বিরুদ্ধেই গা-জোয়ারির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তার আগে চিঠি পাঠিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে। তারপরই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেন সিদ্দিকুল্লাকে। শনিবার সিদ্দিকুল্লার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রামের আন্দোলনে জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ না থাকলে ইতিহাসের গতি যে অন্য রকম হতেই পারত, শাসক দলের নেতৃত্ব তা যেন মনে রাখেন!

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তৃণমূল নেতৃত্ব এখন সিদ্দিকুল্লাকে ‘শান্ত’ করার চেষ্টা শুরু করেছেন। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে আগেও প্রার্থী নিয়ে কথা হয়েছে। দলনেত্রীর নির্দেশ মতো আবারও বলব। ওঁর সঙ্গে বিরোধ হতে যাবে কেন?’’

পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া এবং মঙ্গলকোটে তাঁর পছন্দের কোনও প্রার্থীকে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব মনোনয়ন দিতেই দেননি বলে স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লার অভিযোগ। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি তাঁর সঙ্গে কথা বললেও প্রার্থী নিয়ে বিরোধের কোনও মীমাংসা হয়নি।। প্রতিবাদে তিনি সরকারি গাড়ি এবং মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া তিন জন নিরাপত্তারক্ষী ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান।

বিতর্ক বাড়ছে দেখে সিদ্দিকুল্লাকে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলেন। কিন্তু জমিয়তের নেতা-কর্মীরা যে ভাবে ক্ষোভে ফুঁসছেন, তার প্রেক্ষিতে সিদ্দিকুল্লা এখনও আলোচনা করতে চেয়ে কোনও যোগাযোগ করেননি বলে তাঁর তরফে জানানো হয়েছে। জমিয়তের রাজ্য কমিটিতে আজ, রবিবার সবিস্তার আলোচনা সেরে তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন।

সিদ্দিকুল্লার সাফ কথা, ‘‘উন্নয়নের কাজ যা হয়েছে এবং বিরোধীদের যা হাল, তার সুবাদে তৃণমূল পঞ্চায়েতে এমনিতেই জিতত। মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে এই অশান্তির কী দরকার ছিল? ঘটনা যা ঘটছে, তাতে বাংলায় বিজেপির জমিই শক্তি হচ্ছে! সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময়ে এই পরিস্থিতি কখনওই কাম্য নয়।’’

গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষামন্ত্রীর অভিযোগ, মঙ্গলকোট অঞ্চলে তাঁর লোকজনের জন্য ৩৪টি আসনের দাবি ছিল। তাঁর হাতে প্রতীক বিলির ‘ফর্ম বি’-ও দিয়েছিলেন তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত নেতা অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু তার পরেও তাঁদের কাউকে মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি। সিদ্দিকুল্লার ক্ষোভ, ‘‘এর চেয়ে বলে দিতে পারত, আমাদের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE